কলকাতায় আবার টাকা উদ্ধার। এবার গড়িয়াহাটে গাড়ির ভিতর থেকে পাওয়া গেল এক কোটি টাকা।
বিজ্ঞাপন
বুধবার কয়লাকাণ্ডের তদন্তে নেমে বালিগঞ্জ থেকে ইডি উদ্ধার করেছিল এক কোটি ৪০ লাখ টাকা। একদিন পরেই এবার বালিগঞ্জের কাছে গড়িয়াহাটে গাড়ির ভিতর থেকে এক কোটি টাকা উদ্ধার হলো।
তবে এই টাকা উদ্ধার করেছে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। তাদের কাছে এই বিষয়ে গোপন খবর আসে। তারপর গুন্ডাদমন শাখা গাড়িটি লালবাজারে নিয়ে যায়।
কলকাতায় ইডি হানা দিলেই মিলছে টাকার পাহাড়
পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে পাওয়া গিয়েছিল ৫২ কোটি। এবার কলকাতায় ব্যবয়াসীর বাড়ি থেকে ১৭ কোটি পেল ইডি। এর আগে হালিশহরের পুরপ্রধান রাজু সাহনির বাড়ি থেকে পাওয়া গেছিল ৮০ লাখ।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
ব্যবসায়ী আমির খানের বাড়ি
কলকাতার গার্ডেনরিচে ব্যবসায়ী নিসার আহমেদ খানের ছেলে আমির খানের বাড়ি থেকে উদ্ধার হলো ১৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা। আগে থেকে খবর পেয়ে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট(ইডি)-এর কর্মীরা আমির খানের বাড়ি, অফিস মিলিয়ে ছয় জায়গায় হানা দেয়।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
রাশি রাশি নোট
আমির খানের খাটের তলায় প্লাস্টিকের প্যাকেটে টাকা রাখা ছিল। সেই রাশি রাশি নোট উদ্ধার করে ইডি। বেশিরভাগ ৫০০ টাকার নোট। দুই হাজার ও দুইশ টাকার নোটও ছিল।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
টাকা গুনতে মেশিন
টাকা গোনার জন্য স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার কর্মকর্তাদের সাহায্য নেয় ইডি। সেখান থেকে আসে টাকা গোনার মেশিন। আসেন ব্যাংক কর্মীরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে টাকা গোনা হয়।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কে এই আমির খান?
আমির খান ও তার সহযোগীরা মিলে একটি গেম অ্যাপ চালাত। 'ই নাগেটস' নামে এই মোবাইল গেমিং অ্যাপের সাহায্যে গ্রাহকদের টাকা হাতিয়ে নিত তারা। গ্রাহকরা গেম খেললে কমিশন পেতেন। অ্যাপের ওয়ালেট থেকে কমিশনের টাকা তুলতে পারতেন। তার জন্য ওয়ালেটে টাকা রাখতে হত। বেশি কমিশন পাওয়া যাবে ভেবে গ্রাহকরা প্রচুর টাকা সেখানে রাখতেন। তারপর সেই টাকা হাতিয়ে নেয়া হত বলে ইডি সূত্র জানাচ্ছে। অনেক ভুয়া অ্যাকাউন্টের খোঁজ মিলেছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
এর পিছনে কারা?
আমির খানের সঙ্গে এখনো কোনো রাজনৈতিক দলের যোগাযোগের কথা সামনে আসেনি। কিন্তু রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে, রাজনীতিক থেকে ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে কী করে এভাবে কোটি কোটি টাকা পাওয়া যাচ্ছে? এভাবে উদ্ধার করা টাকার পাহাড় কলকাতা আগে দেখেনি। তৃণমূল বলছে, বিজেপি কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে রাজ্যের ব্যবয়াসীদের টার্গেট করছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
মন্ত্রীর বক্তব্য
গার্ডেনরিচ হলো রাজ্যের প্রভাবশালী মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের এলাকা। প্রথমে ফিরহাদ বলেন, ''বন্দর এলাকা বলেই ব্যবসায়ীদের চেনা র দায় কি আমার নাকি? ইডি রাজ্যের ব্যবসায়ীদের টার্গেট করছে।'' একদিন পরেই তিনি সুর বদল করে বলেন, ''ইডি তার কাজ করবে, সেটাই তো স্বাভাবিক।''
ছবি: picture-alliance/ZumaPress
বাড়ির মানুষ
তল্লাশি চালানোর সময় বাড়ির মানুষ তা দেখার চেষ্টা করেন। এক নারী তো অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। তবে বাড়ির মানুষ এই টাকা নিয়ে মুখ খোলেননি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী
ইডি যখন তল্লাশি চালাচ্ছিল, তখন বাইরে মোতায়েন করা হয়েছিল সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী। স্থানীয় মানুষ সেখানে আসেন। কিন্তু কেউই কিছু বুঝতে পারছিলেন না। পরে এত টাকা উদ্ধার হয়েছে জেনে তারা অবাক।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
সংবাদমাধ্যমের ভিড়
বাড়ির সামনে ছিল সংবাদমাধ্যম বিশেষ করে টিভির সাংবাদিক ও চিত্রসাংবাদিকদের ভিড়। কেউ মুখ খুললেই তার দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ছিলেন তারা। তাদের প্রশ্ন ছিল, কী করে এত টাকা পাওয়া গেল? ইডি কীভাবে জানল এই টাকার কথা? এর সঙ্গে কি কোনো রাজনৈতিক যোগ আছে? এই সব প্রশ্নের জবাব এখনো পাওয়া যায়নি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
9 ছবি1 | 9
গাড়ির চালক দুলাল মন্ডল ও তার সঙ্গী মুকেশ সারস্বতকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। দুলাল কলকাতার বেলগাছিয়ার ছেলে। কিন্তু মুকেশের বাড়ি রাজস্থানে। তাদের জিজ্ঞাবাসাবদ করছে পুলিশ। জানতে চাওয়া হচ্ছে, এত টাকা তারা কার কাছে কী জন্য নিয়ে যাচ্ছিল?
গতবছর জুলাই মাসে সাবেক মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাদ্য়ায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতার বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়। সেই শুরু। তারপর ব্যবসায়ী আমির খানের গার্ডেনরিচের বাড়ি থেকে ১৭ কোটি টাকা উদ্ধার হয়।
জানুয়ারিতে মহত্মা গান্ধী রোডে কপিলচরণ বেহরার কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা উদ্ধার হয়। রবীন্দ্র সরণির অফিস থেকে উদ্ধার হয় ১৭ লাখ টাকা। তারপর দুই দিনে দক্ষিণ কলকাতায় দুই কোটি ৪০ লাখ টাকা পাওয়া গেল।