ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত এক লাখ ৯৪ হাজার। দিল্লিতে বন্ধ বেসরকারি অফিস।
বিজ্ঞাপন
ভারতে যতজনের করোনা পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে ১১ দশমিক পাঁচজনের রিপোর্ট পজিটিভ আসছে। মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ শতাংশেরও বেশি। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব সবকটি রাজ্যকে লিখেছেন, তাদের কাছে যেন যথেষ্ট পরিমাণে অক্সিজেন থাকে।
যদিও ভারতে তৃতীয় ঢেউতে যে করোনা হচ্ছে, তা দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো মারাত্মক নয়, কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কোনো ঝুঁকি নিতে চাইছে না। তারা সব ধরনের অবস্থার জন্য প্রস্তুত থাকতে চাইছে।
দিল্লিতে বন্ধ বেসরকারি অফিস, রেস্তোরাঁ
সব চেয়ে বেশি সংক্রমণ হচ্ছে মহারাষ্ট্রে, দুই নম্বরে দিল্লি এবং তিন নম্বরে পশ্চিমবঙ্গ। দিল্লিতে সপ্তাহান্তে পুরো কার্ফিউ করে রাখা হয়েছিল। তারপরেও করোনা বাড়তে থাকায় এখন বেসরকারি অফিস বন্ধ করে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বেসরকারি অফিসের কর্মীরা বাড়ি থেকে কাজ করবেন। রেস্তোরাঁ ও পাবও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে রেস্তোরাঁ থেকে হোম ডেলিভারি চালু থাকবে। জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত বেসরকারি সংস্থা খোলা থাকবে। আগেই জিম, স্পা, সুইমিং পুল, স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
করোনার মধ্যেই চলছে গঙ্গাসাগরের প্রস্তুতি
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে করোনার বিপুল সংক্রমণের মধ্যেও গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন হচ্ছে। কলকাতায় ভিড় জমিয়েছেন সাধু এবং তীর্থযাত্রীরা।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বাবুঘাটের অবস্থা
গোটা দেশ থেকে সাধু এবং তীর্থযাত্রীরা গঙ্গাসগারে যাওয়ার জন্য প্রথমে কলকাতায় এসে হাজির হন। গঙ্গার ধারে বাবুঘাটে তৈরি হয় ট্রানসিট ক্যাম্প। এবারেও তৈরি হয়েছে তেমন ক্যাম্প।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
ছিলিমে টান
কলকাতায় করোনা বাড়ছে লাফিয়ে। তাতে কী? মাস্ক থুতনিতে লাগিয়ে ছিলিমে টান মারছেন সাধুরা। করোনাকে তারা পাত্তাও দেন না।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
ময়দানের ভিড়
ময়দানে এভাবেই তৈরি হয়েছে ট্রানসিট ক্যাম্প। সামাজিক দূরত্ববিধি প্রায় কেউই মানছেন না। সকলের মুখে মাস্কও নেই।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কোভিড ক্যাম্প
প্রশাসন অবশ্য অস্থায়ী কোভিড শিবির তৈরি করেছে। সেখানে নিয়মিত তীর্থযাত্রীদের করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
পরিচ্ছন্নতায় গুরুত্ব
কলকাতা পুরসভা বহু কর্মী নিয়োগ করেছে বাবুঘাট অঞ্চলে। গোটা এলাকায় এভাবেই পরিচ্ছন্নতার অভিযান চলছে। সময় সময় বদলানো হচ্ছে ওয়েস্ট বিন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
পুলিশের তৎপরতা
এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে প্রচুর পুলিশ। মাস্ক ছাড়া ঘুরলেই পুলিশ ধরছে। মাস্ক পরতে বাধ্য করা হচ্ছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কেন মেলা
হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও প্রশ্ন উঠছে, কেন কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে মেলার অনুমতি দেওয়া হলো। এর ফলে কোভিড সংক্রমণ আরো বাড়বে বলেই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
7 ছবি1 | 7
মুম্বইতে করোনা কমছে বলে সরকারের দাবি। আগে যাদের করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছিল, তাদের একশজনের মধ্যে ২৮ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসছিল। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক সাত জনে। মুম্বইতে পরপর চারদিন করোনার হার কমলো।
শীর্ষেন্দু, গড়করির করোনা
করোনায় আক্রান্ত প্রবীণ সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। তিনি বাড়িতে নিভৃতবাসে আছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়করির করোনা হয়েছে। এই নিয়ে তার দ্বিতীয়বার করোনা হলো। দিল্লিতে বিজেপির সদরদফতরের ৪২ জন কর্মীর করোনা হয়েছে।
কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকর মঙ্গলবারই করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তবে তার অবস্থা স্থিতিশীল।
করোনা: কলকাতায় আবার শুরু কড়াকড়ি
নববর্ষের জন্য ছাড় ছিল। সোমবার থেকে কড়াকড়ি চালু পশ্চিমবঙ্গে। কলকাতা ঘুরে সেই ছবি তুলে আনলো ডিডাব্লিউ।
ছবি: Subrata Goswami/DW
কড়াকড়ি শুরু
বড়দিন ও নতুন বছরের উৎসবের জন্য পশ্চিমবঙ্গে কোনো কড়াকড়ি ছিল না। কড়াকড়ি শুরু হলো সোমবার থেকে। স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পুরো বন্ধ। এমনই একটি বন্ধ স্কুলের ছবি।
ছবি: Subrata Goswami/DW
লোকাল ট্রেন সাতটা পর্যন্ত
লোকাল ট্রেন চলবে। তবে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে। যত বসার জায়গা আছে, তার অর্ধেক যাত্রী একটি কামরায় উঠতে পারবেন। কিন্তু সন্ধ্যা সাতটার পর আর ট্রেন চলবে না।
ছবি: Subrata Goswami/DW
কে নজরদারি করবে?
