করোনা সংকটে লকডাউন হয়ে থাকা দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে এ বছর বেশিরভাগ মানুষ অনলাইনেই রমজানের বাজার করছেন৷
বিজ্ঞাপন
ফলে অনলাইনগুলোর বিক্রি দ্বিগুণ/তিনগুণ বেড়ে গেছে৷ অন্যদিকে কর্মী ও পরিবহন সংকটে তাদের পণ্য ডেলিভারি দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে৷
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় শুধু রোজা উপলক্ষে অন্তত অর্ধশত নতুন ফেসবুক পেজ চালু হয়েছে, যারা হোম ডেলিভারি দিচ্ছে বলে জানান কয়েক বছর ধরে এ ব্যবসায় জড়িত প্রবীর কুমার সরকার৷
করোনা সংকট এবং রমজানে নিজের ফেসবুক পাতা ‘ভালো ফল’-এর অবস্থা নিয়ে টেলিফোনে ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলেন তিনি৷
বলেন, ‘‘দেশে করোনা প্রাদুর্ভাবের পর আমার বিক্রি দুই-তিন গুণ বেড়ে গেছে৷ এমনকি দেশের বাইরে থেকেও অনেকে পরিবারের জন্য খাদ্যপণ্য অর্ডার করছেন৷ এদিকে, কর্মী কমে যাওয়ায় এত চাপ সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে৷ গণপরিবহন না থাকায় বিশেষ ব্যবস্থায় পণ্য ডেলিভারি দিতে হচ্ছে৷ ফলে ডেলিভারি খরচ কিছুটা বেড়ে গেছে৷’’
নিত্যপণ্যের পাশাপাশি রোজার একমাস ইফতার সামগ্রী বিক্রি করছেন জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘‘এ বছর রাস্তায় ইফতার সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে না৷ তাই অনেকেই অনলাইনে এগুলো বিক্রি করছেন৷ আমরাও শুরু করেছি৷ একদিন আগে অর্ডার নিয়ে পরদিন পণ্য ডেলিভারি দিচ্ছি৷ এবার ইফতার সামগ্রীর চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে৷
‘‘উবারইট, ফুডপান্ডার মতো অ্যাপ ব্যবহার করেও অনেকে বড় বড় রেস্তোরাঁ থেকে ইফতার কিনছেন৷ ওইসব রেস্তোরাঁ বন্ধ আছে, কিন্তু হোম ডেলিভারির অর্ডার নিচ্ছে৷’’
মালয়েশিয়ার সিতি জাবেদাহ আব্দুল ওয়াবের পরিবার গত ১৫ বছর ধরে শুধু রোজার মাসে ঘরে তৈরি খাবার, বিশেষ করে ‘মুরতাবাক' (মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জনপ্রিয় একটি ডিশ) বিক্রি করেন৷
কিন্তু এ বছর করোনা ভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার রোধে মালয়েশিয়াসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো রমজান মাসেও লকডাউন হয়ে আছে৷ ফলে এবার ইফতার বাজার সম্পূর্ণ বন্ধ৷
তাই সিতি জাবেদাহদের পারিবারিক ব্যবসা ‘মুরতাবাক মামি অ্যান্ড মুরতাবাক সুলতান' থেকে এবার হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুকে অর্ডার নেওয়া হচ্ছে৷
করোনায় রোজা, করণীয় কী?
মুসলিমদের সবচেয়ে পবিত্র মাস রমজান এসেছে৷ কিন্তু করোনা মহামারি এবারের রমজানকে দিয়েছে অন্য এক রূপ৷ নিজে ও প্রিয়জনকে নিরাপদে রেখে কিভাবে পালন করা যাবে এ মাস?
