করোনা মোকাবিলায় জার্মানির সাফল্য ম্লান হতে পারে
২৮ এপ্রিল ২০২০জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বার বার সতর্ক করে দেওয়া সত্ত্বেও অনেকেই তাতে কান দিচ্ছিলেন না৷ এবার রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট বা আরকেআই-এর প্রধান জার্মানির মানুষকে আবার সাবধান করে দিলেন৷ মঙ্গলবার লোটার ভিলার বার্লিনে বলেন, সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জার্মানিতে প্রতিদিন নতুন করে অনেক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন৷ অর্থাৎ দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোটেই কমছে না৷ তাঁর মতে, নতুন সংক্রমণের হার আবার বেড়ে যাক, এমনটা কাম্য হতে পারে না৷ এতকাল করোনা সংক্রমণ ও মৃতের হার অপেক্ষাকৃত কম রেখে জার্মানি গোটা বিশ্বে প্রশংসা কুড়িয়ে এসেছে৷ ভিলার বলেন, ‘‘আমরা সেই সাফল্য ধরে রাখতে চাই৷’’ আরকেআই-এর সূত্র অনুযায়ী জার্মানিতে মৃত্যুর হার বেড়ে ৩ দশমিক আট শতাংশ ছুঁয়েছে৷ অর্থাৎ মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৫৬,৩৩৭ এবং মৃতের সংখ্যা ৫,৯১৩৷
রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের প্রধান জার্মানির মানুষের উদ্দেশ্যে সামাজিক ব্যবধানের নিয়ম পালন করে যাবার পরামর্শ দিয়েছেন৷ অর্থাৎ প্রকাশ্যে মানুষের মধ্যে কমপক্ষে দেড় মিটার দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে৷ যেখানে সেটা সম্ভব নয়, সেখানে মাস্ক পরে থাকতে হবে৷ উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহ থেকে জার্মানির সবকটি রাজ্যেই দোকানবাজার ও গণপরিবহণ ব্যবস্থায় নাকমুখ ঢাকা বাধ্যতামূলক হয়ে গেছে৷
সম্প্রতি কড়াকড়ি শিথিল করার যে উদ্যোগ শুরু হয়ে গেছে, তার ফলে আরও বেশি মানুষ প্রকাশ্যে বের হচ্ছেন৷ আগামী ৪ মে থেকে গোটা দেশে আরও কিছু বিধিনিয়ম শিথিল করার কথা৷ এই অবস্থায় সোমবারের তথ্য অনুযায়ী জার্মানিতে ‘রিপ্রোডাকশন নম্বর' অর্থাৎ এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে সংক্রমণের গড় হার বেড়ে ১:১-এ দাঁড়িয়েছে৷ তার আগে পর্যন্ত সেই হার ছিল শূন্য দশমিক নয় শতাংশ৷ এই হার একের বেশি হলেই আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বেড়ে গিয়ে অতীত সাফল্য ম্লান করে দেবে বলে প্রায় সব বিশেষজ্ঞ এবং চ্যান্সেলর ম্যার্কেল আশঙ্কা করছেন৷ তিনি বলেন, সংখ্যাটি এক দশমিক তিন ছুঁলে জুন মাসের মধ্যেই জার্মানির স্বাস্থ্য পরিষেবা কাঠামোর পক্ষে তা সামাল দেওয়া সহজ হবে না৷ তবে লোটার ভিলার মনে করেন, ঝুঁকির মাত্রা নির্ণয় করতে অন্যান্য তথ্যও বিবেচনা করা উচিত৷ যেমন প্রতিদিন কতজন নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন, তার উপরও সংক্রমণের প্রবণতা নির্ভর করছে৷ এই হার কমলে যারা আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে এসেছেন, কর্তৃপক্ষের পক্ষে তাদের শনাক্ত করা অনেক সহজ হয়৷ মার্চ মাসে এই সংখ্যা বেশি থাকায় সেই উদ্যোগে ভাটা পড়েছিল৷
এমন সতর্কবার্তা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষ কতটা সংযত হবেন, সে বিষয়ে কোনো ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না৷ বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে কার্যত গৃহবন্দি থাকার পর অনেক মানুষ সাহস করে প্রকাশ্যে বের হচ্ছেন৷ বৃহস্পতিবার চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ১৬টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে পরিস্থিতির মূল্যায়ন করে পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করতে পারেন৷
এসবি/জেডএইচ (ডিপিএ, এএফপি)