আবার পশ্চিমবঙ্গের জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে দাঁড়ালো দিল্লির রেসিডেন্টস ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন। তারাও মনে করে, সরকারি হাসপাতাল পুরোপুরি নিরাপদ নয়।
বিজ্ঞাপন
রাজধানী দিল্লিতে একসঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডাক্টর্স ফ্রন্ট এবং দিল্লির রেসিডেন্টস ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন।
সোমবার দিল্লির প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে দুই সংগঠনের নেতারা বলেছেন, সরকারি হাসপাতালগুলিকে তারা এখনো নিরাপদ বলে মনে করছেন না। শুধুমাত্র সিসিটিভি লাগিয়ে কোনো লাভ হবে না। যারা এই কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
দুই সংগঠনের চিকিৎসকরা বলেছেন, ''এটা শুধুমাত্র একটা ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা নয়, দেশের সব নারী, যারা বাইরে কাজ করতে যান, তাদের নিরাপত্তার প্রশ্নও এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে।''
অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন অফ গভর্নমেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক সুবর্ণ গোস্বামী বলেছেন, ''সিবিআইয়ের কাছে আমাদের প্রথম দাবি হলো, তদন্তে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে।''
চিকিৎসকদের দাবি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তারা ন্যায় বিচার চান।
আরজি কর কাণ্ডের পর দিল্লিতেও রেসিডেন্টস ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের ডাকে জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতি পালন করেছেন। পরে সুপ্রিম কোর্ট কাজে ফেরার আবেদন জানানোয় তারা কাজে যোগ দিয়েছেন। তবে তারা আগেও জানিয়েছিলেন, তারা পশ্চিমবঙ্গের জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে আছেন। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হলে, তারা আবার আন্দোলনে নামবেন।
প্রতিবাদ নিয়ে প্রস্তুতি কুমোরটুলির
দুর্গাপুজো আর কয়েকটা দিন বাকি। কুমোরটুলিতে চেনা ভিড় নেই। আরজি কর নিয়ে প্রতিবাদের ঢল নেমেছে। তাতে সুর মিলিয়ে ঢিমেতালে প্রস্তুতি কলকাতার কুমারপাড়ায়।
ছবি: Payel Samanta/DW
মৃৎশিল্পীরাও বিচার চান
আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের বিচার চায় জনতা। কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরাও তার বাইরে নন। বিচারের দাবিতে তারাও পথে হেঁটেছেন। বিচারের দীর্ঘ প্রক্রিয়া তাদেরও বলতে বাধ্য করেছে, আর কবে? আর কবে বিচার হবে?
ছবি: Payel Samanta/DW
বিক্রিবাটা কম
কাশ ও শিউলি ফুলের সঙ্গে ক্যালেন্ডারে পুজো প্রায় এসে গিয়েছে। কলকাতার কুমোরপাড়ায় রূপ পাচ্ছেন দশভুজা। তবে অনেক প্রতিমা এখনো বিক্রি হয়নি। সেই চেনা উৎসাহ, উদ্যম এবার চোখে পড়ছে না।
ছবি: Payel Samanta/DW
টুকটাক বায়না
বিশ্বকর্মা পুজোর আগেপরে সব প্রতিমার বায়না হয়ে যায়। এবার সেটা হয়নি। এখনো বায়না আসছে। বায়না করা প্রতিমার কাজ দেখতে অনেক উদ্যোক্তা আসেন। থিমের প্রতিমার কাজ প্রায় সারা হয়ে যায়। কিন্তু এবার সব হচ্ছে ধীর গতিতে।
ছবি: Payel Samanta/DW
ভিড় নেই
ফি বছর পুজোর আগে প্রতিমা নির্মাণ দেখতে ভিড় উপচে পড়ে। ছবি তোলার হিড়িক পড়ে যায়। শিল্পী বঙ্কিম পাল বলেন, "ভিড়ের চাপে আমাদের কাজেও অসুবিধা হত। এবার তা হচ্ছে না। সেই আগ্রহ নেই।" সরগরম থাকা কুমোরপাড়া যেন ঝিমোচ্ছে!
