1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
স্বাস্থ্য

‘করোনা ভাইরাস ছড়ানোর চেইন ভাঙতে হবে’

সমীর কুমার দে ঢাকা
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

প্রতিবেশী দেশগুলোতে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লেও বাংলাদেশে এখনও আক্রান্ত কাউকে শনাক্ত করা হয়নি। তবে বাংলাদেশেও ভাইরাসটি ছড়ানোর ঝুঁকি আছে বলে মনে করেন আইইডিসিআর এর ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা৷

ছবি: picture alliance/Xinhua/X. Yijiu

চীনের সঙ্গে যোগাযোগের কারণে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা৷ তার মতে, ‘‘ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হলে মানুষের থেকেই (ভাইরাস) বেশি ছড়ায়। এই কারণে যেন ছড়াতে না পারে সেটা ব্লক করতে হবে। ছড়ানোর চেইনটাকে আগে ভাঙতে হবে।'' এজন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি এবং করণীয় নিয়ে ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।

ডয়চে ভেলে : করোনা ভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশ কতটা ঝুঁকির মধ্যে আছে?

ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা: যেহেতু আমাদের সঙ্গে চীনের যোগাযোগ খুবই ঘনিষ্ট, দ্বিপাক্ষিক অনেক ইস্যু আছে, প্রচুর শিক্ষার্থী সেখানে পড়াশোনা করে, ব্যবসায়িক যোগাযোগ রয়েছে, সেখান থেকে প্রচুর ফ্লাইট আসা-যাওয়া করে, সেই কারণে অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেরও ঝুঁকি রয়েছে। আক্রান্ত কেউ বিমানযাত্রী হলে তার মাধ্যমে ভাইরাসটা আমাদের দেশে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। 

‘‘ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হলে মানুষের থেকেই (ভাইরাস) বেশি ছড়ায়’’

This browser does not support the audio element.

ঘনবসতিপূর্ণ এই দেশে সংক্রামক রোগ মোকাবিলার উপায় কী?

রোগ মোকাবেলার ক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ হল প্রিভেনশন (প্রতিরোধ)। আমি যদি করোনা দিয়ে উদাহরণ দেই তাহলে, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হলে মানুষের থেকেই বেশি ছড়ায়। এই কারণে যেন ছড়াতে না পারে সেটা ব্লক করতে হবে। ছড়ানোর চেইনটাকে আগে ভাঙতে হবে। তবে এটা নির্ভর করে কোন ধরনের ইনফেকশন তার উপরে। করোনা যেহেতু শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে ছড়ায় তাই মানুষের হাঁচি-কাশি, সর্দি এগুলোর মাধ্যমে ছড়াতে পারে। হাঁচি-কাশির মাধ্যমে যেন না ছড়ায় সেকারণে দু'টো ব্যবস্থা নিতে হবে। একটি হল কাশি শিষ্টাচার ও আরেকটা হল পারসোনাল হাইজিন। আক্রান্ত ব্যক্তি যদি হাঁচি-কাশি দেয় তার জীবাণুটা এক মিটার পর্যন্ত যেতে পারে। কাশি শিষ্টাচার হল- আপনাকে কাশি দিতে হলে একটি টিস্যু বা রুমাল মুখে ব্যবহার করতে হবে। টিস্যু হলে তো আপনি ফেলে দিতে পারেন। আর রুমাল ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। আর পারসোনাল হাইজিনটা হল- করোনা আক্রান্তদের সংস্পর্শে আপনি যাবেন না। তারপরও যদি করোনা আক্রান্ত কারো সঙ্গে হাত মেলান, তাহলে হাত ভালো করে সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেললে সেই জীবাণু চলে যাবে। নোংরা হাত নাকে-মুখে দেওয়া যাবে না।

সংক্রামক রোগের চিকিৎসায় হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো কি আছে? পৃথক বেড আছে কি-না? থাকলে সেটার সংখ্যা কত?

