তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন উড়ালপুল। কিন্তু পুরনো উড়ালপুলগুলি কতটা নিরাপদ কলকাতায়?
বিজ্ঞাপন
মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পরে কলকাতার একাধিক ফ্লাইওভার এবং সেতুর স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত কমিটি। সব মিলিয়ে শহরের প্রায় ২০টি সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা বলেছিলেন তারা। জানিয়েছিলেন, ওই ২০টি সেতুর অবস্থা বিপজ্জনক। যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। মাঝে কেটে গেছে তিন বছর। পুরসভা নির্বাচনের আগে কী অবস্থায় আছে কলকাতার একাধিক সেতু এবং ফ্লাইওভার, তা সরেজমিন ঘুরে দেখেছে ডিডাব্লিউ। আমাদের অনুসন্ধানে বেশ কিছু সমস্যা যেমন উঠে এসেছে, তেমনই বেশ কিছু সদর্থক দিকও চোখে পড়েছে। তবে ঘটনা হলো, এখনো বেশ কয়েকটি ব্রিজের অবস্থা খারাপ।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
কলকাতার বেশ কয়েকটি ব্রিজ বিপর্যয়ের তদন্ত করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রবীণ অধ্যাপক এবং ব্রিজ বিশেষজ্ঞ সোমনাথ ঘোষ। মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পরে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, কীভাবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেতুটি দুর্বল হয়ে পড়েছিল। বছরখানেক আগে কলকাতার বউবাজারে মেট্রো রেলের কাজে দুর্ঘটনার পরেও তিনি তদন্ত করেছিলেন। পুরনির্বাচনের আগে ডিডাব্লিউকে তিনি জানিয়েছেন, সরকারকে তারা একাধিক বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছিলেন। তার বেশ কিছু রূপায়ণ হয়েছে। তার কথায়, ''আমরা যে পরামর্শগুলি দিয়েছিলাম, তার বেশ কয়েকটি কাজ ইতিমধ্যেই হয়েছে। কিছু কাজ করতে সময় লাগবে। তবে দৃশ্যত কলকাতার ব্রিজ এবং উড়ালপুলের স্বাস্থ্য আগের চেয়ে ভালো হয়েছে।''
কলকাতার একাধিক ব্রিজের দায়িত্বে থাকা কেএমডিএ-র এক ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গেও কথা বলেছে ডিডাব্লিউ। সরকারি চাকরির কারণে তার নামপ্রকাশের অনুমতি নেই। ডিডাব্লিউকে তিনি জানিয়েছেন, ''বেশ কয়েকটি ব্রিজের মেরামতি শেষ হয়েছে। টালার মতো কয়েকটি ব্রিজের কাজ এখনো চলছে। আগামী কয়েকবছরের মধ্যে পুরনো ব্রিজগুলির অধিকাংশই সারিয়ে ফেলা যাবে।''
সমস্যার দিকগুলি
একাধিক সেতুতে যে কাজ চলছে, তা আমাদের ক্যামেরাতেও ধরা পড়েছে। কিন্তু ব্রিজের রক্ষণাবেক্ষণে এখনো যে কিছু সমস্যা আছে, তাও উঠে এসেছে আমাদের ক্যামেরায়। উল্টোডাঙা ব্রিজে ক্ষত তৈরি হয়েছে। বছরকয়েক আগে এই ব্রিজ ভেঙে পড়েছিল। প্রাণহানিও হয়েছিল। বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর সেই ব্রিজ খুললেও এখনো সেখানে ফাটল আছে। যা যে কোনো সময় বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। যে ব্রিজে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে এই ধরনের ফাটল রক্ষণাবেক্ষণ ও নিয়মিত নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয়।
কলকাতার ব্রিজ: ভাঙছে চাঙড়, গজাচ্ছে বটগাছ, বাড়ছে ফাটল
তিন বছর আগে ভেঙে পড়ে মাঝেরহাট সেতু। বিশেষজ্ঞ কমিটি বলেছিল, ২০টি ব্রিজ সারানো দরকার। কিছু সারানো হয়েছে। কলকাতার সেতু ঘুরে দেখে ডিডাব্লিউ-র বিশেষ ছবিঘর।
ছবি: Subrata Goswami/DW
