ওমিক্রন দ্রুত ছড়াচ্ছে বলে ২০ মার্চ পর্যন্ত চীনের শেনজেনে লকডাউন। সব কারখানা বন্ধ।
চীনে আবার করোনা প্রবলভাবে ছড়াচ্ছে। ছবি: Xinhua/Li Ziheng/picture alliance
বিজ্ঞাপন
২০২১ সাল জুড়ে চীনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন আট হাজার ৩৭৮ জন। কিন্তু ২০২২-এর প্রথম আড়াই মাসে চীনে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা নয় হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে। তাই শেনজেন শহরে সম্পূর্ণ লকআউট ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে শুধু এক কোটি ৭০ লাখ মানুষ থাকেন তাই নয়, এই শহরকে বলা হয় চীনের সিলিকন ভ্যালি। তথ্যপ্রযুক্তি সহ প্রচুর শিল্প-কারখানা আছে এই শহরে।
লকডাউনের জেরে সেই সব কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। গাড়ি প্রস্তুতকারক ফক্সভাগেনের তিনটি কারখানায় উৎপাদন বন্ধ। অ্যাপলকে যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী দুইটি সংস্থায় কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। তার মধ্যে একটি সংস্থা ফক্সকন অন্য কারখানায় উৎপাদন বাড়িয়ে ক্ষতিপূরণের চেষ্টা করবে জানিয়েছে।
লকডাউনের পর শুনশান শেনজেন। ছবি: picture alliance/AP
শেনজেনের অবস্থা
আগামী ২০ মার্চ পর্যন্ত শেনজেনে সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। কোনো সরকারি যানবাহন চলছে না। মানুষকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। শহরজুড়ে মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। ওমিক্রন যাতে না ছড়ায় তার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন সরকারি কর্মকর্তারা।
এর ফলে প্রচুর কারখানা বন্ধ থাকছে। ফক্সভাগেনের এক মুখপাত্র বেজিংয়ে জানিয়েছেন, অন্ততপক্ষে বুধবার পর্যন্ত তাদের কারখানা বন্ধ থাকবে। তার দাবি, এর বড় কোনো প্রভাব উৎপাদনের ক্ষেত্রে পড়বে না। কারণ, যেটুকু ক্ষতি হবে, তা পরে পূরণ করা সম্ভব হবে। জাপানের গাড়িপ্রস্তুতকারক সংস্থা টয়োটাও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
চীনে একশ কোটি মানুষকে দুই ডোজ ভ্যাকসিন
করোনা শুরু হয়েছিল চীনে। তারপর তা সারা বিশ্বে ছড়ায়। চীন দ্রুত তা নিয়ন্ত্রণে আনে। চীনে ৭১ শতাংশ মানুষ দুই ডোজ টিকা পেলেন।
ছবি: Ji Chunpeng/Xinhua News Agency/picture-alliance
একশ কোটিকে ভ্যাকসিন
একশ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিনের দুইটি ডোজ দিল চীন। চীনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৪০ কোটির দেশে ৭১ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ার কাজ শেষ। উপরের ছবিতে ভ্যাকসিন নেয়ার পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করছেন চীনারা।
ছবি: STR/AFP
উহান থেকে
করোনা শুরু হয়েছিল চীনের উহান থেকে। তারপর তা চীনের অন্যত্র ছড়িয়েছিল। পরে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়েছে। তবে অন্য দেশের তুলনায় চীন করোনা নিয়ন্ত্রণের কাজও দ্রুত করেছে। ছবিতে করোনাকালের উহান।
ছবি: Ng Han Guan/AP/dpa/picture alliance
পিছিয়ে আফ্রিকা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আফ্রিকা বিষয়ক ডিরেক্টর জানিয়েছেন, আফ্রিকার মোট জনসংখ্যার মাত্র তিন দশমিক ছয় শতাংশকে টিকার দুইটি ডোজ দেয়া হয়েছে। ধনী দেশগুলি প্রচুর ভ্যাকসিন নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছে বলে গরিব দেশগুলি পাচ্ছে না বলে ডিরেক্টর জানিয়েছেন।
ছবি: Jerome Delay/AP/picture alliance
ভারতের অবস্থা
ভারতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৭৬ কোটি ৫৭ লাখ ১৭ হাজার ১৩৭ ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে চার কোটি ৮০ লাখ মানুষ ভ্যাকসিনের অন্তত একটি ডোজ পেয়েছেন। ১৬ বছর বা তার বেশি বয়সিদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে নয়জন ভ্যাকসিনের অন্তত একটি ডোজ পেয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে। সবমিলিয়ে ৭১ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিনের অন্তত একটি ডোজ পেয়েছেন। তবে যুক্তরাজ্যে ভ্যাকসিন বিরোধী বিক্ষোভও হচ্ছে। লন্ডনে এরকম একটি বিক্ষোভের ছবি।
ছবি: Chris J. Ratcliffe/Getty Images
এগিয়ে আমিরাত
ভ্যাকসিন দেয়ার ক্ষেত্রে বিশ্বের দেশগুলির মধ্যে এক নম্বরে আমিরাত। সেখানে প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ দুই ডোজ টিকা পেয়েছেন। প্রায় দশ শতাংশের বেশি মানুষ টিকার একটি ডোজ পেয়েছেন।
ছবি: Kamran Jebreili/AP Photo/picture alliance
অ্যামেরিকায় টিকা
অ্যামেরিকায় ৫৩ শতাংশের বেশি মানুষ টিকার দুইটি ডোজ নিয়েছেন। সব মিলিয়ে প্রায় ৬৩ শতাংশ মানুষ টিকার অন্তত একটি ডোজ পেয়েছেন।
ছবি: Paul Hennessy/Zumapress/picture alliance
7 ছবি1 | 7
হংকংয়েও করোনার প্রকোপ
হংকংয়ে সোমবার ২৬ হাডার ৯০৮জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ২৪৯ জন। তবে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই সেখানে করোনা-কড়াকড়ি রয়েছে। দুইজনের বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ, স্কুল বন্ধ। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। বাইরে ব্যায়াম করতে গেলেও মাস্ক পরতে হয়। সামাজিক দূরত্বের উপর সরকার খুবই জোর দিচ্ছে।
গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীর করোনা
গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোতাকিস করোনায় আক্রান্ত। তিনি বাড়িতে নিভৃতবাস করছেন এবং বাড়ি থেকেই কাজকর্ম করছেন। প্রধানমন্ত্রীর আবেদন, মানুষ যেন টিকা নেন। কারণ, করোনা শেষ হয়ে যায়নি।