করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিভিন্ন দেশের সরকার অভূতপূর্ব চাপের মুখে রয়েছে৷ গণতান্ত্রিক সরকারগুলো জনমতকে অনেকটা গুরুত্ব দিলেও আইনের শাসনের নামে কঠোর হচ্ছে স্বৈরতন্ত্র৷
বিজ্ঞাপন
চীন সরকার গত ২৩ জানুয়ারি যখন উহান শহরকে লকডাউন করে, এশিয়ার বাইরের দেশগুলো তখন সেদিকে বিস্ময় নিয়ে তাকিয়েছে৷ করোনাভাইরাস যে ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার শিল্পোন্নত দেশগুলোতেও আঘাত হানতে পারে তা বোঝা যায়নি তখন৷
ধীরে ধীরে নিউইয়র্ক, বার্লিন, মাদ্রিদের মতো ইউরোপীয় শহরগুলোতেও কোভিড-১৯ ভাইরাস থেকে বাঁচতে জনগণের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করার মতো সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে৷ ঘরের বাইরে যাওয়ায় এসেছে নিষেধাজ্ঞা, জানানো হয়েছে জীবন যাপনে পরিবর্তন আনার আহ্বান৷ সংসদ অধিবেশন বসছে সীমিত পরিসরে৷ কোনো কোনো দেশের সরকারপ্রধানও হয়েছেন করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত৷
ওদিকে চীনের মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেছে৷ তাদের দেখে অনেক দেশের মানুষের এখন হয়ত হিংসে হচ্ছে৷
করোনার উপস্থিতি জানা যায় যেভাবে
করোনা ভাইরাস শরীরে আছে কি না, তা কীভাবে জানতে পারেন ডাক্তাররা, জানুন ছবিঘরে...
ছবি: Reuters/D. Ruvic
কাকে পরীক্ষা করা হয়?
সংক্রমণপ্রবণ জায়গায় থাকলেই কোনো ব্যক্তিত্বকে করোনা ভাইরাসের জন্য পরীক্ষা করার দরকার নেই৷ সর্দিকাশি থাকলেও যে এই পরীক্ষা করতেই হবে, এমনটা নয়৷ কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্ট থাকার কোনো নির্দিষ্ট কারণ না পাওয়া গেলে তখনই করোনা ভাইরাসের বিশেষ পরীক্ষা করা হবে বলে জানাচ্ছে জার্মানির রবার্ট কখ ইন্সটিটিউট৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Matthews
কেমন এই পরীক্ষা?
গলা বা গলা ও নাকের অংশ থেকে তরল নমুনা নেওয়া হয়৷ তারপর সেই নমুনা বিশেষ অণুবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে পরীক্ষা করলেই ধরা পড়বে যে সেখানে করোনা ভাইরাস আছে কি না৷ এই পরীক্ষা করতে প্রায় ৫ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে৷ জার্মানিতে এই পরীক্ষা করাতে কোনো খরচ লাগেনা, কারণ তা রোগীর নিজস্ব স্বাস্থ্যবিমার আওতায় থাকে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/F. Coffrini
আক্রান্তদের পরীক্ষার ফলাফল জানানো
নমুনা সংগ্রহ করা থেকে পরীক্ষাগারে সব রকমের যাচাই-বাছাই হওয়া থেকে সবশেষে সেই পরীক্ষার ফলাফল ডাক্তারের কাছে পৌঁছানো- এই পুরো প্রক্রিয়ায় লেগে যেতে পারে এক থেকে দুই দিন৷ এরপর সেই খবর রোগীকে জানানো ডাক্তারের দায়িত্ব৷ আলাদা ঘরে অন্যান্যদের থেকে দূরে বিশেষ সুরক্ষাবিধি মেনেই করোনা-আক্রান্তের সাথে দেখা করবেন ডাক্তার৷ বিশেষ পরিস্থিতিতে রোগীর বাসায় গিয়েও তা জানানো যেতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Hoppe
কতটা নির্ভুল এই পরীক্ষা?
প্রথম চেষ্টায় করোনা ভাইরাস ধরা না পড়া মানেই যে শরীরে এই সংক্রমণ নেই, তা নয়৷ যদি নমুনা সংগ্রহে কোনো ফাঁক থেকে যায়, তাহলেও সংক্রমণ ধরা পড়বে না৷ সে কারণেই সংক্রমণ থাকতে পারে এমন ব্যক্তিদের একাধিকবার এই পরীক্ষা করাতে হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/
অন্য কোনো পদ্ধতি আছে কি?
