1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কর্ক দিয়ে তৈরি আস্ত এক বাড়ি

১২ মার্চ ২০২০

পরিবেশবান্ধব ভবন তৈরির ক্ষেত্রে আজকাল নানা রকম উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে৷ কিন্তু মূলত কর্ক ব্যবহার করে গোটা বাড়ি তৈরির উদ্যোগ বেশ নজর কাড়ার মতো৷ সেই উপাদানের পরিবর্তনশীল বৈশিষ্ট্য অসাধারণ আমেজ সৃষ্টি করছে৷

Sendung  Euromaxx
ছবি: DW

কর্ক দিয়ে তৈরি হচ্ছে পরিবেশবান্ধব বাড়ি

04:13

This browser does not support the video element.

কর্কের ছিপি দিয়ে ওয়াইনের বোতল ভালো করে বন্ধ করা হয়৷ সেই একই উপাদান দিয়ে আবার আস্ত একটা বাড়িও তৈরি করা যায়৷ ইংল্যান্ডের ইটন শহরে সত্যি এমন এক বসতবাড়ি রয়েছে৷ সেটির সৃষ্টিকর্তা ও স্থপতি হিসেবে ম্যাথিউ বার্নেট হাউল্যান্ড মনে করেন, ‘‘বিশেষ করে আবাসনের মতো নির্মাণের ক্ষেত্রে কংক্রিট ব্লক, সিমেন্টভিত্তিক মোল্ডার, প্লাস্টিক ফোম ইনসুলেশনের মতো যে সব উপকরণ ব্যবহার করা হয়, সেগুলি নিয়ে আমি ঘোর অসন্তুষ্ট৷ এই সব উপাদান সব মিলিয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে৷'' 

কর্ক দিয়ে তৈরি হচ্ছে পরিবেশবান্ধব বাড়ি

04:13

This browser does not support the video element.

ম্যাথিউ প্রায় দশ বছর ধরে নিজের সহকর্মীদের সঙ্গে পরীক্ষানিরীক্ষা করেছেন৷ কর্ক কেটে বিভিন্ন স্তরে বিন্যাস করে শেষ পর্যন্ত মানানসই কাঠামো খুঁজে পেয়েছেন৷ তাঁরা মোট ১,২৬৮টি টুকরো দিয়ে তৈরি এমন এক প্রণালী তৈরি করেছেন, যেগুলি কোনো আঠা বা সংযোজক ছাড়াই অটুট থাকে৷ মাধ্যাকর্ষণ শক্তিই গোটা কাঠামোকে ধরে রাখে৷ জোড়া দেবার কোনো প্রয়োজন নেই৷ এই উপাদান সম্পর্কে ম্যাথিউ বলেন, ‘‘স্পর্শ পেলে সামান্য উষ্ণ হয়ে ওঠে৷ গঠনও স্পষ্ট চোখে পড়ে৷ সেইসঙ্গে সুগন্ধের কারণে সব মিলিয়ে বাসায় বেশ সুন্দর অভিজ্ঞতা হয়৷''

সত্যি ঘরের মধ্যে অন্য রকম গন্ধ পাওয়া যায়৷ অনেকটা সিগারের বাক্সের মতো৷ ৪৪ বর্গ মিটার জায়গা জুড়ে বেশ আরামদায়ক অনুভূতি পাওয়া যায়৷ প্রাচীনের ছোঁয়া সত্ত্বেও এই শৈলি বেশ আধুনিক৷ অনেকটা মায়া সভ্যতার প্রাচীন মন্দিরের মতো৷ ম্যাথিউ মনে করিয়ে দেন, ‘‘কোনো নির্দিষ্ট লাইনিং না থাকায় মূল কাঠামোর দিকে তাকালে মনে হবে পিরামিডের ভারের নীচে রয়েছি৷ উপর থেকে, চারপাশ থেকে ওজন যেন নেমে আসে৷ স্থাপত্যের দৃষ্টিভঙ্গিতে বেশ শক্তিশালী এক অনুভূতি৷''

ভবনের বাইরের অংশে কর্কের ব্যবহার এর আগেও হয়েছে৷ যেমন ২০০৭ সালে কর্ক গাছের দেশ পর্তুগালের উত্তরে একটি ভবন তৈরি করা হয়েছিল৷ বাড়িটির উপর সময়ের ছাপ বেশ স্পষ্ট৷ কারণ কর্ক প্রতিক্রিয়া দেখায়, স্থান পরিবর্তন করে, রংও বদলায়৷ স্থপতি হিসেবে ভাস্কো মাগালেস সেই বৈশিষ্ট্যের বিশেষ কদর করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘বৃষ্টির পর ভিজে যাবার ফলে বাড়িটি প্রত্যাশা অনুযায়ী আচরণ করছে৷ তাই এই চকোলেটের মতো খয়েরি রং আসলে পরিবেশের আর্দ্রতার প্রতিক্রিয়া৷ উপকরণ হিসেবে এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল৷ ঋতু অনুযায়ী তার মধ্যে পরিবর্তন ঘটে৷

ভাস্কো মাগালেস পথিকৃতের কাজ করেছেন৷ তিনি কর্ক দিয়ে বাড়ি তৈরিকরার পর স্থপতিদের মনে এ বিষয়ে বিশ্বাস জন্মেছে৷ উত্তাপ, শব্দ ও আগুন প্রতিরোধী এই উপকরণ পুরোপুরি পুনর্ব্যবহার করা সম্ভব৷ এ যেন সত্যি এক বিপ্লব৷ ভাস্কো মাগালেস জানিয়ে দেন, যে জাপান থেকে ক্যানাডায় এই ধারা ছড়িয়ে পড়েছে৷ উপকরণের জন্য ভালো পদক্ষেপ বটে৷ 

তারপর থেকে বেশ কয়েক'শো কর্কের বাড়ি তৈরি হয়েছে৷ এই প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে বসতবাড়ি, ডাক্তারের চেম্বার, স্কুল ইত্যাদি গড়ে তোলা হয়েছে৷

তবে ইটনের মতো শুধু কর্ক দিয়ে তৈরি আস্ত একটি ভবন এর আগে তৈরি করা হয় নি৷ ম্যাথিউ হাউল্যান্ড এই কাজ করে সন্তুষ্ট৷ সেখানে তিনি থাকতেও শুরু করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এত পরিশ্রমের ফলে আমি কিছুটা অবসাদে ভুগছি৷ তবে খুব সুন্দর হয়েছে৷ এখানে আমার খুব ভালো লাগছে৷ অত্যাধুনিক স্থাপত্যের আওতায় বিশাল জানালা ও সাদা রংয়ের মসৃণ দেওয়াল থাকে৷ এই পরিবেশ আরও গভীর অনুভূতি দেওয়ায় আমি খুব খুশি৷''

কার্বন নির্গমন কমানোর ফলে এখানে তিনি বিবেক দংশন ছাড়াই নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবেন৷

রিকি বর্নহাক/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