মা উড়ালপুলে বটগাছ
বাইপাসে পার্ক সার্কাস কানেকটরের উপর তৈরি হয়েছে এই সেতু। কলকাতা তথা রাজ্যের দীর্ঘতম উড়ালপুল। দশ কিলোমিটার লম্বা এই উড়ালপুলের গায়ে দেখা গেল বটগাছের চারা গজিয়ে গেছে। যা সেতুর ক্ষতি করতে পারে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
উল্টোডাঙা সেতুতে ফাটল
আট বছর আগে ভেঙে পড়েছিল এই ব্রিজের একাংশ। বহুদিন বন্ধ ছিল উড়ালপুলের একাংশ। তারপর সারানো হয়েছে। হাইটবার লাগানো হয়েছে। বড় গাড়ি উঠতে দেয়া হয় না। এই ব্রিজেও ফাটল চোখে পড়েছে। বৃহস্পতিবার মেরামতির জন্য উড়ালপুল বন্ধ ছিল।
ছবি: Subrata Goswami/DW
বিজন সেতুর বেহাল স্থিতি
কসবায় এই সেতুটির অবস্থা বছর পাঁচেক আগে বেশ খারাপ ছিল। তারপর সারাই হয়েছে। সিমেন্ট ও রঙের প্রলেপ পড়েছিল। কিন্তু আবার এই সেতুর অবস্থা খারাপ হচ্ছে। বেরিয়ে পড়ছে কংক্রিটের কঙ্কাল।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সোনারপুর রেল ওভারব্রিজ
ব্রিজের শুরুতে পুলিশ বাজেয়াপ্ত করা গাড়ি রাখে। ব্রিজের নীচে মাছের আড়ত। বেশ নোংরা। এর ফলে ব্রিজের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট।
ছবি: Subrata Goswami/DW
শিয়ালদহ ফ্লাইওভার
সরকারি নাম বিদ্যাপতি সেতু। ব্রিজের নীচে বিশাল বাজার। কোনো গাড়ি চলে না। ১৯৭৮ সালে তৈরি এই ব্রিজ মেট্রো রেলের সুড়ঙ্গ তৈরির জন্য চারদিন বন্ধ রাখা হয়েছিল। আগে এখানে ট্রাম চলতো। তাও এখন বন্ধ। ট্রামনাইলে পিচ ঢালা হয়েছে। কিন্তু এর ফলে লোহার পাত গরম হয়ে ব্রিজে ফাটল ধরার আশঙ্কা আছে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
হাওড়া ব্রিজে গুটখার ক্ষত
কলকাতার বিখ্যাত ল্যান্ডমার্ক। এই সেতুও গুটখার (পান মশলা) থুতুর নির্যাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কিছুদিন আগে বিশেষ কেমিক্যাল লাগানো হয়েছিল। এবার এই সেতু সারাবার পরিকল্পনা করেছে সরকার।
ছবি: Subrata Goswami/DW
নতুন মাঝেরহাট ব্রিজ
ভেঙে পড়া সেতুর জায়গায় তৈরি হয়েছে নতুন সেতু। তার নাম দেয়া হয়েছে জয় হিন্দ ব্রিজ। ২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সেতুর উদ্বোধন করেন। দুই বছর তিন মাস বন্ধ থাকার পর আবার চালু হয় মাঝেরহাট সেতু। নতুন ব্রিজ। তাই বাসিন্দারা এখন আশ্বস্ত। এই সেতুতে অতিরিক্ত ভার পড়লে সেন্সরের মাধ্যমে বার্তা পৌঁছে যাবে লালবাজার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে। প্রচুর ক্যামেরাও লাগানো হয়েছে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
করুণাময়ী ব্রিজের মেরামত
মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে যাওয়ার পর দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জের কাছে করুণাময়ী ব্রিজের একাংশ ভেঙে যায়। ২০২০ সালে পরীক্ষার জন্য চারদিন বন্ধ রাখা হয় এই সেতু। তারপর তা সারানো হয়। কিন্তু এখন সেই ব্রিজের নীচে গাছ গজিয়েছে দেখা গেল। চারপাশে জঞ্জাল।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সারানো হয়েছে অরবিন্দ সেতু
মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর নজর পড়ে এই ব্রিজের দিকে। মেরামতি হয়। কিন্তু তারপরেও ব্রিজের হাল পুরোপুরি ফেরানো যায়নি। ভারী যানবাহন নিষিদ্ধ। তাই ব্রিজে রয়েছে হাইটবার।
ছবি: Subrata Goswami/DW
চিংড়িহাটা ফ্লাইওভার নিয়ে আশঙ্কা