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
করোনাকালে রমজান, কিছু পরামর্শ
রমজান মাসকে বিশ্বজুড়ে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা দেখে থাকেন দানশীলতা, সংযম, আত্মশুদ্ধি ও প্রার্থনার মাস হিসেবে৷ একসঙ্গে নামাজ পড়া ও সারাদিনের রোজা শেষে ইফতার ভাগাভাগি করে নেয়াকেও দেয়া হয় গুরুত্ব৷ কিন্তু চলমান করোনা মহামারি এবারের রমজানকে সবার সামনে হাজির করেছে একটু অন্যভাবে৷ সব দেশের জন্যই এ বিষয়ে কিছু সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
রোজা রাখতে ঝুঁকি নেই
রোজা রাখলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে, এমন কোনো তথ্য এখনও কোনো গবেষণায় পাওয়া যায়নি৷ ফলে স্বাভাবিক সময়ের মতোই রোজা রাখতে সুস্থ মানুষের কোনো বাধা নেই৷ কিন্তু ধর্মীয় বিধি অনুযায়ীও নানা রোগের ক্ষেত্রে রোজা রাখায় ছাড় দেয়ার কথা বলা হয়েছে৷ কেউ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলে এ বিষয়টি বিবেচনায় রাখার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ সেক্ষেত্রে চিকিৎসক ও ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
পুষ্টিকর খাবার, পর্যাপ্ত পানি
কোভিড-১৯ এর কোনো ওষুধ বা প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কার হয়নি৷ ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপরই এখন পর্যন্ত ভরসা৷ তাই সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতার ও সেহরিতে নানা ধরনের সুষম খাবারের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে৷ এছাড়া গরমের ফলে পানিশূন্যতা দূর করতে ইফতার ও সেহরির মধ্যে পর্যাপ্ত পানিও পান করা খুব জরুরি৷
ছবি: Colourbox/Haivoronska_Y
শারীরিক কার্যক্রমে জোর
অন্যসময় রোজা রেখেও কাজকর্ম করার ফলে শরীরে রক্ত চলাচল ও অন্যান্য কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকতো৷ কিন্তু করোনার কারণে মানুষের চলাচল সীমিত হওয়ায় কমেছে শারীরিক কার্যক্রমও৷ এজন্য বিজ্ঞানীরা জোর দিচ্ছেন বাসার মধ্য়েই নিয়মিত হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাচলা করার জন্য৷ তা না হলে রোজায় শরীরে পড়তে পারে বিরূপ প্রভাব৷
ছবি: Colourbox
শুভেচ্ছা ও সম্ভাষণ
কারো সঙ্গে দেখা হলে হাত মেলানোর রীতি থাকলেও, এবার শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সম্ভাষণ জানানোর ওপর জোর দেয়া হচ্ছে৷ অনেক দেশে ধর্মীয় আচার ও সংস্কৃতি অনুযায়ী সালাম দেয়া, মাথা নাড়া বা বুকে হাত দিয়ে সম্ভাষণ জানানো হয়৷ এ বছর করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে এমন সম্ভাষণকেই স্বাগত জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরাও৷
ছবি: DW/A. Ansari
ঝুঁকিতে থাকাদের বিশেষ ব্যবস্থা
নভেল করোনা ভাইরাস সব বয়সের মানুষকে আক্রান্ত করলেও সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিরা৷ এছাড়া যারা ডায়বেটিস, রক্তচাপ, হৃদযন্ত্রের রোগ, শ্বাসকষ্ট ও ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্য রোগে ভুগছেন, তারাও রয়েছেন কোভিড-১৯ এ সবচেয়ে ঝুঁকিতে৷ ফলে রমজানের সময়টাতে এই ব্যক্তিদের সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
সামাজিক দূরত্ব
বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও তারাবিসহ অন্যান্য নামাজ মসজিদের বদলে বাসায় পড়ার আহ্বান জানানো হয়েছে৷ কিন্তু তারপরও ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিনসহ যাদের মসজিদে যেতেই হবে, তাদেরও নিজেদের মধ্যে অন্তত এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে৷ এছাড়া ইফতার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনাকাটার জন্য যারা দোকানে বা বাজারে যাবেন, তাদেরও ভিড় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
