লিখলাম ‘Virus’, বাংলায় এল ‘দুষ্ট’! বলছিলাম ‘গুগল’ অনুবাদকের কথা৷ এমনিতেই কচ্ছপের কামড় দিয়ে বসে আছে নতুন করোনা দুষ্টুটা! তার ওপর এমন দুষ্টামি! ঘটিরামটাকে খুঁজে পেলে দু'ঘা দিয়ে খুব বলে দিতাম, মশকরার আর জায়গা পান না মশাই!
বিজ্ঞাপন
যাই হোক, গৌরচন্দ্রিকা রেখে আসল কথা পাড়ছি৷ করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বে ছড়িয়েছে৷ মানুষ আতঙ্কিত! সেদিন বাড়িতে ফোন করলাম৷ ধরে ধরে তিন প্রজন্মের সবার সঙ্গে কথা বললাম৷ সবাই কিছুটা ভীত৷ তা ভয় পাবার যথেষ্ট কারণ আছে বটে৷ কিন্তু ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাাপে যেভাবে আতঙ্ক বিনিময় করা হচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে বিপদ যেন সিনবাদের ভূত হয়ে চেপেছে ঘাড়ে৷ আর নামবে না৷
বাড়ির লোকেরা রেগে টং হয়ে গেলেন যখন জানতে পারলেন এই ‘দুঃসময়ে’ আমি পূর্ব ইউরোপে হাওয়া খেতে গিয়েছিলাম৷ তো তাদের এই বুঝিয়ে শান্ত করলাম, যে সেখানকার পরিস্থিতি জার্মানির চেয়ে অন্তত ভালো৷ আসলে আমার এক বন্ধু এসেছিলেন কাজে, হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে৷ কাজ দফারফা করে ফের বললেন, বন্ধু এবার চল কলা বেঁচবো৷ আমিও লুঙ্গি মেরে টান দিলাম দৌঁড়৷ তো আমরা বুদাপেস্ট, ব্রাতিস্লাভা, ভিয়েনা, প্রাগ, বার্লিন ঘুরে বেড়ালাম৷ একটি বিশেষ কাজে আমাকে ফিরে আসতে হল বন৷ আর বন্ধুটি ঘুরে বেড়ালেন ওয়ারশ, অসলো, কোপেনহেগেন, ব্রাসেলস৷ এরপর কোলন ও বন ঘুরে ফিরে গেলেন ঢাকা৷
আমি আপাতত ইউরোপেই গাঁট বেধেছি৷ তাই আমার প্রসঙ্গ থাক৷ বন্ধুটির অভিজ্ঞতার কথা বলি৷ সেটি একেক শহরে একেকরকম৷ তিনি ওয়ারশতে দেখলেন, এই অসময়েও লোকেরা রাস্তায় গানবাদ্য করছে, অস্থির হলেন প্রাগের লোকারণ্য চার্লস ব্রিজে পা ফেলার জায়গা না পেয়ে আর মুগ্ধ হলেন শ্লোভাকদের আতিথেয়তায়৷ তবে হতবাক হলেন বার্লিনের পথে নেমে৷ শনিবার রাতে রাস্তায় লোক নেই৷ রোববার সকাল এমনিতেই একটু নিষ্প্রাণ থাকে৷ কিন্তু এদিন একটু বেশিই ছিল কি না কে জানে!
