নেট জিরো ট্র্যাকার জানিয়েছে, অনেক কোম্পানি কার্বন নিঃসরণ কমানোর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা ত্রুটিপূর্ণ এবং অস্পষ্ট৷
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে কার্বন নিঃসরণের বিষয়ে কর্পোরেটদের নেয়া ব্যবস্থা সম্পর্কেও সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে৷ কারণ এটি একাধিক কোম্পানির জলবায়ু লক্ষ্যপূরণের মূল কৌশল৷
সোমবার নেট জিরো ট্র্যাকারের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে৷ সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বড় কর্পোরেটগুলি কার্বন নিঃসরণ বিপুল পরিমাণে কমাবে বলে যে পরিকল্পনা করেছিল, তাতে ‘বড়সড় ত্রুটি' রয়েছে৷ তাতে ‘বিশ্বাসযোগ্যতার মারাত্মক অভাব’-ও রয়েছে৷
নিউক্লাইমেট ইনস্টিটিউটের জলবায়ুনীতির গবেষক তাকেশি কুরামোচি বলেন, ‘‘আমরা এখন এমন সময়ে রয়েছি যেখানে দ্রুত নেট জিরো অঙ্গীকারের জন্য (বিশেষ করে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে) যথেষ্ট চাপ রয়েছে৷ গ্রিন ওয়াশিং বা ডিকার্বনাইজেশনের দিকে একটি মৌলিক পরিবর্তন হতে পারে৷’’
যা-ই হোক, ফোর্বস ২০০০-এর বৃহত্তম কোম্পানিগুলির অর্ধেকই এখনও নেট-জিরোতে পৌঁছানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করতে পারেনি৷
জাতিসংঘ জলবায়ু প্রতিবেদন: আশা ও শঙ্কার তথ্য
জাতিসংঘের জলবায়ু বিজ্ঞান প্যানেলের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কার্বন নির্গমন এখনও বেড়ে চলেছে৷ দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়া হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে৷ ছবিঘরে থাকছে প্রতিবেদনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য৷
ছবি: Martin Meissner/AP/picture alliance
কার্বন নিঃসরণ বাড়ছে
পৃথিবীতে এখনও কার্বন নিঃসরণ কমেনি৷ ভূমি ব্যবহারের পরিবর্তন হিসাবে ধরলে ২০১৯ সালে ৫৯ গিগাটন কার্বন নিঃসরণ হয়েছে৷ ২০১০ সালের ৫২ দশমিক পাঁচ গিগাটনের তুলনায় এ পরিমাণ বেড়েছে ১২ শতাংশ৷ অর্থাৎ গত এক দশকে কার্বন নিঃসরণ প্রতি বছর এক দশমিক তিন শতাংশ হারে বেড়েছে৷ তবে ভালো খবর হচ্ছে, আগের দশকে এ হার ছিল দুই দশমিক এক শতাংশ৷ ফলে আগের দশকের চেয়ে গত দশকে নিঃসরণ কমেছে৷
ছবি: Oliver Berg/dpa/picture alliance
গ্রিনহাউজ গ্যাস চেম্বারের পথে
শিল্প বিপ্লব পরবর্তী যুগে তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম রাখতে উচ্চাভিলাষী পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করেছে জাতিসংঘের জলবায়ু প্যানেল৷ বর্তমান নির্গমণের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কোনো পদক্ষেপ না নেয়া হলে তাপমাত্রা তিন দশমিক দুই ডিগ্রি বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ বিভিন্ন দেশের জাতীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলেও তাপমাত্রা বৃদ্ধি সীমিত রাখা সম্ভব হবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে৷
ছবি: J. David Ake/AP/picture alliance
জ্বালানি ও নির্মাণ
তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখতে হলে ২০৩০ সালের মধ্যে সব গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমণ অর্ধেক এবং ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শুন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে হবে৷ এর মানে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বে ৯৫ শতাংশ কয়লা, ৬০ শতাংশ তেল এবং ৪৫ শতাংশ গ্যাস কম ব্যবহার করতে হবে৷ একই সঙ্গে ভবন নির্মাণে পরিবেশবান্ধব উপকরণের ব্যবহার বাড়াতে হবে৷
ছবি: Hasan Jamali/AP Photo/picture alliance