লকডাউনের সময় করা এক সমীক্ষায় এই সেতুটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই চিন্তা এখনো রয়েছে। এই সেতুর থামের অবস্থান নিয়েও সমস্যা আছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
ছবি: Subrata Goswami/DW
কালীঘাট ব্রিজের হাল
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির কাছে এই ব্রিজ। মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর জরুরি ভিত্তিতে এই সেতু মেরামতের নির্দেশ দেয়া হয়। মেরামত হয়েছে। পণ্যবাহী গাড়ি নিষিদ্ধ। হাইটবার লাগানো হয়েছে। নীল-সাদা রঙ দিয়েও এই সেতুর জীর্ণতা ঢাকা পড়ছে না।
ছবি: Subrata Goswami/DW
টালিগঞ্জ ব্রিজের অবস্থা ভালো নয়
১৯৩২ সালে তৈরি হয় এই সেতু। ব্রিজের নীচ দিয়ে বইছে আদিগঙ্গা। ব্রিজের উপরে ফুটপাথ জুড়ে বাজার বসে। ৮৯ বছর বয়সি এই ব্রিজের অবস্থা ভালো নয়।
ছবি: Subrata Goswami/DW
ঢাকুরিয়া ব্রিজ ও ইঁদুর
ঢাকুরিয়া ব্রিজের নীচে ইঁদুরবাহিনী চার ফুট মতো গর্ত করে ফেলেছিল। আপাতত পরিস্থিতি সামাল দেয়া গেছে। তবে পুরসভা, সহ একাধিক সংস্থা মনে করছে, জোড়াতালি দিয়ে আপাতত বিপদ কাটানোর চেষ্টা হয়েছে ঠিকই, ভবিষ্যতে সমস্যা আবার বড় হয়ে দেখা দিতে পারে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
আম্বেডকর সেতুর অবস্থা
ইস্টার্ন বাইপাসের পাশে আম্বেডকর সেতু। এই বছরের গোড়ার দিকে তিনদিন বন্ধ রেখে সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয়েছে। কাছে কিছু মার্বেলের গুদাম আছে। তাই ভারী যানবাহন চলাচল করে। জরুরি ভিত্তিতে কিছু কাজ করা হয়েছে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
নাগেরবাজার ফ্লাইওভারের সমস্যা
সরকারি নাম রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব সেতু। বাম আমলে কাজ শুরু হয়েছিল। তবে ২০১২-তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বোধন করেন। ব্রিজের নিকাশি ব্যবস্থা ভালো নয়। উপর থেকে নীচে জল পড়ে সমস্যার সৃষ্টি করে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
বেলগাছিয়া রেল ওভারব্রিজ
এই রেল ওভারব্রিজের নীচে দুইটি স্টেশন। কলকাতা এবং টালা চক্ররেল স্টেশন। এই ব্রিজের উপর দিয়ে ট্রাম চলত। পিচের অবস্থা বালো নয়। ফাটল, গর্ত ভর্তি।
ছবি: Subrata Goswami/DW
বাঘাযতীন রেল ওভারব্রিজের হাল
খুবই খারাপ অবস্থায় ছিল এই রেলওভারব্রিজ। ২০১৭ সালে ব্রিজের একটা চাঙড় ভেঙে পড়ে। তারপর এই ব্রিজ সারানোর কাজ শুরু হয়।
ছবি: Subrata Goswami/DW
কামালগাজি উড়ালপুলের অবস্থা ভালো
পাঁচ বছর আগে তৈরি হয়েছে এই উড়ালপুল। ৮৪ কোটি টাকা খরচ করে। এখনো অবস্থা ভালো আছে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
দ্বিতীয় হুগলি সেতুর অবস্থা ভালো
সরকারি নাম বিদ্যাসাগর সেতু। বেশি পরিচিত দ্বিতীয় হুগলি সেতু নামে। বছর তিরিশেকের এই সেতুর অবস্থা যথেষ্ট ভালো।
ছবি: Subrata Goswami/DW
শতবর্ষ পেরনো সুইং ব্রিজ
খিদিরপুর সুইং ব্রিজের বয়স একশ পার হয়েছে। ব্রিজটি জাহাজ এলে আড়াআড়িভাবে ঘুরে যেতে পারে। তাই এর নাম সুইং ব্রিজ। বয়স হলেও ভালো অবস্থায় আছে এই ব্রিজ।
লোহার তৈরি পুরনো ব্রিজ। নতুন রঙ হয়েছে। কিন্তু তাতেও জীর্ণতা ঢাকা যায়নি।
ছবি: Subrata Goswami/DW
গর্ডেনরিচ বাস্কিউল ব্রিজ