ছবি: Payel Samanta/DW
পুজো ও প্রতিবাদ
কয়েকটি পুজো কমিটি সরকারি অনুদান ফিরিয়ে দিয়েছে। তবে অধিকাংশ পুজো কমিটি এ নিয়ে কোনো বার্তা দেয়নি। টালা বারোয়ারির অভিষেক ভট্টাচার্য ডিডাব্লিউকে বলেন, "পুজো পুজোর মতই হবে। প্রতিবাদ পথে হচ্ছে, আমরা সেখানে আছি।"
ছবি: Payel Samanta/DW
অভয়া ক্লিনিক
মৃৎশিল্পী উন্নয়ন সমিতি চলতি পরিস্থিতিতে প্রতিবাদ মিছিল করেছে। তাদের কার্যালয়ে বসেছে অভয়া ক্লিনিক। নিহত তরুণী চিকিৎসকের স্মরণে রোগী দেখছেন ডাক্তারবাবুরা।
ছবি: Payel Samanta/DW
ক্রেতার অপেক্ষা
বিক্রেতারা সাজিয়ে রেখেছেন পসরা। কিন্তু ক্রেতার সংখ্যা বেশ কম। রাস্তার ধারে কেউ কেউ দাঁড়িয়ে প্রতিমার সামগ্রী নিয়ে। মৃৎশিল্পী কাকলি পাল বলেন, "পুজোর মাসখানেক আগেই আমার সব প্রতিমার বায়না-বিক্রি হয়ে যায়। এবার সব বিক্রি হয়নি।"
ছবি: Payel Samanta/DW
প্রতিবাদের সাক্ষ্য
কুমোরটুলির পাশ দিয়ে গিয়েছে রবীন্দ্র সরণি। পথের ধারে প্রতিবাদের চিহ্ন, বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর। শিল্পী মিন্টু পাল বলেন, "মানুষ হিসেবে সকলেরই এই অপরাধের প্রতিবাদ করা উচিত। আমরা পেশার কথা মাথায় রেখেও করেছি।"
ছবি: Payel Samanta/DW
শোলার পাড়া
কুমোরটুলি শুধু মৃৎশিল্পী নয়, শোলা ও সজ্জাশিল্পীদের আস্তানা। তাদের ব্যবসাও এবার ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা। রঞ্জিত সরকার, গৌতম দাসের মতো অনেক শিল্পী কাজে ব্যস্ত, কিন্তু তারা ঠিকঠাক ক্রেতা পাবেন তো?
ছবি: Payel Samanta/DW
আশঙ্কার মধ্যে
ইদানিং মিছিলে মাঝেমধ্যে যান চলাচল থমকে যাচ্ছে। পুজোর মধ্যেও চলতে পারে প্রতিবাদ, এমন সম্ভাবনা দেখছেন শিল্পী থেকে উদ্যোক্তারা। এতে প্রতিমা পরিবহনে সমস্যা হতে পারে। মণ্ডপে কমতে পারে দর্শক।
ছবি: Payel Samanta/DW
10 ছবি1 | 10
আরজি কর নিয়ে জয়শঙ্কর
গত শুক্রবার জেনিভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে কথা বলছিলেন। সেসসময় প্রবাসী ভারতীয়রা আরজি কর প্রসঙ্গ তোলেন।
তখন জয়শঙ্কর বলেন, ''আমার মনে হয়, সারা দেশে এমন কেউ নেই, যিনি এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হননি। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, রাস্তায় কী হচ্ছে। ঘটনা হলো, নারীর বিরুদ্ধে অপরাধ আমাদের দেশে একটা ইস্যু। অন্য দেশেও এটা বড় ইস্যু হতে পারে।''
তিনি বলেছেন, ''আমি প্রধানমন্ত্রীর কথাটা একবার মনে করিয়ে দিতে চাই। লালকেল্লায় তিনি বলেছিলেন, আমাদের মেয়েরা যখন বেশি রাতে বেরোতে চায়, তখন নানান কথা বলি। অনেক প্রশ্ন করি। কিন্তু সেটা কি আমরা আমাদের ছেলেদের ক্ষেত্রে করি? নারীর নিরাপত্তার বিষয়টা আজ খুব বড় বিষয়।''