1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কলকাতায় ডেভিড ক্যামেরন!

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়১৫ নভেম্বর ২০১৩

মাত্র ৬-৭ ঘণ্টার ঝটিকা সফরে কলকাতা ঘুরে গেলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন৷ প্রোটোকল ভেঙে এমন অনেক কিছুই করলেন, যা নজিরবিহীন৷

British Prime Minister David Cameron arrives at 10 Downing Street in central London on August 27, 2013, after returning early from a holiday to address the Syria crisis. Cameron will decide later on August 27 whether to recall parliament from its summer recess to debate a possible military intervention in the wake of a chemical weapons attack that Washington, London and Paris believe was carried out by the Syrian regime, Downing Street said. Cameron is expected to chair a meeting of the National Security Council to discuss Syria on August 28. AFP PHOTO / CARL COURT (Photo credit should read CARL COURT/AFP/Getty Images)
ছবি: Getty Images/Afp/Carl Court

ভারতের রাজধানী নতুন দিল্লি থেকে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর সফরসূচিতে আগে ছিল না কলকাতার নাম৷ একেবারে হঠাৎই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের ব্যক্তিগত আগ্রহে, বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে কলম্বো যাওয়ার মাঝপথে ছয়-সাত ঘণ্টার জন্য তিনি কলকাতা ঘুরে গেলেন৷ বৈঠক করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে৷ তার আগে ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট' এর কলকাতা ক্যাম্পাসের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনাচক্রে শামিল হলেন৷ দেখা করলেন কলকাতার বণিক মহলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে, নিজে গিয়ে সাক্ষাৎকার দিলেন অল ইন্ডিয়া রেডিও-কলকাতা, অর্থাৎ আকাশবাণী ভবনের স্টুডিওতে৷ তারপর বেতারকেন্দ্রের ছাদে উঠে, রাজভবনকে পিছনে রেখে ফটোগ্রাফারদের পোজ দিলেন এবং সবশেষ অঘটন, রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে শালপাতার ঠোঙায় পুদিনা-ধনেপাতার চাটনি দিয়ে ডালবড়া খেলেন এক হকারের কাছ থেকে!

বস্তুত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তাঁর এই ঝটিকা সফরে এমন অনেক কিছুই করলেন, যেসব কাজ কোনও রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধানকে বিদেশ সফরে গিয়ে সচরাচর করতে দেখা যায় না৷ যেমন বিমানবন্দর থেকে শহরে আসার পথে প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন ইচ্ছা প্রকাশ করেন, কলকাতায় ব্রিটিশ স্থাপত্যের অন্যতম স্মারক হাওড়া স্টেশন ও হাওড়া ব্রিজ যদি স্বচক্ষে দেখা যায়৷ মাঝপথেই হাওড়ার দিকে ঘুরিয়ে নেওয়া হয় কনভয়ের মুখ৷ পুলিশের দ্রুত সিদ্ধান্তে খালি করে দেওয়া হয় যাত্রাপথ, হাওড়া ব্রিজ এবং স্টেশন চত্বর৷ স্টেশনে পৌঁছে একবার পায়ে হেঁটে হাওড়া ব্রিজ ঘোরারও ইচ্ছা প্রকাশ করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, কিন্তু তাঁর নিরাপত্তার কথা ভেবেই সে অনুমতি তাঁকে দেওয়া হয়নি৷ অগত্যা স্টেশন চত্বরেই কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করেন তিনি৷ পুলিশি বেষ্টনীর বাইরে তখন অজস্র নিত্যযাত্রী এবং হকার, ট্যাক্সিচালক এবং মালবাহকের কৌতূহলী ভিড়৷

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডেভিড ক্যামেরনকে অনুরোধ করেন কলকাতা শহরে একটি ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস গড়ে তোলার জন্যছবি: Prabhakar Mani Tewari

তবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচিতে শেষমুহূর্তে যোগ হওয়া কলকাতার নামের সঙ্গে এমন অনেক ইঙ্গিতই ছিল, যা থেকে বোঝা গিয়েছিল, এই সফর আর পাঁচটা হাই-প্রোফাইল সরকারি সফরের মতো প্রোটোকলের লাল ফিতের ফাঁসে বাঁধা থাকবে না৷ যেমন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে প্রথম থেকেই আগ্রহী ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন, কিন্তু রীতিমাফিক কোনও দেশের প্রধানমন্ত্রী গিয়ে একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন না৷ কূটনৈতিক প্রোটোকল সেটা অনুমোদন করে না৷ তাই কলকাতার ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশনে একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল, যাতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী গিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পারেন৷ রাজ্যের শিল্পায়ন ও পরিকাঠামো উন্নয়নে আগ্রহী এবং বিদেশি বিনিয়োগ আনতে উদগ্রীব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সুযোগ হাতছাড়া করার কারণ ছিল না৷

প্রায় ৩০ মিনিট ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা হয়৷ প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন সাংবাদিকদের জানান, হুগলি নদীর সংস্কার নিয়ে তাঁদের আলোচনা হয়েছে৷ লন্ডনের টেমস নদীর সংস্কার তাঁরা করেছেন এবং এ কাজে তাঁদের অধিগত দক্ষতা এবং প্রকৌশল তাঁরা কলকাতার সঙ্গে ভাগ করে নিতে আগ্রহী৷ কলকাতা শহরের সৌন্দর্যায়ন নিয়েও ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও দক্ষতা কাজে আসবে৷ প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন বলেন, কলকাতা ঐতিহাসিকভাবে ব্রিটিশদের হৃদয়ের খুব কাছে থাকে৷ সেই ভালবাসা জানাবার জন্যেই সফরসূচি বদলে তাঁর এভাবে কলকাতা ঘুরে যাওয়া৷ যাওয়ার আগে মমতাকে লন্ডনে আসার আমন্ত্রণ জানাতেও ভোলেননি ক্যামেরন৷

রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে শালপাতার ঠোঙায় পুদিনা-ধনেপাতার চাটনি দিয়ে ডালবড়া খেলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীছবি: DW/ S. Bandopadhyay

কলকাতার ব্রিটিশ স্থাপত্যের সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ, হুগলি নদীর সংস্কার ও তার দুই পাড়ের সৌন্দর্যায়ন, নদীপথ পরিবহণ ব্যবস্থার পরিকাঠামোগত উন্নয়ন নিয়ে ব্রিটেনের সঙ্গে যৌথ সহযোগিতার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন মমতা৷ এ ছাড়াও কলকাতায় ইংরেজি শিক্ষার প্রসারে ব্রিটিশ প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ নিয়ে দুজনের কথা হয়৷ মমতা অনুরোধ করেন শহরে একটি ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস গড়ে তোলার জন্য৷ রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র এবং মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হাজির ছিলেন ডেপুটি হাই কমিশনের বৈঠকে৷ আর চেন্নাই হয়ে কলম্বো উড়ে যাওয়ার বিমান ধরতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী যখন দমদম বিমানবন্দরে, তাঁকে বিদায় জানাতে গিয়েছিলেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