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সীমিতকরণ
উষ্ণতা বৃদ্ধি দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে আটকে রাখতে এমন সব পদক্ষেপ নিতে হবে যার ফলে বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সীমিত করবে৷ ২০৫০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এক দশমিক তিন থেকে দুই দশমিক সাত শতাংশ পর্যন্ত নেমে আসবে৷ তবে উষ্ণায়ন কমাতে পারলে সামগ্রিক অর্থনৈতিক সুবিধা এটি কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে প্রতিবেদনে আশা প্রকাশ করা হয়েছে৷
ছবি: Bilal Hussein/AP Photo/picture alliance
জীবনযাপনে পরিবর্তন
বিশ্বের তাপমাত্রা কমাতে জনগণের জীবনধারা এবং আচরণের পরিবর্তন আনতে হবে৷ এ লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের সরকারকে ভ্রমণ কমাতে বাড়ি থেকে কাজকে উৎসাহিত করা, সাইকেল চালানো এবং গাড়ির ব্যবহার কমিয়ে হাঁটতে উৎসাহ দেয়া, বা মাংস খাওয়ার চেয়ে উদ্ভিদ-ভিত্তিক খাবারের প্রচার করার মতো ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশও করা হয়েছে প্যানেলের প্রতিবেদনে৷
ছবি: Stanislav Krasilnikov/TASS/dpa/picture alliance
আশার সংবাদ
প্রতিবেদনে কিছু আশার কথাও তুলে ধরা হয়েছে৷ পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি দিন দিন আরো সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী হয়ে উঠছে৷ ২০১০ সালের তুলনায় সৌরশক্তির এক ইউনিটের দাম এখন ৮৫ শতাংশ কম, বায়ুশক্তির দাম কম ৫৫ শতাংশ৷ কিছু দেশে জ্বালানি নীতির পরিবর্তন করায় পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানি এবং বৈদ্যুতিক যানের ব্যবহার বেড়েছে, বন উজাড়ের হার কমেছে৷
ছবি: COMISION FEDERAL DE ELECTRICIDAD/HANDOUT/dpa/picture alliance
6 ছবি1 | 6
কী এই নেট জিরো?
নেট জিরো বলতে কার্বন নিউট্রালিটিকে বোঝানো হয়৷ এর অর্থ এই নয় যে, কোনো দেশ একেবারে শূন্যে নামিয়ে আনতে পারবে কার্বন নিঃসরণ৷ তবে নেট জিরোর মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণের পাশাপাশি গ্রিনহাউজ গ্যাস দূর করারও লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হয়৷
রিপোর্ট বলছে, অ্যামাজন, অ্যাপল এবং ফল্কসভাগেন-সহ নেট-জিরো লক্ষ্যমাত্রা নেয়া ৭০২টি কোম্পানির মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ স্পষ্ট করেনি যে তারা কীভাবে সেই লক্ষ্য অর্জনের পরিকল্পনা করেছে৷
‘অগ্রহণযোগ্যভাবে কম’ লক্ষ্য
যুক্তরাজ্যভিত্তিক এনার্জি অ্যান্ড ক্লাইমেট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইসিআইইউ) এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা পরিচালিত, প্রায় ২০০টি দেশের পাশাপাশি বৃহৎ বাণিজ্যিক কোম্পানিগুলির জন্য সর্বজনীনভাবে উপলব্ধ ডেটা মূল্যায়ন করে নেট জিরো ট্র্যাকার৷
জার্মান থিঙ্ক ট্যাঙ্ক নিউক্লাইমেট ইনস্টিটিউটের জলবায়ু নীতি বিশ্লেষক ফ্রেডেরিক হ্যানস রিপোর্টের সহ-লেখক বলেছেন, ‘‘বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সমস্যা রয়েছে৷ এই লক্ষ্যমাত্রাগুলির গুণমান এবং পাকাপোক্তভাবে তা কার্যকর করার ক্ষেত্রে অনেক সমস্যা দেখতে পাচ্ছি৷’’
প্রতিবেদনটিতে ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষ হওয়ার জন্য অনেক কোম্পানির নেয়া ‘অগ্রহণযোগ্যভাবে কম' লক্ষ্যমাত্রাগুলিও উল্লেখ করা হয়েছে৷ জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধে আগামী আট বছরে এই ধরনের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা কার্বন নিঃসরণ অর্ধেক করতে খুব একটা কার্যকর হবে না৷
পৃথিবীকে বাঁচাতে কোন শহরের কী পরিকল্পনা?