করোনায় বাংলাদেশের উদ্যোগ
করোনা ভাইরাসকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মহামারি হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ গত ৮ মার্চ বাংলাদেশেও প্রথম এই ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে৷ করোনা ভাইরাসের প্রভাব এবং পদক্ষেপগুলো দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/ZUMAPRESS/A. I. Damanik
উহান ফেরত
করোনা ভাইরাসের সূত্রপাত হয় চীনের উহান নগরীতে৷ একটা পর্যায়ে শহরটিকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে ফেলে দেশটির সরকার৷ সেখানে আটকা পড়ে কয়েকশো বাংলাদেশি৷ তার মধ্যে পয়লা ফেব্রুয়ারি বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে ৩১২ জনকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনে সরকার৷
ছবি: A. Goni
কোয়ারেন্টাইনে ১৪ দিন
উহান ফেরতদের বিমানবন্দর থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরা আশকোনা হজ ক্যাম্পে৷ সেখানে তারা কোয়ারেন্টাইনে থাকেন৷ ১৪ দিন পর সবাই সুস্থ অবস্থায়ই বাড়ি ফিরে যান৷ তাদেরকে আরো দশদিন নজরদারিতে রাখে সরকার৷
ছবি: Privat
প্রথম করোনা শনাক্ত
চীনের উহান থেকে বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার পর থেকে নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিং করতে থাকে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-আইইডিসিআর৷ এর মধ্যেই আট মার্চ বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো তিনজনকে কোভিড ১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করার ঘোষণা দেন পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা৷
ছবি: Privat
ইটালি থেকে বাংলাদেশে
চীনের বাইরে কোরোনার প্রাদুর্ভাবে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে ইটালি৷ বাংলাদেশে আক্রান্ত তিনজনের দুজনই এসেছেন এই দেশটি থেকে৷ তাদের একজনের সংস্পর্শে এসে পরিবারের আরেক নারী সদস্য আক্রান্ত হন৷ তবে তাদের একজন এরইমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন৷ আরেকজনও করোনামুক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আইইডিসিআর৷
ছবি: picture-alliance/S. Gombert
মুজিববর্ষের আয়োজনে কাটছাঁট
করোনা আক্রান্ত তিনজনকে যেদিন শনাক্ত করা হল সেদিনই প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন৷ রাতে আসে মুজিববর্ষের ১৭ মার্চের উদ্বোধনী আয়োজন সীমিত আকারে করার ঘোষণা৷ আসছেন না ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীসহ বিদেশি অতিথিরাও, জানান মুজিববর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী৷
ছবি: bdnews24.com/PID
বাজারে প্রভাব
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস শণাক্তের পর বাজারে রাতারাতি তার প্রভাব পড়ে৷ মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের অভাব দেখা দেয়৷ বেড়ে যায় দাম৷ পরবর্তীতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাজারে অভিযান শুরু করে৷ সরকার থেকে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের দাম বেঁধে দেয়া হয়৷
ছবি: DW/S. Hossain
ক্রিকেটে প্রভাব
বাংলাদেশে করোনা শনাক্তের একদিন পরই ছিল জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে টি টোয়েন্টি ক্রিকেট ম্যাচ৷ এই ম্যাচে একজন দর্শকের জন্য শুধু একটি টিকেট কেনার সুযোগ দেয় বিসিবি৷ মাঠে দর্শকের উপস্থিতিও ছিল কম৷ পরে বিসিবি মুবিজববর্ষ উপলক্ষে বিশ্ব একাদশ বনাম এশিয়া একাদশের মধ্যে দুইটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ও কনসার্টের আয়োজনও স্থগিত করে৷
ছবি: DW/S. Hossain
প্রবাসীদের পরিস্থিতি
সিঙ্গাপুর, আরব আমিরাত, ইটালি ছাড়া অন্য কোন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশিরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হননি৷ দিল্লিতে উহান থেকে আগত ২৩ জন বাংলাদেশি দিল্লি শহর থেকে ৪০ মাইল দূরে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন৷ তাদের বিষয়ে যোগাযোগ রাখছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷
ছবি: A. Goni
যাত্রীদের পরীক্ষা
দেশির তিনটি বিমান বন্দর, দুটি সমুদ্র বন্দর, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ও বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন দিয়ে আগত যাত্রীদের স্ক্রিনিং বা শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সরকার৷ কোভিড ১৯ আক্রান্ত সন্দেহে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে ভাইরোলজি ল্যাবরেটরিতে৷
