1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতসেরা গণপরিবহণ

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা১৯ ডিসেম্বর ২০১৩

কলকাতা শহরে বাসে-ট্রামে যতই ভিড় হোক, ট্যাক্সি যতই মুখের ওপর ‘যাবো না' বলে ধোঁয়া উড়িয়ে চলে যাক, ভারতের সেরা গণপরিবহণ ব্যবস্থা কিন্তু এই শহরেই৷ জানাচ্ছে একটি মার্কিন সমীক্ষা৷

Streik in Indien
ছবি: dapd

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বস্টনে অবস্থিত গণপরিবহণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ইউএসএ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ পাবলিক ট্রান্সপোর্ট', সংক্ষেপে ইউআইটিপি পৃথিবীর ৮৪টি দেশের গণপরিবহণ ব্যবস্থা নিয়ে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল৷ ‘ফিউচার অফ আরবান মোবিলিটি' বা নাগরিক পরিবহণের ভবিষ্যৎ শীর্ষক সেই সমীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে সদ্য এবং সেরার তালিকায় একটি নাম সকলকে চমকে দিয়েছে! যে শহরে বাতানুকূল অতিকায় ভলভো বাসের পাশাপাশি ঠুংঠুং ঘণ্টা বাজিয়ে চলে যায় হাতেটানা রিকশ, যে শহরে আধুনিক মেট্রো রেলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দৌড়য় আদ্যিকালের ট্রাম, সেই কলকাতা শহর আছে তালিকার ৩১ নম্বরে৷ এবং আরও বিস্ময়কর হল, ভারতের যে ছটি বড় শহরে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল, তাদের মধ্যে সবথেকে ভাল পরিবহণ পরিকাঠামো কলকাতারই৷

ওই তালিকায় ৪১ নম্বরে আছে ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বই, ৫৪ নম্বরে চেন্নাই, তার ঠিক পরেই ৫৫ নম্বরে হায়দরাবাদ, ৬৫ নম্বরে দক্ষিণ ভারতের আর এক শহর বেঙ্গালুরু এবং সবার শেষে, ৭৯ নম্বরে ভারতের রাজধানী দিল্লি৷ মার্কিন সংস্থাটির সমীক্ষা অনুযায়ী, গণপরিবহণ ব্যবস্থার নিরিখে বিশ্বের সেরা তিনটি শহর হল হংকং, সুইডেনের স্টকহোম এবং নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম৷ আর সবথেকে খারাপ হল ইরাকের বাগদাদ, ভিয়েতনামের হ্যানয় এবং আমেরিকার অ্যাটলান্টা৷ এখানে উল্লেখ করার মতো ব্যাপার হল, কলকাতা কিন্তু বেশ কিছু উন্নত এবং আধুনিক শহরকে পিছনে ফেলে দিয়েছে৷ যেমন আমেরিকার নিউ ইয়র্ক রয়েছে ৩৫ নম্বরে, ক্যানাডার টরন্টো ৩৮ নম্বর স্থানে

ছবি: DW/S. Bandopadhyay

স্বাভাবিক কারণেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে, ঠিক কোন কোন বিচার্য বিষয়ের ভিত্তিতে এই ক্রমতালিকা তৈরি হয়েছে৷ জানা যাচ্ছে, মূল জোর দেওয়া হয়েছিল, গণপরিবহণ ব্যবস্থা সারা দিনে কত লোক ব্যবহার করেন, দিনে কতবার যাতায়াত করে গণপরিবহণ যানগুলি, প্রথাগত টিকিটের বদলে স্মার্ট কার্ড বা চিপের ব্যবহার কত ব্যাপক, শহরে রাস্তার ঘনত্ব কেমন এবং গণপরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতিতে সাম্প্রতিক উদ্যোগ কী কী নেওয়া হয়েছে, তার ওপরেই৷ ফলে এটা আদৌ বিস্ময়কর নয় যে ভারতের সব শহরকে ছাড়িয়ে এক নম্বরে রয়েছে কলকাতা৷ এখানে যেমন এখনও চলে ভারতের একমাত্র ট্রাম, তেমন এই শহরেই চালু হয়েছিল প্রথম মেট্রো রেল৷ সাধারণ বাস থেকে বিলাসবহুল, বাতানুকূল বাস, ট্যাক্সি, অটোরিকশ, গণপরিবহণ মাধ্যম এই শহরে একাধিক৷ এবং ভোররাত থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কিছু না কিছু থাকেই যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য৷ তাছাড়া কলকাতার ৫৪ শতাংশ মানুষই গণপরিবহণে যাতায়াত করেন, জানা গিয়েছে কেন্দ্রীয় নগর উন্নয়ন মন্ত্রকের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায়৷ মধ্যবিত্ত কলকাতা সেই সুবাদেই এগিয়ে আছে দেশের তুলনামূলকভাবে বিত্তবান শহরগুলোর থেকে! কলকাতায় মাত্র ৮ শতাংশ লোক গাড়ি চড়ে যাতায়াত করেন৷

তবে পরিবহণ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, হংকং বা সিঙ্গাপুরের মতো শহরে গণ পরিবহণ ব্যবস্থা এত যে উন্নত, তার একটাই কারণ৷ ওই ব্যবস্থাকে সচল রাখতে প্রচুর বিধিনিযেধ আরোপ করা হয়, যেটা ব্যক্তিমানুষের জন্যে অসুবিধাজনক৷ যেমন হংকং শহরে একটা নিয়ম চালু আছে, যদি কারও বাড়ি বা ফ্ল্যাট মেট্রো রুটের ৫০০ মিটারের মধ্যে হয়, তা হলে সে বাড়িতে গাড়ি রাখতে পারবে না!

আর কলকাতার পরিবহণ ব্যবস্থাকে ভারতসেরা বলায় অনেক প্রবাসী বাঙালিই ব্যঙ্গের হাসি হেসেছেন৷ কলকাতাতেই জন্ম-বড় হওয়া, বর্তমানে মুম্বইয়ের বাসিন্দা এক ব্যাঙ্কিং পেশাদার যেমন বললেন, ভাগ্যিস ট্যাক্সি রিফিউজালের নিরিখে কোনও তালিকা তৈরি হয়নি, তা হলে কলকাতার স্থান হতো একেবারে সবার শেষে৷ কলকাতার অটোরিকশা চালকদের বেপরোয়া ড্রাইভিংও যেমন পথচলতি মানুষের দুশ্চিন্তার কারণ৷ অন্যদিকে সাইকেলের মতো দূষণবিহীন যান নিষিদ্ধ ঘোযিত হয়েছে শহরের বেশিরভাগ রাস্তায়, সেটা নিয়েও কলকাতাবাসীর আপত্তি আছে৷ কারণ, কলকাতায় যত লোক নিজেদের গাড়িতে চড়ে যাতায়াত করেন (৮ শতাংশ), তার থেকে বেশি লোক চড়তে পছন্দ করেন সাইকেল৷ প্রায় ১১ শতাংশ!

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

বাংলাদেশ