কলকাতার ট্রেনে বোমা, অল্পের জন্য রক্ষা
১৭ জুন ২০১১সকাল সোয়া পাঁচটা ৷ কলকাতা-গুয়াহাটি কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনে পুলিশ রুটিন তল্লাসি চালাতে গিয়ে একটি বগির সীটের নীচে একখানা ভারি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখে৷ ব্যাগটিতে বোমা থাকতে পারে ভেবে পুলিশ ‘বম্ব ডিসপোসাল স্কোয়াড'কে খবর দেয়৷ গুয়াহাটি স্টেশনে ট্রেনটি থামলে ঐ ব্যাগ খোলা হয়৷ এবং তারমধ্যে একটি স্টেনলেস স্টীলের পাত্রে নিখুঁতভাবে প্যাক করা টাইমার লাগানো ৫ কেজি শক্তিশালি বিস্ফোরক পাওয়া যায়৷ তার সঙ্গে পাওয়া যায় চারটি ডেটোনেটর এবং প্রচুর স্টীলের বল৷ সে সময় ট্রেনটিতে ছিল অন্তত ১১০০শো যাত্রি৷ স্বাভাবিকভাবেই, সঙ্গে সঙ্গে নামিয়ে আনা হয় তাদের৷
পুলিশের সন্দেহ, রাতের বেলায় ট্রেনটি আসামে ঢোকার পর বিস্ফোরক ভর্তি বাক্সটি রাখা হয়৷ বলাই বাহুল্য, যদি তা সময় মতো ফাটতো - তাহলে বহু মানুষ হতাহত হতো৷ আসাম পুলিশের মতে, এটা রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী কোনো জঙ্গি গোষ্ঠীর কাজ৷
আসামে বর্তমানে বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রথম সারির দুটি জঙ্গি গোষ্ঠীর একটি হলো ‘আলফা' এবং অপরটি ‘জাতীয় গণতান্ত্রিক বোড়োল্যান্ড ফ্রন্ট বা এনডিএফবি'৷ দুটি গোষ্ঠীই সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করলেও, ঐ সংগঠনের একাংশ এই শান্তি আলোচনার বিরোধী৷ তাই আজকের এ ঘটনায় তাদের হাত থাকতে পারে৷
স্বাধীনতার পর পরই ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে অনেকগুলি জঙ্গি সংগঠন স্বাধীন স্ব-ভূমির দাবিতে সরকারের বিরুদ্ধে সহিংস তৎপরতা চালিয়ে আসছে৷ চা ও তেল সম্পদে সমৃদ্ধ আসামে এহেন সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত মারা গেছে প্রায় ১০ হাজারের বেশি মানুষ৷ অরবিন্দ রাজখোয়ার নেতৃত্বাধীন ‘আলফা' গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারের দু'দফা শান্তি বৈঠকও হয়েছে ইতিমধ্যে৷ কিন্তু, পরেশ বড়ুয়া শাখা এর বিরোধীতা করছে৷ তবে নবনির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গোগোই এ শান্তি আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সংকল্প ব্যক্ত করেছেন৷
এদিকে, লোয়ার আসামের গোয়ালপাড়া জেলা এবং তার পার্শ্ববর্তী মেঘালয় রাজ্যের পূর্ব গারো হিলস এলাকায় জনজাতি সংঘর্ষের ফলে গুয়াহাটি-হাওড়া ভায়া যোগিঘোপা ট্রেন ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে রঙ্গিয়া-বঙ্গাইগাঁও রুটে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