প্রতিবার নামাজের আগে ওজুর ফলে এমনিতেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত হয়৷ কিন্তু এবার একটু বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের কথা বলছেন চিকিৎসকেরা৷ শুধু পানির বদলে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে সাবান ব্যবহারের৷ মসজিদেও পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতা সরঞ্জাম, টিস্যু, ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিন রাখার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে৷ পাশাপাশি প্রতিবার নামাজের আগে-পরে কার্পেটসহ মসজিদ ভবনের অন্যান্য ব্যবহার্য বস্তু পরিষ্কার করারও আহ্বান জানানো হচ্ছে৷
ছবি: Imago Images/allover-mev
যাকাত ও সদকা
রমজান মাসে মুসলিমদের দানশীলতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়৷ তবে যাকাত বা সদকা দেয়ার সময়ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে৷ যাতে একসঙ্গে বেশি মানুষ জড়ো না হন, সেজন্য এলাকার সবাই মিলে বা কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শৃঙ্খলাবদ্ধ উপায়ে পরামর্শ দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷
ছবি: DW/H.U.R. Swapan
মানসিক স্বাস্থ্য
লকডাউন, সামাজিক দূরত্ব ইত্যাদি মানতে গিয়ে মানসিক স্বাস্থ্য পড়ছে হুমকির মুখে৷ রমজানে ধর্মপ্রাণ মানুষ মসজিদে যেতে ও সামাজিক যোগাযোগ বেশি পছন্দ করেন৷ কিন্তু এ বছর তাদেরকে থাকতে হচ্ছে কড়া বিধিনিষেধের মধ্যে৷ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও যে আত্মশুদ্ধি, প্রার্থনা, দান, সেবা, সবই করা সম্ভব তা প্রচার করার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকারে পাশাপাশি ধর্মীয় নেতাদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷
ছবি: picture alliance/empics/D. Lipinski
10 ছবি1 | 10
সিতি জাবেদাহ বলেন, ‘‘এই প্রথম আমরা অনলাইনে খাবার বিক্রি করছি৷ রমজান মাস শুরু কয়েকদিন আগে থেকেই আমরা অনলাইনে পাতা খুলে ফেলি, যেন ক্রেতারা আমাদের খুঁজে পান৷’’
মালয়েশিয়া সরকার মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত আংশিক লকডাউন জারি করে দেশজুড়ে ইফতার বাজার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে৷
ফলে রাস্তায় খাবার বিক্রি করতেন এমন অনেক হকার এখন অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসা করছেন৷ প্রতিবেশী ইন্দোনেশিয়ায়ও হকাররা রোজায় অনলাইনে ইফতার ও সেহরির সামগ্রী বিক্রি করছেন৷
সেখানে মালয়েশিয়ান মালয় হকার্স অ্যান্ড স্মল ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রুসলি সুলাইমান বলেন, ‘‘ইন্দোনেশিয়ায় আপনি অ্যাপ থেকে যেকোনো খাবার অর্ডার করতে পারবেন৷ তবে এজন্য হকারদের কিছু প্রশিক্ষণ দিতে হচ্ছে৷ তারা এতদিন রাস্তায় খাবার বিক্রি করতো৷ ফলে প্রযুক্তির ব্যবহার করে অর্ডার ও কার্ডের মাধ্যমে বিল নেওয়া তাদের শেখাতে হচ্ছে৷’’
মালয়েশিয়ায় ফেসবুকে রমজান বাজার নামে অনেক পাতা খোলা হয়েছে৷ যেগুলোর প্রায় অধিকাংশই ক্রেতাকে পণ্য হাতে পাওয়ার পর দাম পরিশোধের সুযোগ দিচ্ছে৷ পাশের দেশ সিঙ্গাপুরেও একই ভাবে রমজানের বাজার চলছে৷
এসএনএল/ এসিবি (রয়টার্স)
রোজা বা সংযমের মাসে সুস্থ থাকার নানা কারণ
রোজা রাখা বা উপোস করা শুধু ধর্মীয় অনুভূতির জন্য নয়, স্বাস্থ্য রক্ষাতেও কার্যকরী৷ উচ্চ রক্তচাপ কমাতে, শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করতে ভূমিকা রাখে উপোস৷ শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে সংযমের ভূমিকার কথা জার্মান চিকিৎসকরাও বলেন৷
ছবি: Fotolia/Eagle
জার্মানদের রোজা রাখা বা উপোস করা
