কলকাতার বাজারে চলে এল পদ্মার ইলিশ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৌজন্যে। আপাতত ১০ অক্টোবর পর্যন্ত আসবে ইলিশ।
বিজ্ঞাপন
একে ইলিশ, তায় পদ্মার। কলকাতার ইলিশপ্রেমিক বঙ্গসন্তানরা আপ্লুত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের জন্য দুর্গাপুজোর উপহার দিয়েছেন। গতবারের তুলনায় এবার দ্বিগুণ পরিমাণ ইলিশ আসছে পশ্চিমবঙ্গে। প্রথমে বলা হয়েছিল দুই হাজার ৮০ মেট্রিক টন ইলিশ পাঠানো হবে। পরে বলা হয়েছে, আরো দুই হাজার ৫২০ টন ইলিশ ভারতে আসবে। সবমিলিয়ে চার হাজার ছয়শ টন।
একদিন আগেই পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ৪০ টন ইলিশ ঢুকেছে। মঙ্গল ও বুধবার এসেছে ৮০ টন। শুক্রবার গড়িয়াহাট, মানিকতলা, লেক মার্কেট, পাতিপুকুর সহ অনেক বাজারেই শোভা পাচ্ছিল পদ্মার ইলিশ। ওজন এক কিলো থেকে এক কিলো আড়াইশর মধ্যে। ছোটগুলো সাতশ-আটশ গ্রাম। বোঝা যাচ্ছে, দুর্গাপুজোর আগে পশ্চিমবঙ্গে বাঙালির সাধ্য থাকলে ভাতের পাতে ইলিশের অভাব হবে না। রসনাতৃপ্তির জন্য তারা বাংলাদেশ সরকারকে দুই হাত তুলে ধন্যবাদ দিতেই পারেন।
ঢাকার কাছেই ঘুরে আসুন মৈনট ঘাট থেকে
রাজধানীর কোলাহল ছেড়ে একদিনের জন্য কোথাও বেড়াতে যেতে চাইলে মৈনট ঘাটকে বেছে নিতে পারেন৷ সেখানে গেলে পদ্মার সৌন্দর্য্য যেমন আপনাকে মোহিত করবে, তেমনি খেতে পাবেন পদ্মার তাজা ইলিশ৷
ছবি: bdnews24.com
যেভাবে যেতে হবে
মৈনট ঘাটের অবস্থান ঢাকার দোহার উপজেলায়৷ গুলিস্তানের গোলাপশাহ মাজার থেকে সেখানে সরাসরি যাওয়ার বাস সার্ভিস আছে৷ ভাড়া জনপ্রতি ৯০ টাকা৷ সময় লাগবে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা৷
‘ছোট কক্সবাজার’
মৈনট ঘাটের আশেপাশে বিশেষ করে পূর্ব দিকে আছে বিশাল চর আর সামনে বিস্তীর্ণ পদ্মা৷ এই ঘাটের সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হয়ে অনেকেই একে ‘ছোট কক্সবাজার’ বা ‘মিনি কক্সবাজার’ নামে ডাকতে শুরু করেছে৷
ছবি: bdnews24.com
পদ্মায় ঘুরে বেড়ানো
নৌকা কিংবা স্পিডবোটে করে পদ্মার বুকে ঘুরে বেড়াতে পারেন৷ আট জনের চড়ার উপযোগী একটি স্পিডবোটের ভাড়া আধ ঘণ্টার জন্য দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা৷ এছাড়া আড়াইশ থেকে ৮শ’ টাকা ঘণ্টায় ইঞ্জিন নৌকায় চার থেকে ২০-২৫ জন একসঙ্গে ঘুরে বেড়ানো যায়৷
ছবি: bdnews24.com
সতর্ক থাকতে হবে
স্পিডবোট কিংবা নৌকায় করে পদ্মায় ঘোরার সময় লাইফ জ্যাকেট পরা উচিত৷ কেননা বর্ষা ও শরতের সময় পদ্মার ঢেউ হঠাৎ করেই বেড়ে যায়৷ তাই খুব ছোট নৌকা নিয়ে পদ্মার ভেতরে বেড়াতে যাওয়া ঠিক হবে না৷
ছবি: bdnews24.com
টাটকা মাছ কিনুন
নৌকা করে ঘুরতে গিয়ে হয়ত জেলে নৌকার দেখা পেয়ে যেতে পারেন৷ তাহলে দেরি না করে একেবারে তাজা মাছ কিনে নিতে পারেন তাদের কাছ থেকে৷
ছবি: bdnews24.com
খাবার ব্যবস্থা