আজ ধরিত্রী দিবস৷ কার্বন নির্গমন কমাতে গোটা বিশ্বে নানা উদ্যোগ চলছে৷ বিশ্বের বেশ কয়েকটি এলাকায় কেন্দ্রীয় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা সত্ত্বেও সিটি কাউন্সিল এবং মেয়ররা কার্বন নির্গমন কমানোর চেষ্টা করছেন৷ দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: Zoonar/picture alliance
‘সবুজ অর্থনীতি’
নিজেদের গ্রহকে নিজেদের রক্ষা করার লড়াই৷ তাই কোথাও বিনিয়োগ করতে হলে এই গ্রহই প্রকৃত জায়গা৷ পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে তোলার একমাত্র চাবিকাঠি সবুজ অর্থনীতি৷ ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি সই হয়েছিল৷ বিশ্ব উষ্ণায়নের কথা মাথায় রেখে ওই চুক্তিতে স্থির হয়, অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বের তাপমাত্রা দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি যাতে বাড়তে না পারে, তার দিকে নজর রাখা হবে৷
ছবি: DW
তাপমাত্রা বাড়ছে
প্রাক-শিল্প স্তরে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে, যা বাসযোগ্য গ্রহের গড় তাপমাত্রার দ্বিগুণ৷ একাধিক দেশের সরকার জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্পকে ‘ক্লিন এনার্জি’-র তিন গুণ হারে ভরতুকি দিয়ে যাচ্ছে৷ জীবাশ্ম জ্বালানি লবির দীর্ঘকালীন প্রভাব থেকে শুরু করে ইউক্রেনের আক্রমণের ফলে জ্বালানি সংকটে সবের মাঝেও স্থানীয় স্তরে অনেকে কাজের চেষ্টা করে চলেছেন৷
ছবি: Zhi Zhiwen/dpa/picture alliance
জলবায়ু পরিবর্তন
গত বছর জলবায়ু সম্মেলনের সময় লন্ডনের মেয়র সাদিক খান বলেন, ‘‘শহর এবং সরকারের মধ্যে পার্থক্য রাত এবং দিনের মতো৷’’ তবুও ইউরোপ এবং এশিয়ার শহরেও জলবায়ু পরিবর্তনের কথা মাথায় রেখে পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে তোলার চেষ্টা চলছে৷
ছবি: David Klein/REUTERS
কোপেনহেগেন বিশ্বের প্রথম জলবায়ু নিরপেক্ষ শহর?
কোপেনহেগেন সরকার চায় ২০২৫ সালের মধ্যে শহরের অন্তত ৭৫ শতাংশ যাতায়াত হোক পায়ে হেঁটে, সাইকেলে কিংবা গণপরিবহণের মাধ্যমে৷ ২০৩০ সালের মধ্যে শহরে অভ্যন্তরীণ জ্বালানি ইঞ্জিনের যানবাহন নিষিদ্ধ করা হবে৷
কার্বন-ডাই-অক্সাইডের অন্যতম উৎস বিদ্যুৎ এবং তাপ৷ কোপেনহেগেন প্রশাসন কয়লা, তেল এবং গ্যাসকে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি দিয়ে প্রতিস্থাপন করছে৷ আবাসনগুলিতে তৈরি হওয়া, উৎপাদনের ফলে তৈরি হওয়া ব্যাপক বর্জ্য কমাতে ‘স্মার্ট এনার্জি গ্রিড’ স্থাপন করেছে তারা৷
ছবি: Emil Helms/Ritzau Scanpix/AFP/Getty Images
কী ভাবছে ভারত?
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমনকারী দেশ হিসেবে, সেই পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ৷ মুম্বইয়ের মতো বিশাল জনসংখ্যার (দুই কোটি) শহরও এই পদক্ষেপে শামিল হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/Design Pics/C. Caldicott
মুম্বই কী ভাবছে?
বৃষ্টি হলেই জল থৈ থৈ মুম্বই, তেমনই গরমের সময়ও ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা৷২০৫০ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ পুনর্নবীকরণযোগ্য লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়াবে মুম্বই৷ ২০২৩ সালের মধ্যে দুই হাজারের বেশি বৈদ্যুতিক বাস চলবে মুম্বইয়ে৷ শহরের ১০ শতাংশ কার্বন নির্গমনের জন্য দায়ী বর্জ্য–বিশেষ করে বর্জ্য থেকে উৎপাদিত মিথেন৷ এর ফলে শহর জুড়ে বনায়ন শুরু হয়েছে মুম্বইয়ে৷
ছবি: Punit Paranjpe/AFP/Getty Images
প্যারিস : ১৫ মিনিটের শহর!
