1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনা সংকটেও উৎসব ঘিরে জনসংযোগের চেষ্টা

পায়েল সামন্ত কলকাতা
১৫ অক্টোবর ২০২০

করোনার আবহে দুর্গাপুজো নিয়ে জনসংযোগের উদ্যোগ তৃণমূল ও বিজেপির৷ রাজ্য সরকার অনুদান বাড়িয়েছে উদ্যোক্তাদের জন্য৷ এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে হাইকোর্ট৷ বিজেপি দলগতভাবেই পুজোর আয়োজন করেছে৷

Indien Durga Puja Festival
ফাইল ছবিছবি: DW/P. Samanta

কোভিড সংক্রমণ হঠাৎই বেড়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে৷ এরই মধ্যে এসে গিয়েছে এই বাংলার সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো৷ প্রতি বছরই শাসক ও বিরোধী দলের নেতারা উৎসবকে জনসংযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেন৷ তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী-বিধায়করা বড় বাজেটের পুজোর আয়োজন করেন৷ এবার সবকিছুর উপর প্রশ্নচিহ্ন ছিল৷ যদিও পুজোর দিন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে তৎপরতা দ্রুত গতিতে বেড়েছে রাজনৈতিক দলগুলির৷

পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকার অতীতেও পুজো উদ্যোক্তাদের অনুদান দিয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, রাজ্যের প্রায় ৩৫ হাজার পুজো কমিটিকে দ্বিগুণ অনুদান দেওয়া হবে৷ অর্থাৎ, গত বছর ছিল ২৫ হাজার টাকা, এবার তা বেড়ে হবে ৫০ হাজার৷ গত বছর উদ্যোক্তারা বিদ্যুতের বিল ২৫ শতাংশ ছাড় পেয়েছিলেন, এবার সেটাও বেড়ে দ্বিগুণ হচ্ছে৷ এছাড়া পুজোর জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে যে টাকা দিতে হয়, সেটা মকুব করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাঁর বক্তব্য, করোনা ও লকডাউনের ফলে পুজো করার আর্থিক সঙ্গতি নেই অনেকের৷ তাই অনুদান বাড়ানো হয়েছে৷

‘উৎসব নয়, পুজোর আয়োজন করেছি’

This browser does not support the audio element.

তৃণমূল নেতারা বলছেন, উৎসব ঘিরে কোটি কোটি টাকার আর্থিক লেনদেন হয়, বহু মানুষের সারা বছরের মূল উপার্জন হয় এই মরশুমে৷ মুখ্যমন্ত্রীর পদক্ষেপের ফলে সেই বাজার চাঙ্গা হবে৷ পুজোর উপহার হিসেবে অন্যান্য ঘোষণাও রয়েছে, যা এই সঙ্কটে মানুষকে মেতে ওঠারই বার্তা দিচ্ছে কার্যত৷ কলকাতার রাস্তায় ডাবল ডেকার বাস ফিরেছে৷ দর্শনার্থীরা শহর ভ্রমণের জন্য এই বাসে চড়তে পারবেন৷ লোকশিল্পের প্রচারও হবে এই যানের মাধ্যমে৷ পুজোতেই শুরু হচ্ছে এর অনলাইন বুকিং৷

পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের সবচেয়ে বড় ইভেন্ট হাতছাড়া করতে চাইছে না শাসক-বিরোধীরা৷ করোনাও তাদের বিরত করতে পারেনি৷ রাজ্য বিজেপি তৃণমূলের থেকে আরও একধাপ এগিয়ে গিয়েছে৷ নজিরবিহীন ভাবে তারাই প্রথম রাজনৈতিক দল যারা নিজেদের ব্যানারে দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছে৷ সল্টলেকের পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রে প্রথম বছরের পুজো অনুষ্ঠিত হবে৷ ষষ্ঠীতে ভার্চুয়ালি এই পুজো উদ্বোধন করে বাংলার মানুষকে বার্তা দেবেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণে শাসকদল উৎসবের আয়োজন থেকে তাঁদের দূরে রাখতে চায়৷ এর প্রতিকারে করতে পুজোর আয়োজন করা হয়েছে৷ বিজেপি নেত্রী তনুজা চক্রবর্তী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা উৎসব নয়, পুজোর আয়োজন করেছি৷ সরকারি নিয়ম মেনে কোভিড পরিস্থিতিতে পুজো হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী পুজো নিয়ে যেটা করেছেন, তা দান-খয়রাতি৷ রাজ্যের যুবসমাজ এই কৌশল বুঝতে পেরেছে বলেই গত লোকসভা ভোটে বিজেপি সাফল্য পেয়েছে৷''

এই চাপানউতোরের মধ্যে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়েছে একটি জনস্বার্থ মামলার৷ বাম নেতার দায়ের করা এই মামলায় পুজোয় সরকারি অনুদান ও করোনার সময় ভিড় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে৷ শুনানিতে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছেন, দুর্গাপুজোর মতো অন্য উৎসবেও অনুদান দেওয়া হয় কি না৷ সংক্রমণ রুখতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে বন্ধ, সেখানে পুজোর অনুমতি কীভাবে দেওয়া হল? উৎসবের সময় ভিড় নিয়ন্ত্রণে কী পরিকল্পনা রয়েছে, তাও রাজ্যের কাছে জানতে চেয়েছে আদালত৷

‘এবার পুজো যতটা সংক্ষিপ্ত করা যেতো, ভালো হতো’

This browser does not support the audio element.

রাজ্যের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের গতিবিধির নেপথ্যে নিখাদ রাজনীতিই দেখছেন পর্যবেক্ষকরা৷ অধ্যাপক উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘এবার পুজো যতটা সংক্ষিপ্ত করা যেতো, ভালো হতো৷ কিন্তু উৎসবকে ঘিরে জনসংযোগের উদ্যোগ দেখে তা মনে হচ্ছে না৷ এর ফলশ্রুতি বিপজ্জনক হতে পারে৷'' এই আশঙ্কা আগেই প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা৷ তাঁরা সরকারকে লেখা চিঠিতে বলেছেন, পুজোয় মেতে উঠলে উৎসবের পর করোনা সুনামির আকার নিতে পারে৷ মহারাষ্ট্রে গণেশ পুজোর আয়োজন সীমিত হলেও সেখানে সংক্রমণ বেড়েছে৷ কেরল ওনাম উৎসবে মেতে ওঠার পর সেখানে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা৷ পশ্চিমবঙ্গে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, তা বোঝা যাবে আগামী মাসে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