১৯৬৬ সালে তৈরি হয়েছিল এই ব্রিজ। ব্রিজটি আড়াআড়ি খুলে যেতে পারে। কলকাতা বন্দরের তত্ত্বাবধানে আছে এই ব্রিজ। অবস্থা ভালো।
ছবি: Subrata Goswami/DW
টালা সেতু ভেঙে নতুন ব্রিজ
২০২০ থেকে টালা সেতুতে যান চলাচল বন্ধ ছিল। এরপর সেতু ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নতুন সেতু তৈরি হচ্ছে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
পোস্তা উড়ালপুলও ভাঙা হচ্ছে
২০১৬-তে ভেঙে পড়ে নির্মীয়মান পোস্তা উড়ালপুলের একটি অংশ। এখন পুরোটাই ভেঙে ফেলা হচ্ছে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
25 ছবি1 | 25
কলকাতার দীর্ঘতম উড়ালপুল 'মা'তে বট গাছ গজিয়েছে। চিংড়িহাটা উড়ালুপলেও ফাটল তৈরি হয়েছে। এছাড়াও শিয়ালদহ উড়ালপুলের মতো পুরনো ব্রিজগুলির অবস্থাও খুব ভালো নয়। কোথাও বটগাছ গজিয়েছে, কোথাও বড় ফাটল চোখে পড়েছে।কোনো কোনো ব্রিজে গাড়ির লোড সেতুর বহনক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি।
কেন সমস্যা মিটছে না
কেএমডিএ-এর ইঞ্জিনিয়ারের বক্তব্য, একসঙ্গে সবকটি ব্রিজে কাজ করা মুশকিল। বিশেষ করে ব্যস্ত ব্রিজগুলি দীর্ঘদিনের জন্য বন্ধ করে কাজ করা কঠিন। টালা ব্রিজ বন্ধ রেখে কাজ করার জন্য উত্তর কলকাতায় গাড়ি চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। মাঝেরহাট ব্রিজ তৈরির সময় দক্ষিণ কলকাতায় যানজট তৈরি হয়েছে। ফলে সব দিক মাথায় রেখে এক একেকটি করে ব্রিজ ধরা হচ্ছে। সমস্ত কাজ শেষ হতে সময় লাগবে।
ব্রিজ বিশেষজ্ঞ ইন্দ্রনীল রায় ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''বিপজ্জনক ব্রিজগুলির মেরামত করতেই হবে। কারণ, যে কোনো সময় বড় বিপদ ঘটতে পারে। তবে তার চেয়েও জরুরি সব সময়ের জন্য একটি মনিটারিং কমিটি তৈরি রাখা। যারা নিয়মিত ব্রিজগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবে এবং ব্রিজগুলির রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দেবে।'' ইন্দ্রনীলের মতে, বড় কোনো ঘটনা ঘটলে তখন মনিটারিং কমিটি তৈরি করা হয়। তারপর তা নিয়ে আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়। যে ব্রিজে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেই ব্রিজই তখন ফোকাসে চলে আসে। অন্য ব্রিজগুলি আলোচনার বাইরে চলে যায়। এই মানসিকতা বদলানো দরকার।
ইন্দ্রনীলের সঙ্গে সহমত সোমনাথ ঘোষ। তিনিও মনে করেন, নিয়মিত ব্রিজগুলির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মনিটারিং কমিটি তৈরি রাখা দরকার। তবে ব্রিজগুলির অবস্থা আগের চেয়ে ভালো হয়েছে বলেই মত সোমনাথের।
ইন্দ্রনীল এবং সোমনাথ দুইজনেই মনে করেন, ব্রিজের বহন ক্ষমতার দিকেও নজর দেওয়া দরকার। বেশ কয়েকটি ব্রিজে হাইটবার লাগিয়ে বড় গাড়ির যাতায়াত বন্ধ করা গেলেও সব সেতুতে তা সম্ভব হয়নি। দ্রুত সেই কাজটি করে ফেলা দরকার।
কলকাতা পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, ব্রিজে দুর্ঘটনা কমানোর জন্য কয়েকটি জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বহু উড়ালপুল রাতের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এখন বন্ধ রাখা হয়। ওই সময়ে সেতুর রক্ষাণাবেক্ষণের কাজও হয়। তবে বেশ কিছু ব্রিজ যে এখনো বিপজ্জনক তা মেনে নিয়েছে পুলিশ এবং কেএমডিএ। নতুন পুর-প্রশাসন এলে সে দিকে নজর দেয় কি না, সেটাই এখন দেখার।