মৈনট ঘাটের রেস্তোরাঁগুলোতে পদ্মার ইলিশের স্বাদ নেয়া যেতে পারে৷ এছাড়া ঘাটের কাছে কার্তিকপুর বাজারেও ভালো খাবারের ব্যবস্থা আছে৷
ছবি: bdnews24.com
নবাবগঞ্জের অন্যান্য নিদর্শন
মৈনট ঘাট এলাকায় ঘোরার জন্য বিকালটা ভালো সময়৷ সূর্যাস্তও দেখা যাবে তখন৷ তার আগে সকালে মৈনট ঘাট যাওয়ার পথে নবাবগঞ্জে নেমে সেখানকার প্রাচীন স্থাপনাগুলো দেখা যেতে পারে৷ যেমন জজ বাড়ি (ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন), কলাকোপার ঐতিহাসিক গান্ধী মাঠ, প্রাচীন প্রাসাদ, এন হাউজ, জগবন্ধু সাহা হাউজ এবং খেলারাম দাতার বাড়ি৷ দেখা যেতে পারে বান্দুরার জপমালা রাণীর গির্জাও৷
ছবি: bdnews24.com
রাতে থাকার ব্যবস্থা
মৈনট ঘাট এলাকায় রাতে থাকার ভাল ব্যবস্থা এখনও নেই৷ তবে ঢাকার কাছে হওয়ায় দিনে গিয়ে দিনে ফিরে যাওয়াই ভালো৷ নিজেরা গাড়ি নিয়ে গেলে ভ্রমণটা আরামদায়ক হতে পারে৷ সেক্ষেত্রে মৈনট ঘাট ছাড়াও নবাবগঞ্জের স্থাপনাগুলো দেখা যাবে৷
ছবি: bdnews24.com
যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবেন না
মৈনট ঘাটে সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে গিয়ে যদি আশেপাশে ময়লা দেখতে পান তাহলে নিশ্চয় আপনার ভালো লাগবে না৷ তাই পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে সচেষ্ট থাকতে হবে৷ যেখানে সেখানে পানির বোতল, চিপস-বিস্কুটের প্যাকেট সহ কোনো ময়লা ফেলা যাবে না৷ আপনি নিজে যেমন ফেলবেন না, তেমনি কাউকে ফেলতে দেখলে তাকে নিরুৎসাহিত করাটাও আপনার দায়িত্ব৷
ছবি: bdnews24.com
9 ছবি1 | 9
সাধ্যের কথাটা আসছে, কারণ, লেক মার্কেটে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার দুইশ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা কেজি দরে। ছোট হলে এক হাজার দুইশ, বড় হলে দুই হাজারের মতো। তবে পাতিপুকুর ফিশ মার্কেট অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা দেবাশিস জানা জানিয়েছেন, সেখানে এক কিলো দুইশ ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার তিনশ পঞ্চাশ টাকা কেজি দরে। তবে আরো ভালো স্বাদের ইলিশ এলে দাম আরো বাড়বে। আর ছোট সাতশ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে সাড়ে সাতশ টাকা কেজি দরে।
কিন্তু তা সত্ত্বেও একটা সমস্যা রয়েছে। সমস্যা হলো, ১০ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ইলিশ ভারতে পাঠাবার অনুমতি দিয়েছে সরকার। বাংলাদেশে ৪ অক্টোবর থেকে ইলিশ ধরা বন্ধ। ফলে তিন তারিখের পর ইলিশ আসা বন্ধ হতে পারে। রাজ্যের ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেছেন, দিনে সাধারণত ৫০ মেট্রিক টন করে ইলিশ ঢোকে। এত ইলিশ এই কয় দিনে ঢোকা সম্ভব নয়। তাই ২২ তারিখের পরেও যাতে ইলিশ আসে, সেজন্য তিনি দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।