1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কলকাতায় ক্লাবে বিস্ফোরণ, অভিযোগ তৃণমূলের দিকে

১৩ অক্টোবর ২০২০

ভোটের আগে পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক খুন লেগেই আছে। এ বার তার সঙ্গে যুক্ত হলো বিস্ফোরণ। কলকাতায় একটি ক্লাবে বিস্ফোরণ হলো।

প্রতীকী ছবিছবি: DW/P. Tiwari

বিধানসভা ভোটের এখনো বাকি ছয় মাস। কিন্তু এর মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক উত্তাপ যথেষ্ট চড়ে গিয়েছে। একাধিক বিজেপি নেতার হত্যা, বিরেধীদের আন্দোলন নিয়ে এতদিন সরগরম ছিল পশ্চিমবঙ্গ। কিন্তু এ বারে কলকাতার বেলেঘাটায় একটি ক্লাবের দোতলায় বিস্ফোরণ হলো। সকাল সাতটা নাগাদ প্রবল বিস্ফোরণ হয়।

ক্লাবের নাম বেলেঘাটা গান্ধী ময়দান ফ্রেন্ডস সার্কেল। বিস্ফোরণের পর দেখা যায়, ক্লাবের দোতলার ছাদের একটা অংশ ভেঙে পড়েছে। একদিকের দেওয়াল উড়ে গেছে। যে দেওয়াল খাড়া আছে সেখানে অনেক জায়গা পুড়ে গেছে। পুলিশ এখন ক্লাব ঘিরে রেখেছে। বম্ব ডিসপোসাল ইউনিটও পৌঁছেছে। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার অফিসাররাও গেছেন।

আনন্দবাজারের রিপোর্ট বলছে, এই ক্লাব স্থানীয় মানুষদের কাছে রাজু নস্করের ক্লাব বলে পরিচিত। রাজু নস্কর তৃণমূলের নেতা। বাহুবলী হিসাবে তাঁর খ্যাতি আছে।  স্থানীয় লোকেরা জানিয়েছেন, অতীতে কয়েকবার বোমাবাজি, তোলাবাজি, গুলি চালানোর দায়ে গ্রেপ্তারও হয়েছেন তিনি।

এই ক্লাব বেলেঘাটার গান্ধী ভবনের খুব কাছে। সেখানে কী করে এই ধরনের বিস্ফোরণ হলো তা পরিষ্কার নয়। ক্লাবের কিছু সদস্যের দাবি, দোতলায় গ্যাস সিলিন্ডার ছিল। সেটা ফেটে এই বিপত্তি। আবার স্থানীয় মানুষের সন্দেহ, শক্তিশালী বোমা ফেটে এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের বম্ব ডিসপোসাল স্কোয়াড, প্রশিক্ষিত কুকুর সবই ঘটনাস্থলে গেছে। বোমা রাখা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কলকাতার বুকে একটি ক্লাবে এই ধরনের বিস্ফোরণ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। বিজেপি-র দাবি, গোটা রাজ্যই বোমা বানাবার কারখানায় পরিণত হয়েছে। রাজ্যে দলের সহ সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''খাগড়াগড় থেকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের গল্প শুরু হয়েছে। নৈহাটি, দমদম সর্বত্রই বিস্ফোরণ হলে প্রথমে সিলিন্ডার ব্লাস্টের কথা বলা হয়। তারপর দেখা যায়, সেখানে জঙ্গিদেরও কার্যকলাপের তথ্য সামনে আসে। তখন বিস্ফোরণের কথা জানা যায়।'' রাজুর দাবি, ''বোমা বাঁধা ও বিস্ফোরণের ঘটনা কখনো তৃণমূল নেতার বাড়িতে হয়, কখনো তা ক্লাবে হয়।'' 

প্রবীণ সংবাদিক শুভাশিস মৈত্র দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যের রাজনীতিকে খুব কাছ থেকে দেখছেন, নিয়মিত তার খবর ও বিশ্লেষণ করছেন। ডয়চে ভেলেকে শুভাশিস জানিয়েছেন, ''বোমার সঙ্গে বাংলার রাজনীতির যোগ বহু পুরনো। অতীতে কংগ্রেস ও বাম এবং এখন তৃণমূলের আমলে  সেই একই ছবি দেখা যাচ্ছে।'' তাঁর মতে, ''রাজনীতির সঙ্গে ক্লাবের এবং ক্লাবের সঙ্গে বোমার সম্পর্ক দেখতে আমরা অভ্যস্ত। তার মানে এই নয় যে, সব ক্লাব রাজনীতি ও বোমার সঙ্গে যুক্ত। কিছু ক্লাব ও সেই সব ক্লাব যাঁরা চালান, তাঁদের সঙ্গে বোমার যোগ আছে। তবে বেলেঘাটার ক্লাবের সঙ্গে রাজনীতির যোগ আছে কি না, তা আমি বলতে পারব না।''

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর ক্লাবগুলিকে সরকার সাহায্য করেছে। তা নিয়ে প্রচুর বিতর্কও হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, সরকারি টাকা মানে জনগণের টাকা, সেই টাকা কেন ক্লাবগুলিকে দেয়া হবে? শুভাশিস মৈত্রের মতে, ''এর আগে বাম আমলেও সুভাষ চক্রবর্তী ক্লাব সমন্বয় কমিটি করেছিলেন। তখনও রাজনীতির অভিযোগ উঠেছিল। এখন মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যেই ক্লাবকে সাহায্য করছেন। তিনি ভালো উদ্দেশ্য নিয়েই করেছেন। ক্লাবের সদস্যরা যাতে খেলাধুলো করতে পারেন। কিন্তু ক্লাবকে রাজনীতিতে জড়ানোর প্রথাটা পুরনো। অনেক ক্লাবই রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে।''

আবার সেই বিতর্ক সামনে এলো। ক্লাবের সঙ্গে রাজনীতির, রাজনীতির সঙ্গে বোমার এবং বোমার সঙ্গে ভোটের সম্পর্ক নিয়ে বিতর্ক।

জিএইচ/এসজি(এএনআই)

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