এই পরীক্ষা সঠিকভাবে করতে উন্নতমানের পরীক্ষাগার ও দক্ষ বিশেষজ্ঞ দরকার, যা অনেক জায়গায় নেই৷ চীনের মতো প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে উন্নত দেশেও নেই এই প্রযুক্তি৷ ইউরোপ ও অ্যামেরিকাতেও পরীক্ষার নমুনা সমন্বয়ে রয়েছে গাফিলতি৷ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা থেকে নতুন প্রযুক্তি উঠে আসলেও তা এখনও ব্যবহারিক পর্যায়ে পৌঁছয়নি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/H. Punz
5 ছবি1 | 5
এমন পরিস্থিতিতে স্বৈরতন্ত্র কি গণতন্ত্রের চেয়ে বেশি কার্যকর? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে শুরু করেছেন অস্ট্রেলিয়ার গবেষক তামারা এহস৷ করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে চীনের সাফল্য প্রশংসনীয় হলেও স্বচ্ছতা জলাঞ্জলি দেয়ার বিষয়টিকে অবশ্য তিনি সমালোচনার চোখেই দেখছেন৷
দেশে দেশে মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ
সান্ধ্য আইন, বড় জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ- এসব এখন আর স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার অংশ নেই৷ এই সত্য স্বীকার করে ইইউ কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ভেরা জুরোভা বলেছেন, ইউরোপের দেশগুলো এখন এক ধরনের 'জরুরি আইন' কার্যকর করেছে৷
অস্ট্রেলিয়ার গবেষক তামারা এহস অবশ্য এই পদক্ষেপগুলোকেও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপযোগী মানতে রাজি, যদি সেগুলো যৌক্তিকভবে নেয়া হয় এবং সব পদক্ষেপ করোনাভাইরাস রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে৷
সংসদীয় নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব
তামারা এহস মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতেও সংসদ কার্যকর থাকা উচিত, কারণ, "সংসদ এমন জায়গা যেখানে সব কন্ঠ শোনা যায়, যেখান থেকে বিরোধী মত বেরিয়ে আসে৷" কিন্তু হাঙ্গেরিতে সংসদ অধিবেশন চলতে দেয়া হয়নি৷ অথচ প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশেষ ক্ষমতা পেয়ে গেছেন৷
সুশীল সমাজের গুরুত্ব
তামারা এহস মনে করেন, চলতি সময়েও সরকারের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে সুশীল সমাজ৷ তার মতে, গণতান্ত্রিক সরকার গুলো খুব দ্রুত স্বৈরতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাবে এমন আশঙ্কা নেই৷ তবে কোথাও কোথাও জনমনে ভয় জাগতে পারে বলে তিনি মনে করেন৷
হোম কোয়ারান্টিনের খুঁটিনাটি
সব দেশেই হাসপাতালে কোয়ারান্টিনের পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে নিজের বাসায়ও কোয়ারান্টিনে থাকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে৷ কিভাবে থাকতে হয় হোম কোয়ারান্টিনে? চলুন জেনে নেই এর খুঁটিনাটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Hoppe
কোয়ারান্টিন কী?
১৪শ শতকে ইউরোপে মহামারি আকার নিয়েছিল প্লেগ, যা ইতিহাসে ‘ব্ল্যাক ডেথ’ নামে পরিচিত৷ প্রায় ২০ কোটি মানুষ মারা গিয়েছিল মহামারিতে৷ ভেনিস কর্তৃপক্ষ নিয়ম জারি করে, বন্দরে কোনো জাহাজ ভিড়লে যাত্রীদের নামানোর আগে সমুদ্রে ৪০ দিন নোঙর করে রাখতে হবে। ৪০ সংখ্যাকে ইটালিয়ান ভাষায় বলা হয় কোয়ারানতা, আর অপেক্ষার সময়টিকে কোয়ারানতিনো৷ তখন থেকে সংক্রামক রোগের আশঙ্কায় কাউকে আলাদা করে রাখাকে কোয়ারান্টিন বলা হয়৷
ছবি: London Museum of Archeology
আইসোলেশন কী?