ছবি: picture-alliance/ZUMAPRESS/A. I. Damanik
কী করবেন
যেসব দেশে করোনা সংক্রমণ ঘটেছে সেখান থেকে বাংলাদেশে ফেরত আসা যাত্রীদের স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দিয়েছে আইইডিসিআর৷ কারো করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা দিলে প্রতিষ্ঠানের হটলাইনে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/Belga Mag
হটলাইন নাম্বার
মোট ১৩ টি হটলাইন চালু করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর৷ নাম্বার: ০১৪০১১৮৪৫৫১, ০১৪০১১৮৪৫৫৪, ০১৪০১১৮৪৫৫৫, ০১৪০১১৮৪৫৫৬, ০১৪০১১৮৪৫৫৯, ০১৪০১১৮৪৫৬০, ০১৪০১১৮৪৫৬৩, ০১৪০১১৮৪৫৬৮, ০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯৩৭১১০০১১৷
ছবি: Fotolia/NinaMalyna
11 ছবি1 | 11
এমন নয় যে, ভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টিকে হেলাফেলা করে এড়িয়ে গেছি আমরা৷ যতটা সম্ভব সতর্কই ছিলাম৷ বারবার হাত ধুয়েছি৷ মুখে হাত দিইনি৷ টিস্যু কাগজ ব্যবহার করেছি হাঁচি কাঁশি এলে৷ ব্যবহারের পর তা যথাস্থানে ফেলে দিয়েছি৷ কিন্তু আতঙ্কিত হইনি, কিংবা আমাদের মত আতঙ্কিত নন, কিন্তু সতর্ক এমন লোকও দেখেছি ঢের৷
তো ভ্রমণের সময়টা জুড়ে আমাদের আলাপচারিতায় বারবারই এসেছে এই করোনা ভাইরাস প্রসঙ্গ৷ এমনকি দিনভরই টুইটার, ফেসবুকের ফিডে আসা খবরগুলো ঘেটেঘুটে দেখছিলাম৷ তো প্রথম থেকেই আমরা ব্যাপক বিরক্ত একটি বিষয়ে৷ তা হল, যেভাবে সবাই পোঁ ধরে সব কিনে নিয়ে যাচ্ছে দোকানগুলো থেকে, তাতে গুগল অনুবাদকে ‘স্যানিটাইজার' অর্থ ডুমুরের ফুল লিখে দিলে ঘটিরামটাকে ক্ষমা করে দিতাম৷
তো এখন একই কায়দা শুরু হয়েছে বাংলাদেশেও৷ মাস্ক, স্যানিটাইজার এসব নাকি শেষ হয়ে যাচ্ছে৷ গুজবও ছড়াচ্ছে অনেক৷ সেদিন এক বন্ধু দেখালেন একটি আন্তর্জাতিক টিভি চ্যানেলের খবরের একটি স্ক্রিনশট৷ ব্রেকিং নিউজে বলা হচ্ছে, প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়েছে৷ আবার আরেকটিতে দেখলাম, কোকেন খেলে নাকি করোনা ভাইরাস মরে যায়৷ অথচ কোকেন বাবাজি নিজেরই শ্বাসকষ্ট আছে৷ আর গুজবেরও শেষ নেই৷ কোথায় না জানিয়ে লাশের পর লাশ পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে, কোথায় পুঁতে ফেলা হচ্ছে, এসব খবরে আতঙ্কিত সবাই৷ সব মিলিয়ে একেবারে জগাখিচুড়ি৷
যে কোনো সংকটকালে গুজব ছড়াবেই৷ তাই সেখানে গণমাধ্যমের ভুমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ তো সেখানেও ব্যত্যয় দেখা গেছে৷ যেমন, বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়নি৷ কিন্তু তার আগেই কেউ ঘোষণা দিয়ে দিলেন আগামী মাস থেকে সব বন্ধ৷ এ ধরনের ঘোষণা মানুষের মাঝে আতঙ্ক তৈরি করে৷ সেক্ষেত্রে একেবারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আবার আগ পর্যন্ত এমন খবর প্রচার করাই উচিত নয়৷ সব খবর ব্রেকিং নিউজ নয়৷
গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম নেটওয়ার্ক এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷ সেখানে কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতার অধ্যাপক কারিন ভাল-ইয়োর্গেনসেনের একটি গবেষণাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, প্রায় একমাস ধরে খবর বিশ্লেষণ করে তিনি প্রায় ১১শ’টি খবরে ‘ভয়’ অথবা ‘ভীত’ শব্দটি পেয়েছেন৷ অন্তত ৫০টি রিপোর্টে রোগের পরিচয় দিতে গিয়ে ‘কিলার ভাইরাস’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে৷
ভয় সংক্রামক৷ একটি ভয়ের খবর প্রকাশিত হলে তা ছড়িয়ে যায় যে কোনো ভাইরাসের চেয়ে দ্রুত গতিতে, বিশেষ করে এই সামাজিক মাধ্যমের যুগে৷ তা ক্ষতি করে মানসিক স্বাস্থ্যের৷ অথচ প্রয়োজন উলটোটার৷ কভিড-১৯ এর মত ভাইরাস ঠেকাতে প্রতিষেধক লাগে না৷ শুধু শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা দিয়েই একে ঠেকিয়ে দেয়া যায়৷ কিন্তু তার জন্য মানসিক স্বাস্থ্যও সবল থাকতে হবে৷ তা না হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকবে না৷ চীনে সবাই মিলে ঠেকিয়ে দিয়েছে নতুন এই ভাইরাসটিকে৷ আমাদেরও ঠেকাতে হবে৷ এটি একদিনেই চলে যাবে না৷ ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো থেকে যাবে৷ তাই আমরা যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা নিয়ে আতঙ্কিত নই, তেমনি আসুন এটি নিয়েও আতঙ্কিত না হই৷ শুধু একটু বাড়তি সতর্ক হই৷ জীবনাভ্যাস পরিবর্তন করি৷ তবেই হবে জয়, আবারো!
