জার্মানির ট্রেড ইউনিয়ন আইজি মেটাল কর্মী ছাঁটাই রুখতে সপ্তাহে পাঁচ দিনের পরিবর্তে চার দিন কাজের প্রস্তাব রাখতে চলেছে৷ তারা মনে করে, কাজ কমিয়ে হলেও কর্মী ধরে রাখা উচিত৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানির শিল্পাঙ্গনের সবচেয়ে বড় ট্রেড ইউনিয়ন আইজি মেটাল৷ গাড়ি তৈরির বিশ্বখ্যাত কোম্পানি আউডি, বিএমডাব্লিউ, পর্শে-সহ অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের প্রতিনিধিত্ব করে তারা৷
এ দেশের মোট জিডিপির পাঁচ ভাগ আসে গাড়ি শিল্প থেকে৷ আট লাখ ৩০ হাজারের মতো কর্মী রয়েছে এই শিল্পে৷ সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, পরিস্থিতি বেশি খারাপ হলে ২০৩০ সালের মধ্যে এই শিল্পের চার লাখের মতো কর্মী কাজ হারাতে পারেন৷
তবে এ অবস্থা তৈরির আগেই কর্মীরক্ষার উপায় ভাবতে শুরু করেছে ট্রেড ইউনিয়নগুলো৷ আইজি মেটাল মনে করে, সপ্তাহর পাঁচ দিন কিছু মানুষকে দিয়ে কাজ করাতে গিয়ে অনেক মানুষ ছাঁটাই করার চেয়ে একদিন কম কাজ করিয়ে বেশি কর্মী ধরে রাখা বেশি ভালো৷
আইজি মেটাল-এর চেয়ারম্যান ইয়র্গ হফমান জুডডয়েচে সাইটুং-কে বলেছেন, ‘‘এর মাধ্যমে অনেকের চাকরি খারিজ না করে চাকরিতে রেখে দেয়া যাবে৷’’
তবে তিনি বলেন, সপ্তাহে একদিন কাজ কমালেও সরকার এবং অন্যান্য নিয়োগ কর্তৃপক্ষের কাছে কর্মীদের বেতন বাড়ানোর দাবিও জানাবে আইজি মেটাল৷
কাজ কমানোর হিড়িক
জার্মানির কিছু প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে কর্মঘণ্টা কমানোর পথে এগোতে শুরু করেছে৷ ডাইমলার, জেডএফ এবং বশ-এর মতো কোম্পানিও আছে সেই তালিকায়৷ তারা মনে করে, সংকটের মুখে ব্যাপক ছাঁটাইয়ে না গিয়ে কাজ কমিয়ে হলেও কর্মী ধরে রাখা ভালো৷
এসিবি/কেএম (রয়টার্স, ডিপিএ)
৩০ জুলাইয়ের ছবিঘরটি দেখুন...
করোনায় জার্মানির জিডিপির রেকর্ড পতন
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বছরের দ্বিতীয় কোয়ার্টারে (এপ্রিল থেকে জুন) জার্মানির অর্থনীতির ১০.১% ভাগ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে৷ তবে সরকারের নীতির কারণে এখনো দেশটিতে সে অর্থে কর্মী ছাটাই বাড়েনি৷
ছবি: picture-alliance/imageBroker
অর্থনীতিতে বিরাট ধাক্কা
বৃহস্পতিবার এ বছর এপ্রিল থেকে জুনের কিছু অর্থনৈতিক উপাত্ত প্রকাশিত হয়েছে৷ সেখানে দেখা গেছে, জার্মানির অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে রেকর্ড পতন হয়েছে (১০.১%)৷ এমন একটি সময়ে জার্মানির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দপ্তর এই তথ্য প্রকাশ করল, যখন পুরো ইউরোপ করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় পড়তে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance /J. Tack
১৯৭০-এর পর প্রথম
১৯৭০ সালে সবশেষ অর্থনীতির এমন পতন দেখেছিল জার্মানি৷ পরিসংখ্যান দপ্তর বলছে, করোনার কারণে এমনকি বাসাবাড়িতে ব্যয় যেমন কমেছে, তেমনি ব্যবসায় বিনিয়োগ কিংবা রপ্তানি সবকিছুতেই ধস নেমেছে কোভিড-১৯ এর কারণে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Hoppe
পরামর্শকদের ধারণা ভুল
মার্চে জার্মানির অর্থনৈতিক পরামর্শকদের প্যানেল বলেছিল যে, পুরো বছরে হয়ত জিডিপির পতন ২.৮% ভাগ হতে পারে৷ তাদের ধারণা ছিল, পাঁচ সপ্তাহের লকডাউন শেষে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়ে উঠবে৷ কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি৷
ছবি: Imago Images/F. Sorge
বেকারত্বের হার এখনো স্বাভাবিক
পরিসংখ্যান বলছে, এত কিছু হয়ে গেলেও এ বছর জুলাইতে বেকারত্বের হার ৬.৪%৷ অর্থাৎ বড় আকারে কর্মী ছাটাই হয়নি (মার্চে ছিল ৫%)৷ এতে সরকারের দেয়া প্রণোদনা অর্থ ভূমিকা রেখেছে৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/McPHOTOs
বাড়ছে প্রণোদনার চাপ
দিন দিন সরকারের প্রণোদনার সুবিধা পাওয়াদের সংখ্যা বাড়াতে হচ্ছে৷ যেমন, মে মাসে ৬৭ লাখ মানুষকে সরকারের ‘ফারলো স্কিমের’ আওতায় অর্থ পেয়েছেন, যেখানে এপ্রিলে এ সংখ্যা ছিল ৬১ লাখ৷