কোয়ারান্টিন আর আইসোলেশনের তফাত কী? কোয়ারান্টিন সাধারণত হাসপাতালের বাইরে নির্দিষ্ট স্থানে অথবা নিজ বাসাতেও হতে পারে৷ তবে আইসোলেশন সাধারণত সরাসরি চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালেই করা হয়, যাদের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তাদের রাখা হয় কোয়ারান্টিনে, উপসর্গ৷ তেমন প্রকট না হলে তাকেও কোয়ারান্টিনে রাখা হয়৷ কিন্তু কারো মধ্যে সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করলে, তখন তাকে রাখা হয় আইসোলেশনে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Photoshot
হোম কোয়ারান্টিন কেন?
সংক্রামক ভাইরাসে আক্রান্ত বা শরীরে ভাইরাস থাকতে পারে এমন সন্দেহ হওয়া ব্যক্তিদের সুস্থ মানুষের কাছ থেকে সরিয়ে রাখা প্রয়োজন৷ যাদের মধ্যে অস্বাভাবিক জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট বা অন্য লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, তাদের হাসপাতালে বিশেষ কোয়ারান্টিন বা আইসোলেশনে রাখা হচ্ছে৷ সংক্রামক ভাইরাসে আক্রান্ত এত বেশি মানুষকে একসঙ্গে হাসপাতালে রাখা সম্ভব নয়৷ এ কারণে অনেককে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে হোম কোয়ারান্টিনে থাকার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Hoppe
হোম কোয়ারান্টিন কী?
‘হোম’ মানে বাসা, কোয়ারান্টিন মানে পৃথক করা৷ সংক্রামক ব্যাধির চিকিৎসায় রোগীকে সবার আগে আলাদা করে ফেলা হয়, যাতে রোগ অন্যদের শরীরে না ছড়ায়৷ রোগীকে যেখানে রাখা হয়, সেখানে নেয়া হয় বিশেষ ব্য়বস্থা৷ এই ব্যবস্থাকেই বলে কোয়ারান্টিন৷ করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক মাত্রায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিজের বাসায় নিজের তত্ত্বাবধানেই কোয়ারান্টিনে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা৷ এটিকেই বলা হচ্ছে হোম কোয়ারান্টিন৷
ছবি: Getty Images/D. Ramos
কী করতে হবে?
হোম কোয়ারেন্টাইনে আপনাকে পরিবারের অন্য সদস্যদের চেয়ে আলাদা থাকতে হবে৷ সবচেয়ে ভালো হয় আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা ঘরে রাখতে পারলে৷ সে ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস আসা-যাওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে৷ আলাদা ঘর সম্ভব না হলে রাখতে হবে আলাদা শোয়ার ব্যবস্থা৷ আক্রান্ত ব্যক্তির অন্তত এক মিটারের মধ্যে অন্য কারো শোয়ার ব্যবস্থা রাখা যাবে না৷ রোগীকে নিয়মিত মেডিক্যাল মাস্ক পরতে হবে এবং সে মাস্ক নিয়মিত পালটাতে হবে৷
ছবি: picture-alliance/ZUMAPRESS/R. Fouladi
যা যা করবেন না
কোয়ারেন্টাইনে থাকা মানে সব কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা৷ আক্রান্ত ব্যক্তি বাসার বাইরে যেতে পারবেন না, কারো সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না৷ নিজের ব্যবহার্য দ্রব্য ছাড়া অন্য জিনিসপত্র ব্যবহার না করাই ভালো৷ নিজের জন্য নির্ধারিত স্থান ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যদের ব্যবহার করা স্থান, যেমন রান্নাঘর এমনকি বৈঠকখানাতেও যাওয়া উচিত হবে না৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Duff
যা যা আলাদা করবেন
রোগীর ঘর বা বিছানা তো আলাদা থাকবেই, পাশাপাশি রোগীর ব্যবহার করা টুথব্রাশ, থালা-বাসন, তোয়ালে, গামছা, কাপড়চোপড়, বিছানার চাদর, বালিশ, সবই রাখতে হবে অন্যদের থেকে দূরে৷ বাড়িতে কোনো পোষা প্রাণী থাকলে তাকেও আক্রান্তের সঙ্গে মিশতে দেয়া যাবে না৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Baba Ahmed
নবজাতকের মা কী করবেন?
মা আক্রান্ত হলে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে কোনো বাধা নেই৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, বুকের দুধ থেকে শিশু আক্রান্ত হওয়ার কোনো প্রমাণ তারা এখনও পাননি৷ তবে শিশুকে স্পর্শ করার আগে মাকে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে৷ মুখে মেডিক্যাল মাস্ক পরে নিতে হবে৷ অন্য সময় শিশু থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকতে হবে৷
ছবি: Getty Images/AFP/L. Ramirez
বাড়ির অন্য সদস্যরা?