করোনায় করণীয়
করোনা প্রতিরোধে কী করতে হবে তা নিয়ে একটি নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-আইইডিসিআর৷ ছবিঘরে দেখুন বিস্তারিত৷
ছবি: picture-alliance/dpa/ZUMA Wire/Cdc
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস
আট মার্চ বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো করোনা ভাইরাস আক্রান্ত তিন রোগী শনাক্তের ঘোষণা দিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর৷ ইনস্টিটিউটের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানিয়েছেন, আক্রান্তদের মধ্যে দুজন সম্প্রতি ইটালি থেকে ফিরেছেন৷ পরবর্তীতে তাদের একজনের সংস্পর্শে পরিবারের আরেক সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন৷ তাদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে৷
ছবি: Privat
করোনা যেভাবে ছড়ায়
মোট সাতটি প্রজাতির করোনা ভাইরাস মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে৷ তার একটি ২০১৯ এন করোনা ভাইরাস৷ এই ভাইরাসটি প্রথমে প্রাণী থেকে মানুষে এবং এখন তা মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হচ্ছে৷ এটি ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়৷ হাঁচি, কাশি, কফ, থুথু বা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শেও এই রোগ ছড়ায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/ZUMA Wire/Cdc
যেসব লক্ষণ দেখা যায়
শরীরে নভেল করোনা ভাইরাস প্রবেশের পর দুই থেকে ১৪ দিনের মধ্যে লক্ষণ দেখা দেয়৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রথমে জ্বর হয়৷ এছাড়াও শুকনো কাশি, গলা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া হতে পারে৷ কারো ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, কিডনি সমস্যা, ক্যান্সার থাকলে দেহের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিকল হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/XinHua/Xiong Qi
কী করবেন?
প্রতিরোধে ব্যক্তিগত সচেতনতাই একমাত্র উপায়৷ ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড সময় ধরে হাত ধুতে হবে৷ অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক, মুখ স্পর্শ করা যাবে না৷ আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে৷ হাঁচি, কাশি দেয়ার সময় বাহু, টিস্যু বা কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখতে হবে৷ অসুস্থ পশু-পাখির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন৷ মাছ-মাংস ভালোভাবে রান্না করে খান৷
ছবি: Reuters/R. Patrasso
চিকিৎসা কী?
এন করোনা ভাইরাস নতুন হওয়ায় এর কোন টিকা বা ভ্যাকসিন এখনও আবিষ্কার হয়নি৷ চিকিৎসা লক্ষণভিত্তিক৷
ছবি: picture-alliance/dpa/XinHua/C. Min
অসুস্থ হলে করণীয়
অসুস্থ হলে ঘরে থাকতে পরামর্শ দিয়েছে আইইডিসিআর৷ তবে মারাত্মক অসুস্থ হলে নিকটস্থ সদর হাসপাতালে যেতে হবে৷ রোগীকে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে৷
ছবি: Reuters/W. Rattay
সরকারের নির্দেশনা
কেউ যদি চীন, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিন কোরিয়া, ইতালি, ইরান এসব দেশে ভ্রমণ করে থাকেন এবং ফিরে আসার ১৪ দিনের মধ্যে যদি জ্বর-কাশি-গলা-ব্যথা-শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়, তাহলে অতি দ্রুত আইইডিসিআর-এর হটলাইন নাম্বারে যোগাযোগ করুন এবং কুয়েত-মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারের পরামর্শ নিন৷