জার্মানরাও উপোস করেন তবে তা ধর্মীয় অনুভূতি থেকে নয়, তাঁরা করেন সুস্থ থাকতে, স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য৷ ত্যাগের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ কমানোসহ নানা শারিরিক সমস্যার ঝুঁকি কমানো সম্ভব৷এর উপকারিতা সম্পর্কে সমীক্ষার ফলাফলে জানা গেছে, শতকরা ৫৫ জন জার্মান একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত না খাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন৷ একটি অ্যামেরিকান গবেষণা থেকে জানা যায় যে, রোজা রাখলে তা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Berg
পরামর্শ
বলা বাহুল্য, জার্মানরা উপোস করেন একটু অন্যভাবে বা অন্য নিয়মে৷ এ বিষয়ে রক্তচাপ বিশেষজ্ঞ ডা. হাউসব্যার্গ-এর পরামর্শ, ‘‘উপোস শুরু করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন৷ বিশেষ করে তাঁরা, যাঁদের ডায়বেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে৷’’ এছাড়াও উপোস বা না খাওয়ার পুরো সময়টা যেন এক নাগারে তিন সপ্তাহের বেশি যেন না হয়, জানান ডা. হাউসব্যার্গ৷
ছবি: Alexander Raths/Fotolia.com
দূষিত পদার্থ বের করে দেয়
ফাস্টফুড, সাদা রুটি, পিৎসা জাতীয় তৈরি খাবার শরীরের ভেতরে ঢুকে ‘টক্সিন’ বা দূষিত পদার্থে রূপান্তরিত হয়৷ এগুলি শরীর থেকে বের হওয়া জরুরি৷ আর সে ক্ষেত্রেই কাজে আসে উপোস করা৷ সারাদিন না খেয়ে থাকার ফলে শরীরে জমে থাকা ফ্যাট এবং দূষিত ও ক্ষতিকারক পদার্থগুলো বিভিন্ন অঙ্গের মাধ্যমে বের হয়ে যায়৷ তাছাড়া রোজা রাখলে অনেকটা সময় না খাওয়ার ফলে পাকস্থলীর অ্যাসিড নিঃসরণও কিছুটা কমে, ফলে গ্যাসট্রিকের ব্যাথাও কম হয়৷
ছবি: Fotolia/ag visuell
ডায়বেটিস প্রতিরোধে সহায়ক
সারাদিন না খেয়ে থাকার কারণে শরীরের ‘গ্লুকোজ’ বা শর্করা জাতীয় খাবারের দ্রুত ক্ষয় হয় এবং তা দেহের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি যোগায়৷ এর ফলেই ‘ইনসুলিন’-এর উৎপাদন কমে যায় এবং তা, প্যানক্রিয়াসকে খানিকটা বিশ্রাম দেয়৷ গ্লুকোজ ক্ষয়ের ফলে শরীরে ‘গ্লাইক্লোজেন’ তৈরি হয় এবং ‘ব্লাডসুগার’ কমে ডায়বেটিস প্রতিরোধে সহায়ক হয়৷
ছবি: Colourbox/E. Wodicka
রক্তচাপ হ্রাস করে
না খেয়ে থাকা অবস্থায় শরীরে গ্লুকোজ ও চর্বিকণাগুলোর ক্ষয় হয়ে শক্তি উৎপাদন হয় এবং ‘মেটাবলিক রেট’ কমে৷ তাছাড়া অন্যান্য হরমোনের মতো ‘স্ট্রেস হরমোন’-ও কমে, ফলে রক্তচাপও কমতে পারে৷ এছাড়াও রোজার মাসে ধূমপান কম করা হয়৷ তাই এটা ধূমপান একেবারের মতো ছেড়ে দেবারও একটা পরীক্ষা হতে পারে বলে মনে করেন অনেকে৷ সারাদিন রোজা রাখলে শরীরে ‘কোলেস্টোরল’-এর পরিমাণও কিছুটা কমে, ফলে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমে৷
ছবি: Colourbox
ওজন কমে
রোজা বা সংযমের মাসে সারাদিন না খাওয়াতে পাকস্থলী কিছুটা ছোট হয় তাই ওজন কমানো হয় সহজ৷ এই অভ্যাস রোজার পরে অব্যাহত রাখলে ওজন নিয়ে আর কোনো চিন্তাই থাকে না৷ অনেক জার্মান কোনো উৎসব বা উপলক্ষ্যে বেশি খাওয়া-দাওয়ার পর অথবা বছরে এক বা দু’বার নিয়ম করে কয়েকদিন উপোস করেন৷এই উপোসের সময় খাবারের তালিকায় থাকে সেদ্ধ শাক-সবজি, সবজির স্যুপ, গ্রিন টি, অর্থাৎ প্রচুর পানি জাতীয় খাবার৷ যা শরীরকে হালকা ও পরিষ্কার করে৷
ছবি: Fotolia/gaai
রোজার পরেও সুন্দর ও ফিট থাকুন
রোজা যেহেতু এখন গরমের সময় হচ্ছে, তাই বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে শরীরে পানিশূন্যতা না হয়৷ তাই ইফতারের সময় ভাজা, পোড়া কম খেয়ে বিভিন্ন মৌসুমি ফল, ডাবের পানি ও তরমুজ খাওয়া স্রেয়৷ তরমুজ হার্ট, ধমনী, কিডনির জন্য খুব উপকারী৷ তাছাড়া আম, কাঁঠাল, আনারস, বাঙ্গি থাকতে পারে ইফতারের টেবিলে৷ এগুলোতে রয়েছে ভিটামিন এ আর সি, যা ‘অ্যান্টি অক্সিডেন্ট’ হিসেবে কাজ করে এবং রোজার পরেও ত্বক সুন্দর ও আকর্ষণীয় রাখে৷