পায়ে হাঁটা এবং সাইকেল চালানোর উপযোগী শহর তৈরি করে কার্বন নির্গমন উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব৷ বেঁচে থাকার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, তা যদি ১৫ মিনিটেই পাওয়া যায়? তাহলে তো গাড়ির প্রয়োজন হবে না৷ কার্বন নির্গমন কমবে৷ প্যারিসের মেয়র অ্যানে হিদালগো চান, ২০২৪ সালের মধ্যে শহরের প্রতিটি রাস্তায় সাইকেল লেন থাকুক৷ ফলে ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন-নিরপেক্ষতার লক্ষ্যপূরণ করা যাবে৷ এটাই হলো ১৫ মিনিটের শহরের পরিকল্পনা৷
ছবি: Marechal Aurore/ABACA/picture alliance
সিয়াটলও উদ্যোগী
শহর এবং আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ প্রায়ই জলবায়ু ইস্যুর বিষয়ে জাতীয় সরকারকে তুলোধোনা করে৷ স্ব-উন্নত শহুরে সমবায় আবাসনের ক্ষেত্রে ছোট ছোট আকারে বদল আনা সম্ভব৷ জার্মানির বিল্ডিং গ্রুপের ভাবনার উপর ভিত্তি করে সিয়াটলের লার্চ ল্যাব আর্কিটেকচার ফার্ম এই নিয়ে কাজ করছে৷ ‘লো এনার্জি’ আবাসন এবং ‘ইকোডিস্ট্রিক্ট’ তাদের লক্ষ্য৷
ছবি: Elaine Thompson/picture alliance/AP Photo
ফ্রাইবুর্গ: ইউরোপের সবুজতম শহর
জার্মানির ফওবান জেলার সবুজ শহর ফ্রাইবুর্গে ‘মডেল ইকো নেবারহুড’ তৈরি হয়েছে৷ এটি ‘জিরো এমিশন’ শহর৷ ২০৩০ সালের মধ্যে ৬০ শতাংশ নির্গমন কমাতে বদ্ধপরিকর স্থানীয় মানুষ এবং পৌরপ্রশাসন৷ এ শহরের পাঁচ হাজার ৬০০ জন বাসিন্দাদের কেউ গাড়ি ব্যবহার করেন না৷ রাস্তাগুলি সাইকেল এবং পথচারী-বান্ধব৷ ছাদে সৌরশক্তিসহ উজ্জ্বল রঙের ‘পাসিভহউস’ ভবন রয়েছে৷ বায়োগ্যাসচালিত শক্তি কারখানা বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করে৷
ছবি: Rolf Haid/picture alliance
10 ছবি1 | 10
কার্বন নিঃসরণ কমানোর বিষয়টিও রয়েছে প্রতিবেদনে৷ অন্যত্র নির্গমন হ্রাসের জন্য ক্রেডিট কেনা প্রায়ই কর্পোরেশনগুলির জন্য একটি মূল কৌশল৷ তারা দাবি করছে, জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা পূরণে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে তারা৷ কিন্তু বিশেষজ্ঞরা এর কার্যকারিতা এবং নিয়ন্ত্রণের অভাব সম্পর্কে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷
ইসিআইইউ-র সহ-লেখক জন ল্যাং বলেন, ‘‘যদি কোম্পানিগুলোকে হিসাব দিতে হয়, তাহলে নেট-জিরো অগ্রগতি নিশ্চিত করতে সরকারকে আইনি মান বেঁধে দিতে হবে৷ সরকার কী চায় তা নিয়ে কোম্পানিগুলিও বিভ্রান্ত৷ তারা জানে না কী তথ্য প্রকাশ করতে হবে৷
গত বছর গ্লাসগোতে জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে, জাতিসংঘ বেসরকারি খাতের জন্য কঠোর নেট-জিরো মান তৈরি করার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ দল গঠন করেছিল৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন নভেম্বরে গৃহীত নেট-জিরো রিপোর্টিং মানের খসড়া তৈরির প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে৷ তবে এটির বর্তমান প্রক্রিয়ায় সমস্যা রয়েছে৷ এর ফলে কোম্পানিগুলি নেট-জিরোর লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য কার্বন নির্গমন কমানো সংক্রান্ত গণনা করতে পারে না৷
ল্যাং বলেন, ‘‘কোম্পানিগুলিকে পথ দেখাতে নির্দিষ্ট বিধি কার্যকর করা প্রয়োজন৷'' তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন যে, এই নভেম্বরে মিশরের শারম আল-শেখ-এ জাতিসংঘের পরবর্তী জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনের আগে (সিওপি-২৭) আদৌ এই সমস্যার সমাধান হবে কিনা৷ তার মতে, ‘‘সম্ভবত সিওপি-২৮-এর আগে এই বিধি ঠিক করা সম্ভব নয়৷’’