সেবার জন্য নির্দিষ্ট একজন ব্যক্তি থাকলে ভালো হয়৷ একেক দিন একেক জন রোগীর সেবা করলে বাড়ির সবাই আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে৷ বাড়ির বয়স্ক সদস্যদের আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে যত দূরে রাখা সম্ভব ভালো৷ সেবাদানকারী সেবা দেয়ার সময় মেডিক্যাল মাস্ক ভালো করে পরে নেবেন৷ ব্যবহার করার সময় মাস্কে আর হাত দেয়া যাবে না৷ রোগীর ঘর থেকে বের হয়েই সে মাস্ক ঢাকনা দেয়া ডাস্টবিনে ফেলে দিতে হবে, হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে৷
ছবি: picture-alliance/Xinhua/G. Markowicz
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
ঘর নিয়মিত ব্লিচিং সলিউশন দিয়ে মুছতে হবে৷ তার ব্যবহার করা চেয়ার টেবিল বা অন্য যেকোনো কিছু নিয়মিত জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে৷ রোগী যে টয়লেট ব্যবহার করবেন, সেটি যদি অন্য কেউ ব্যবহার করেন তাহলে সাবধানে থাকতে হবে৷ রোগী টয়লেট ব্যবহার করার পর প্রতিবার ভালো করে জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে৷ রোগীর কাপড় ৬০ থেকে ৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার পানিতে ডিটারজেন্ট দিয়ে নিয়মিত ধুয়ে দিতে হবে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/C. Ena
দর্শণার্থীর সঙ্গে সাক্ষাৎ
কেউ অসুস্থ হলে তার খোঁজ নিতে বা সুস্বাস্থ্য কামনা করতে ফলমূল-উপহার নিয়ে আমরা হাজির হই রোগীর বাড়িতে৷ কিন্তু করোনা ভাইরাসের মতো মারাত্মক সংক্রমণে কারো সঙ্গে দেখা করতে না যাওয়াই ভালো৷ এতে করে কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তির কাছ থেকে ভাইরাস নিয়ে আপনি নিজেই তা ছড়িয়ে দিতে পারেন আপনার অন্য প্রিয়জনের শরীরে৷ বরং আক্রান্তের সঙ্গে দেখা না করলেই তাকে সবচেয়ে নিরাপদে রাখতে পারেন আপনি৷
ছবি: Reuters/J. Redmond
ডাক্তারের কাছে যাবেন না
অনেকেই আতঙ্কে বা না জেনে নিজেই চলে যাচ্ছেন চিকিৎসকের কাছে৷ কিন্তু এর ফলে আপনার শরীর থেকে যেমন ভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি থাকে, আপনি সুস্থ থাকলে অন্যের শরীর থেকে আপনার শরীরেও ভাইরাস চলে আসার ঝুঁকি থাকে৷ আগে স্থানীয় চিকিৎসক বা চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রে ফোনে যোগাযোগ করুন৷ কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় জ্বর, কাশি, সর্দি, শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ বেশি মাত্রায় অনুভব করলে রোগতত্ত্ব ইনস্টিটিউটের হটলাইনে যোগাযোগ করুন৷
ছবি: Imago Images/A. Hettrich
কতদিন কোয়ারান্টিন?
সাধারণত চিকিৎসকেরা ১৪ দিন পর্যন্ত বাসায় কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলবেন৷ এর মধ্যে নানা পরীক্ষার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণে রাখবেন তারা৷ তবে ব্যক্তিবিশেষে এই কোয়ারেন্টাইন কম-বেশিও হতে পারে৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে করোনা ভাইরাস কেমন প্রভাব ফেলবে তা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর নির্ভর করবে৷ ফলে কেউ ৩-৪ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠলেও ভয় পাওয়ার কিছু নেই, আবার কারো ১৪ দিনের বেশি সময় লাগলেও শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/I. Wagner
করোনায় করণীয়
আমরা সবাই সচেতন থাকলে, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিলেই ঠেকানো যাবে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব৷ তাই গুজবে বিশ্বাস না করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করুন৷ ভাইরাসের লক্ষণ শরীরে দেখা দিয়েছে মনে করলে আগেই সরাসরি ডাক্তারের কাছে না গিয়ে হটলাইনে কল করুন৷ রোগতত্ত্ব ইনস্টিটিউটের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করুন৷