1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনা সংকটের সঙ্গী সংগীত আর ক্রিকেট আড্ডা লাইভ

৩১ জুলাই ২০২০

পৃথিবীটা আসলেই আমাদের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে৷ এই মহামারির সময়ে সেটা আরও বেশি করে প্রমাণ হল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এত লাইভের হিড়িকের কারণে৷

Live Streaming auf Smartphone (Symbolbild)
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Sergei

আজ থেকে ১০ বছর আগের কথাই ভাবুন৷ তখন মহামারিহলে ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্ট্রাগ্রামে লাইভ কল্পনাই করতে পারতো না কেউ৷ জার্মানিতে যখন করোনার সংক্রমণ শুরু হয়, সেই মার্চ মাসে আমিও বাংলাদেশ ঘুরে জার্মানিতে ফিরেছি৷ বাসায় টেলিভিশন নেই৷ বাইরে বের হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না৷ একেবারের ঘরবন্দি৷ ফলে বিনোদনের মাধ্যম নেটফ্লিক্স, আর মাঝে মাঝে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম
করোনা যখন শুরু হয় বাংলাদেশে তখন কেউ ভাবতেই পারেনি এত দীর্ঘ সময় ধরে সবাইকে ঘরে থাকতে হবে৷ তাই প্রথম মাসে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তেমন লাইভের ছড়াছড়ি ছিলো না৷ তবে এপ্রিল মাস থেকে অনেক ধরনের লাইভ অনুষ্ঠান শুরু হল৷
এপ্রিলে শুরু হল আমার হোম অফিস৷ ১০ মাসের বাচ্চা সাথে নিয়ে হোম অফিস নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন অবস্থাটা কতটা ভয়াবহ৷ ফলে অফিস-ঘরের চাপ সামলে দিন শেষে মাথা হাল্কা করার জন্য যথারীতি মজার কিছু দেখার পরিকল্পনা নিয়ে বসতাম৷



করোনার আগে লাইভ স্ট্রিমে একটা জিনিসই দেখতাম আর তাহল ক্রিকেট৷ করোনার কারণে সেই ক্রিকেটও বন্ধ৷ আর এ কারণেই এপ্রিলে তামিম ইকবাল যখন ক্রিকেটারদের সঙ্গে লাইভ আড্ডায় মেতে উঠলেন, শুরু করলাম সেটা দেখা৷ তামিম যে উপস্থাপনায় এতটা স্বতঃস্ফূর্ত কল্পনাই করিনি৷ কেননা আমরা যারা উপস্থাপনার কাজটা গত বেশ কয়েক বছর ধরে করে আসছি, তারা জানি প্রথমদিকে কতটা ক্যামেরার সামনে সাবলীলভাবে কথা বলাটা মোটেও সহজ ছিলো না৷ সেক্ষেত্রে তামিমকে একশতে অবশ্যই ৯৮ দেয়া যেতে পারে৷ বেশ মজা লেগেছিল তার সঙ্গে অন্য দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের লাইভ৷ অনেক ভেতরের খবর জানা গেছে এই লাইভগুলো থেকে৷ পাশাপাশি ছিলো মজার মজার গল্প৷ বিশেষ করে মাশরাফির সঙ্গে লাইভটি ছিলো দারুণ৷

এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো সাকিব আল হাসানের সঙ্গে করোনার সময়ে সর্বপ্রথম লাইভকরেছে ডয়চে ভেলে৷ খালেদ মুহিউদ্দীনের সঙ্গে তার খোলামেলা আলাপ শুধু আমার কেনো প্রত্যেক সাকিব ভক্তের কাছেই ভীষণ ভালো লেগেছিলো৷

এরপর হর্ষ ভোগলের লাইভ শোতেও সাকিবের কথা শুনেছি, কিন্তু সাকিব ততটা স্বত:স্ফূর্ত ছিলেন না সেখানে৷
আমার মন-মেজাজ খারাপ হলে ছোট ভাই কাজী সাবিরের ফেসবুক পোস্টে চোখ বুলিয়ে নিই৷ যদি কিছু না থাকে সাবিরকে বলি ‘একটা স্ট্যাটাস দে তো'৷ সেই সাবির খেলাধূলা নিয়ে অনেক টক শো, অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছে৷ এবার করোনার দিনগুলোতে ও শুরু করেছে নারী-পুরুষ সব ক্রিকেটারদের নিয়ে লাইভ আড্ডার অনুষ্ঠান৷ ইউটিউবে লাইভ স্ট্রিমে, ফেসবুকে ‘ক্রিকফেঞ্জি' নামের চ্যানেলে ও এই লাইভ অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করে৷

