চীনের সবচেয়ে জনবহুল শহর সাংহাই৷ জনসংখ্যা প্রায় দুই কোটি ৬০ লাখ৷ তাদের সবার করোনা টেস্ট করাতে সামরিক বাহিনীর চিকিৎসক দলের সদস্য ও অন্যান্য শহর থেকে সেখানে স্বাস্থ্যকর্মী পাঠানো হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
সোমবার ভোর হওয়ার আগে সাংহাইয়ের অনেক বাসিন্দাকে করোনা টেস্টের জন্যলাইনে দাঁড়াতে দেখা গেছে৷ অনেকে ঘুমের পোশাকেও হাজির হয়েছিলেন৷
সামরিক বাহিনীর একটি পত্রিকা জানিয়েছে, পিপলস লিবারেশন আর্মি পিএলএ রোববার চিকিৎসক দলের দুই হাজারের বেশি সদস্যকে সাংহাই পাঠিয়েছে৷ এছাড়া জিয়াংশু, ঝেজিয়াং ও বেইজিং থেকে প্রায় ১০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে সাংহাই পাঠানো হয়েছে বলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে জানানো হয়েছে৷
উহানে করোনার প্রকোপ শুরুর পর সেখানকার রাজধানী হুবেইতে সামরিক বাহিনীর চিকিৎসক দলের প্রায় চার হাজার সদস্য পাঠিয়েছিল পিএলএ৷
বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির তুলনার সাংহাইতে করোনার সংক্রমণ অনেক কম হলে কর্তৃপক্ষ করোনা নির্মূলে এমন কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে৷
করোনা টেস্ট ছাড়াও কয়েকটি হাসপাতাব, জিমনেসিয়াম, অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক ও অন্যান্য ভেন্যুকে কোয়ারান্টিনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে৷
করোনা সংক্রমিত শিশুদের তাদের মা-বাবার কাছ থেকে পৃথক রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে৷ এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে ৩০টির বেশি দেশের কূটনীতিকরা চীনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন৷
এছাড়া উপসর্গ নেই কিংবা অল্প আছে এমন ব্যক্তিদের বাসায় আইসোলেশনে থাকতে না দিয়ে কেন্দ্রীয় আইসোলেশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷
জেডএইচ/কেএম (রয়টার্স)
দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় করোনা মহামারিতে চীন
চীনের কয়েকটি শহরে করোনা সংক্রমণ বাড়ায় লকডাউন দেয়া হয়েছে৷ গত দুই বছরের মধ্যে দেশটি সবচেয়ে বড় করোনা মহামারি দেখা দিয়েছে৷
ছবি: picture alliance/AP
ওমিক্রনের প্রভাব
বিশ্বে চীনে প্রথম করোনার প্রকোপ শুরু হলেও লকডাউন, গণহারে করোনা পরীক্ষা, কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি ব্যবস্থা নেয়ার মাধ্যমে করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছিল৷ কিন্তু সম্প্রতি দেশটিতে করোনার ওমিক্রন সংস্করণের প্রভাব দেখা যাচ্ছে৷ ফলে গত দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় করোনা মহামারিতে পড়েছে চীন৷
ছবি: Liau Chung-ren/ZUMA Wire/imago images
প্রথম মৃত্যু
এক বছরেরও বেশি সময় পর গত শনিবার চীনে করোনায় দুজনের মৃত্যু হয় বলে জানানো হয়েছে৷ ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি থেকে এ বছরের ১৮ মার্চ পর্যন্ত আট লাখ ১৮ হাজার ৬১২ জন করোনায় আক্রান্ত হন বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে জানিয়েছে চীন৷ এই সময়ে ১০ হাজার ৬২৫ জন মারা যান৷
ছবি: Tyrone Siu/REUTERS
সংক্রমণ কম হলেও কঠোর সিদ্ধান্ত
রোববার চীনে চার হাজারের বেশি মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হন৷ বৈশ্বিক বিবেচনা ও চীনের ১৪০ কোটির বেশি জনসংখ্যা বিচার করলে এই সংখ্যাটি খুবই কম৷ তারপরও করোনার প্রসার ঠেকাতে কঠোর সব সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন৷ ফলে বিভিন্ন শহরের লাখো মানুষ এখন লকডাউনের মধ্যে আছেন৷
ছবি: Shao Rui/Xinhua/AP/dpa/picture alliance
লকডাউনে জিলিন
রোববার চীনের নতুন সংক্রমিতের দুই-তৃতীয়াংশের বাস জিলিন রাজ্যে৷ এই রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর জিলিনের প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ সোমবার রাত থেকে তিনদিনের জন্য লকডাউনে থাকবেন৷ জিলিন রাজ্যটি রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার কাছে অবস্থিত৷ উপরের ছবিটি প্রতীকী৷
ছবি: Tao Ming/Xinhua/AP/picture alliance
দুইদিনে একবার বের হওয়ার অনুমতি
জিলিন রাজ্যের রাজধানী চ্যাংচুনে ৯০ লাখ মানুষের বাস৷ ১১ মার্চ থেকে সেই শহরের বাসিন্দারা খাবার কিনতে প্রতি দুই দিনে একবার ঘরের বাইরে বের হতে পারছেন৷ এই নিষেধাজ্ঞা তিন দিনের জন্য আরও কঠোর করা হবে বলে শনিবার শহর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে৷ ১৫ মার্চের ছবিতে চ্যাংচুনের বাসিন্দাদের করোনী পরীক্ষার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Zhao Dandan/IMAGO
শেনজেনে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে
চীনের কয়েকটি বড় প্রযুক্তি কোম্পানি শেনজেনে অবস্থিত৷ সেখানে প্রায় পৌনে দুই কোটি মানুষ বাস করেন৷ সপ্তাহখানেক আগে সেখানে লকডাউন (ছবি) দেয়া হয়েছিল৷ সোমবার থেকে বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল হয়েছে৷ গণপরিবহন চলতে দেয়া হচ্ছে৷ কিছু প্রশাসনিক ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু হয়েছে৷
ছবি: picture alliance/AP
সাংহাইয়ে কঠোর ব্যবস্থা
চীনের বাণিজ্যিক কেন্দ্র সাংহাইতে টানা চতুর্থ দিনের মতো উপসর্গহীন করোনার সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে৷ রোববার সেখানে ২৪ জনের মধ্যে করোনার উপসর্গ দেখা গেছে৷ আর উপসর্গ নেই এমন সংক্রমণ দেখা গেছে ৭৩৪ জনের মধ্যে৷ এই অবস্খায় সেখানে স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ আবাসিক এলাকায় করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে৷
ছবি: Xinhua/Li Ziheng/picture alliance
সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহের লকডাউন
সাংহাইয়ের বিভিন্ন আবাসিক এলাকাগুলো করোনার প্রসার রুখতে নিজেরা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে৷ কিছু এলাকায় মানুষজনকে দুই সপ্তাহ লকডাউনে থাকতে বলা হয়েছে৷ আর কিছু এলাকার মানুষ বলছে, কতদিন তাদের ঘরে থাকতে হবে সেটা জানানো হয়নি৷ ছবিটি প্রতীকী৷