ট্রেনের কামরায় ৫০ শতাংশ যাত্রী আছেন না বেশি আছেন, তা কে দেখবে? সোমবার সকালেও স্টেশনে প্রচুর মানুষের ভিড় ছিল। গন্তব্যে পৌঁছনোর তাড়াও ছিল। এর আগেও দেখা গেছে, ট্রেনে ৫০ শতাংশ যাত্রীর বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়নি।
ছবি: Subrata Goswami/DW
বাসেও পঞ্চাশ শতাংশ যাত্রী
বাসও ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়েই চলতে পারবে। সোমবার সকালে দেখা গেছে, বাসের সব সিট ভর্তি।
ছবি: Subrata Goswami/DW
চলবে অটো
কলকাতায় অটোরিক্স চলবে। সোমবার সকালের ছবি। প্রচুর অটো রাস্তায়। তবে সকালের দিকে যাত্রী কিছুটা কম।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সরকারি, বেসরকারি অফিসে অর্ধেক কর্মী
সরকারি ও বেসরকারি অফিসে অর্ধেক কর্মী যাবেন, বাকি অর্ধেক বাড়ি থেকে কাজ করবেন। তা সত্ত্বেও অবশ্য অফিস টাইমে ভিড় কম ছিল না। দুয়ারে সরকারের মতো সরকারি অনেক প্রকল্পই আপাতত বন্ধ থাকবে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
দোকান-বাজার খোলা
দোকান, বাজার, শপিং মল, মার্কেট কমপ্লেক্স সবই খোলা। কিন্তু মলের দোকানগুলিতে যত মানুষ যেতে পারেন, এখন তার অর্ধেক যেতে পারবেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
মাছর বাজারের ছবি
মানিকতলার মাছের বাজার। এমনি সময়ে ভয়ংকর ভিড় থাকে। সোমবার সকালে ভিড় নেই।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সবজির বাজারে ভিড়
সোমবার সকালের ছবি। শাক-সবজির বাজারে যথেষ্ট ভিড়। করোনার দূরত্ব বিধি মানা হচ্ছে না।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সিনেমা হলে ৫০ শতাংশ
সিনেমা হল খোলা। তবে মোট আসনের ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি করা যাবে।
সব রেস্তোরাঁ, পানশালা রাত দশটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে যত বসার জায়গা আছে, তার অর্ধেক মানুষ সেখানে যেতে পারবেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
শ্মশানে, কবরস্থানে
শ্মশানঘাটে, কবরস্থানে, শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানে কুড়িজনের বেশি মানুষ থাকতে পারবেন না।
ছবি: Subrata Goswami/DW
নিমতলার ছবি
নিমতলা শ্মশানঘাটের ছবি। প্রচুর মানুষ সোমবার সেখানে ছিলেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
রাত দশটা থেকে
রাত দশটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত চলবে কার্ফিউ। জরুরি পরিষেবা ছাড়া কোনো ব্যক্তিগত গাড়ি চলবে না। জমায়েত হতে দেয়া হবে না।
ছবি: Subrata Goswami/DW
করোনার বাড়বাড়ন্ত
কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গে করোনা দ্রুত ছড়াচ্ছে। রোববার পশ্চিমবঙ্গে করোনায় আক্রান্ত ছয় হাজারের বেশি মানুষ। তিন হাজারের বেশি আক্রান্ত শুধু কলবকাতায়। কলকাতা পুলিশের দুই আইপিএস অফিসার সহ ৫০ জন কর্মী করোনায় আক্রান্ত। বাংলা ক্রিকেট টিমের সাতজন আক্রান্ত। তাও হুঁশ নেই মানুষের। রোববারও পথে নেমেছিল মানুষের ঢল। মেলা ভিড়ে ভিড়াক্কার।
ছবি: Subrata Goswami/DW
16 ছবি1 | 16
কবে কমবে?
ফুসফুস বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পার্থপ্রতিম বোস ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ''প্রতিটি ভাইরাসের রেখচিত্র দেখলেই বোঝা যাবে, তা একবার শীর্ষে পৌঁছায়, তারপর নামতে শুরু করে। দিল্লির ক্ষেত্রে তা অদূর ভবিষ্যতেই শীর্ষে পৌঁছে যাবে।'' পার্থপ্রতিমের মতে, ''ফেব্রুয়ারির মধ্যে, খুব দেরি হলে মার্চে পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হওয়ার কথা।''
তবে তিনি বলেছেন, ''এবার তৃতীয় ঢেউতে করোনা ভাইরাস মারাত্মক হয়ে ওঠেনি। কিন্তু তাই বলে এই করোনাকে অবহেলা করা যাবে না। কারণ, বাড়িতে বয়স্ক মানুষরা থাকেন, তাদের অন্য রোগ থাকতে পারে। তাদের করোনা হলে তা মারাত্মক হতেই পারে। তাই অবশ্যই করোনাবিধি মানা উচিত।''