যেখানে সাবির আছে সেখানে মজার কিছু হবে না, তা তো হতে পারে না৷ সে কারণে ওর অনুষ্ঠান সময় পেলেই দেখি৷ সাবিরের শ্বশুর আবার প্রয়াত প্রখাত অভিনেতা হুমায়ূন ফরিদী৷ মে মাসে এই শক্তিমান অভিনেতার ব্যবহৃত চশমা নিলামে ওঠে৷ অকশন ফর অ্যাকশানের উদ্যোগে সেটা লাইভে নিলাম হয়৷ চশমা বিক্রির অর্থ করোনা দুর্গত মানুষদের দেয়া হয়৷ সেই লাইভ অনুষ্ঠানে সাবির, ওর স্ত্রী দেবযানী এবং হুমায়ূন ফরিদীর সঙ্গে দীর্ঘদিন যারা অভিনয় করেছিলেন তারা তাদের মজার অভিজ্ঞতা জানাচ্ছিলেন৷ এই অনুষ্ঠানটি আমি দেখতে শুরু করেছিলাম সাবিরের জন্য৷ কিন্তু হুমায়ূন ফরিদী আসলে এমন একজন মজার ব্যক্তিত্ব ছিলেন যে পুরো অনুষ্ঠানটি দেখতে বাধ্য হলাম৷

অমৃতা পারভেজ, ডয়চে ভেলেছবি: DW/P. Böll

আমি মূলত: সংগীতপ্রেমী একজন মানুষ৷ তাই করোনার এই সময়টাতে গানের অনুষ্ঠানই বেশি দেখা হয়েছে৷ বা বলা যায় মিউজিক নিয়ে যেকোন লাইভ অনুষ্ঠান৷ পণ্ডিত রবিশংকরের জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষ্যে এবার বিশাল কনসার্টের আয়োজন বাতিল হয়ে গেছে করোনার কারণে৷ আর তাই তার দুই মেয়ে অনুষ্কা শংকর এবং নোরা জোন্সসহ বিশ্বের বিখ্যাত মিউজিশিয়ানরা লাইভে নিজেদের বাসায় বসে একসাথে পণ্ডিত রবিশংকরকে শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন৷ আমাদের মত সাধারণ সংগীত পিপাসুদের জন্য যা ছিলো একটি বড় পাওয়া৷

প্রথম আলো ও বাংলা লিংকের যৌথ উদ্যোগটিও প্রশংসার যোগ্য৷ ‘ঘরে বসে শোনাবো গান' এই নামে একটি অনুষ্ঠান শুরু করেছে তারা৷ বিভিন্ন শিল্পীরা বাসায় বসেই ১০-১২ মিনিট ধরে তাদের পছন্দের গান শোনাচ্ছেন৷
কিছুদিন আগে সংগীতশিল্পী শ্রীকান্ত আচার্য্য এবং তার ছেলে দু'জনে মিলে লাইভ করলেন৷ ছেলে বাদ্যযন্ত্র বাজালো, বাবা গাইলেন৷ অসাধারণ লেগেছিলো সেই লাইভ৷
করোনার এই সময়টাতেরূপালি পর্দার মানুষগুলোযেনো ঠিক কাছের মানুষ হয়ে উঠেছে৷ এই তো কিছুদিন আগে বলিউড তারকা বিদ্যা বালান আর যীশু সেনগুপ্তর ইনস্টাগ্রাম লাইভ দেখছিলাম৷ দু'জন বাসায় বসে কথা বলছেন, যেনো ঘরের মানুষ৷

আসলে করোনার এই করুণ সময়ে নিজেদের অবসাদমুক্ত রাখতে পারাটা খুব জরুরি৷ সেটা করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি হোক বা রোগমুক্ত কেউ, সেক্ষেত্রে হাসির বা মজার কিছু অথবা গানের লাইভ অনুষ্ঠানগুলোই পারে সবার মনকে নির্ভার রাখতে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