1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনা সংক্রমণ কমলেও উদ্বেগ কমছে না

সমীর কুমার দে ঢাকা
২৯ অক্টোবর ২০২১

করোনা সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে থাকলেও উদ্বেগ কমছে না৷ প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ কয়েকটি দেশে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকারকে সতর্ক করেছে করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি ও বিশেষজ্ঞরা৷

ফাইল ছবিছবি: Rashed Mortuza/DW

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য বিভাগের সবাইকে সতর্ক করে বলেছেন, শীতে করোনার প্রকোপ বাড়তে পারে৷

তবে প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, করোনার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালগুলো এখনও সেভাবে আছে৷ এর মধ্যে আরও কিছু চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনা হয়েছে৷ ফলে যে-কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে প্রস্তুত হাসপাতালগুলো৷

শুক্রবার দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সাত জন৷ এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ২৭ হাজার ৮৫৪ জনে দাঁড়িয়েছে৷

গত ৫ আগস্ট দেশে সর্বোচ্চ ২৬৪ জন রোগী মারা যায় এবং গত ২৮ জুলাই সর্বোচ্চ শনাক্ত হয় ১৬ হাজার ২৩০ জন৷

ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ

This browser does not support the audio element.

কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে এসেছে এটা সত্য৷ কিন্তু রাশিয়াসহ কয়েকটি দেশে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আমরা উদ্বিগ্ন৷ আগামীকালই (শনিবার) আমরা জাতীয় কমিটির একটা মিটিং ডেকেছি৷ সেখানে এগুলো নিয়ে আলোচনা হবে৷ আমরা সরকারকে যেটা বলতে চাই, কোনো ধরনের শৈথিল্য দেখানো যাবে না৷ স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে জোর দিতে হবে৷’’

এদিকে সরকার স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে৷ ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সি শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া শুরু হবে ১ নভেম্বর থেকে৷

করোনার সংক্রমণ কমে আসায় প্রায় দেড় বছর পর গত সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হয়েছে৷ খুলে দেওয়া হয়েছে মেডিকেল কলেজও৷ টিকাদানেও গতি এসেছে৷ স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী অন্তত এক ডোজ টিকা পেয়েছেন দেশের ২৫ শতাংশ মানুষ৷ আর ১২ শতাংশের বেশি মানুষের দুই ডোজ সম্পন্ন হয়েছে৷ স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আপাতত টিকার কোনো সংকট নেই৷

তবে নিজেদের তৎপরতায় করোনার সংক্রমণের হার কমেছে বলে মনে করেন না বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘করোনার সংক্রমণ আমরা নিয়ন্ত্রণ করেছি, এটা বলা যাবে না৷ এখন সংক্রমণের হার কম, সেটা সত্য৷ কিন্তু কেন কমেছে সেটা আমরা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছি না৷ কারণ আপনি বাইরে গিয়ে দেখেন কেউ মাস্ক পরে না, কোনো স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই৷’’

তাহলে করোনা কীভাবে নিয়ন্ত্রণে এসেছে? জবাবে তিনি বলেন, ‘‘সেটাই তো বলছি, গত বছরও এ সময় কম ছিল৷ আর শীতে আমাদের দেশে করোনা বাড়ে না৷ কারণ শীতের সময় নানা ধরনের স্থানীয় ভাইরাস আমাদের আক্রমণ করে৷ ফলে করোনা ভাইরাস স্থানীয় ভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকতে পারে না৷ আমাদের এখানে তৃতীয় ঢেউ যেটা বলা হচ্ছে, সেটা এলেও মার্চ-এপ্রিলের আগে নয়৷ শীতপ্রধান দেশগুলোতে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীয় হয়ত আমাদের সতর্ক করেছেন৷’’

ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ

This browser does not support the audio element.

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে শনাক্তের হার পাঁচ শতাংশের নিচে থাকলে সেটি অন্যান্য সাধারণ রোগের মতো গণ্য হবে৷ তবে ন্যূনতম ১৪ দিন এই হার বজায় থাকতে হবে৷ গত ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে তা পাঁচ শতাংশের নিচে নেমে আসে৷ এরপর থেকে টানা ৪৫ দিন ধরে শনাক্তের হার পাঁচ শতাংশের নিচে রয়েছে৷ ৩ অক্টোবর থেকে শনাক্তের হার তিন শতাংশের নিচে নেমে আসে৷ গত শুক্রবার তা আরও কমে এক দশমিক ৩৬ শতাংশে নেমে আসে৷ এরপর থেকে আর দুই শতাংশের উপরে উঠেনি৷

রাশিয়ায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু ব্যাপক হারে বৃদ্ধির কারণে সব কর্মস্থল আট দিনের জন্য বন্ধ হতে যাচ্ছে৷ আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত সে দেশের সরকার এ প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন৷

রোমানিয়ার হাসপাতালগুলোতে নতুন রোগী ভর্তি করা কঠিন হয়ে পড়েছে৷ ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশেও সংক্রমণের হার বাড়ছে৷ অথচ করোনা টিকাদানের ক্ষেত্রে ইউরোপ উল্লেখযোগ্য মাইলফলক স্পর্শ করেছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ইউরোপ মহাদেশে একশ’ কোটির বেশি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে৷ গত তিন সপ্তাহ ধরে এ অঞ্চলের অর্ধেকেরও বেশি দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে৷ যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণের হার ১১ শতাংশে নেমে আসার পর সংক্রমণ আবারও বাড়ছে সেখানে৷ যুক্তরাজ্যেও করোনার সংক্রমণ দ্রুতগতিতে বাড়ছে৷ ভারতেও কয়েকদিন ধরে সংক্রমণের হার বাড়ছে৷

এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য কতটা উদ্বেগের জানতে চাইলে ইউজিসি অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘করোনা ভাইরাসের তো কোনো চরিত্র নেই৷ ফলে কখন কী অবস্থা হবে সেটা বলা মুশকিল৷ তবে শীতে আমাদের এখানে খুব একটা বাড়ে না৷ তারপরও স্বাস্থ্যবিধি না মানলে যে-কোনো সময় এটা আবার ছড়িয়ে পড়তে পারে৷ স্বাস্থ্যবিভাগকেও পুরোপুরি প্রস্তুতি রাখতে হবে৷ করোনা জন্য নির্ধারিত হাসপাতালগুলো বন্ধ করা যাবে না৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