আমাদের সংক্রামক রোগের জন্য কয়েকটি সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল রয়েছে। কিন্তু এই ধরনের ভাইরাসজনিত রোগ হলে সেটার জন্য পৃথক ব্যবস্থা নিতে হয়। যেমন করোনার জন্য আমরা সব হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিট (রোগীদের আলাদা রাখা ব্যবস্থা) খুলেছি, পাঁচ বেডের করে এই মুহূর্তে। খুব নির্দিষ্ট চিকিৎসা যেহেতু এখানে নেই। যা আছে সাপোর্টিভ ট্রিটমেন্ট (সহায়ক চিকিৎসা)। এ কারণে জেলা সদর হাসপাতাল পর্যন্ত সব সরকারি হাসপাতালে আলাদা ইউনিট খুলেছি। এর মধ্যে যেখানে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) আছে সেখানে একটি বেড রাখতে বলা হয়েছে। ডাক্তার-নার্সদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। পৃথক একটি চিকিৎসা গাইডলাইন তৈরী করেছি। 

মাঝেমধ্যেই তো এই ধরনের সংক্রামক রোগ দেখা দিচ্ছে, বর্তমান জনবল দিয়ে কি এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা সম্ভব?

এটা আসলে কেস টু কেস ভেরি (পরিস্থিতি অনুযায়ী ভিন্নতা) করে। ডেঙ্গুর সময় আপনারা দেখেছেন, আমাদের চিকিৎসকরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে এটা ম্যানেজ করেছেন। করোনার ক্ষেত্রেও আমাদের চিকিৎসকরা সেভাবে প্রস্তুত আছেন। এই মুহূর্তে আমাদের যে প্রস্তুতি আছে তাতে আমরা মনে করি এটা সম্ভব।

সংক্রামক রোগ পরীক্ষার কিটগুলোর ট্যারিফ শূন্য করে দেয়া যায় কিনা? আপনারা সরকারের কাছে কোনো প্রস্তাব দিয়েছেন?

আমরা এই ধরনের কোন প্রস্তাব দেইনি। কারণ আমরা সরকারি প্রতিষ্ঠান, আমাদের এই ধরনের কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে বিভিন্ন ডেভেলপমেন্ট পার্টনার (উন্নয়ন অংশীদার) সহযোগিতা করে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যখন আমাদের সহযোগিতা করে তখন কিন্তু এগুলো ট্যাক্স ফ্রি হিসেবেই আসে। তবে কিটগুলোর ট্যাক্স যদি কমানো যায় তাহলে মূল্যও কমে যাবে। মানুষের কাছে সহজলভ্য হবে। সুনির্দিষ্ট করে যদি আমি বলি, করোনার ক্ষেত্রে এখনই এই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে

যাদের চীন থেকে আনা হলো তাদের কোয়ারেন্টাইনের যে ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেটা কি ঠিক আছে?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ি আমরা এই ব্যবস্থা করেছি। তাদের বেসিক যে নিডগুলো (মৌলিক চাহিদা) আছে সেগুলো আমরা পূরণ করছি। একটা প্রশ্ন উঠছে যে, একরুমে এত মানুষ রাখা ঠিক হচ্ছে কিনা? এরা যেহেতু রোগী না, তাই জীবাণু আছেই সেটাও বলা যাচ্ছে না। আমরা সেফটির (নিরাপত্তার) জন্য ওখানে রেখেছি। যাতে তাদের মাধ্যমে অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে না পড়ে। ওখানে যারা আছেন, তারা সবসময় মাস্ক ব্যবহার করেন। ফলে কারো মধ্যে সংক্রমণ থাকলেও আর ছড়িয়ে পড়তে পারবে না। আর একসঙ্গে এতগুলো মানুষ রাখার জন্য খুব বেশি জায়গাও নেই। আমরা চেষ্টা করছি, তাদের সুস্থ রেখে কোয়ারেন্টাইন সময়টা শেষ করতে।

সংক্রামক রোগের বিষয়ে কিভাবে আরো সচেতনতা বাড়ানো যায়?

এটা তো সবসময়ই মানুষকে যত বেশি জানাব তারা তত বেশি সচেতন হবে। এখানে গণমাধ্যমের একটা বিরাট ভূমিকা রয়েছে। গণমাধ্যম সব সময় আমাদের সহযোগিতা করে এসেছে। এর বাইরে আমরা সমাজ সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম হাতে নেই। তার মাধ্যমেই আমরা মানুষকে সচেতন করি।

প্রিয় পাঠক, আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