1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কলকাতা মেট্রো নিয়ে অনিশ্চয়তা

পায়েল সামন্ত কলকাতা
২ জুলাই ২০২০

কলকাতায় মেট্রো পরিষেবা চালু হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে৷ এ বিষয়ে রাজ্য ও কেন্দ্র একমত হতে পারছে না৷

কলকাতায় মেট্রো পরিষেবা চালু হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে
ছবি: DW/Bubhu

ভারতের প্রাচীনতম পাতাল রেল কলকাতায়৷ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে বন্ধ রয়েছে মেট্রো চলাচল৷ রাস্তায় বাসের সংখ্যা কম থাকার পাশাপাশি মেট্রো বন্ধ থাকায় মানুষকে ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে৷ তাই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের কাছে অনুরোধ করেছিলেন, জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের জন্য চালু করা হোক কিছু সংখ্যক মেট্রো৷ প্রাথমিকভাবে কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ রাজ্য সরকারের এই দাবিতে সম্মতি দিয়েছিল৷ তবে কলকাতা মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় এটাও বলেছিলেন, রেল, স্বাস্থ্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সম্মতি পেলেই চলবে ট্রেন৷ কিন্তু এই সম্ভাবনায় জল ঢেলে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের জারি করা আনলক-২ পর্বের নির্দেশিকা৷ তাতে বলা হয়েছে, ৩১ জুলাই পর্যন্ত মেট্রো চালানো যাবে না৷

কলকাতার লাইফলাইন বন্ধ থাকায় খুবই সমস্যা হচ্ছে মানুষের৷ রোজ চার লক্ষ মানুষ মেট্রোয় চড়ে না৷ দীর্ঘ রেলপথে রয়েছে ২৪টি স্টেশন৷ শুধু জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মী নন, আমজনতার পক্ষ থেকেও নিয়ন্ত্রিতভাবে পরিষেবা চালুর দাবি উঠছে৷

স্বপন বিশ্বাস

This browser does not support the audio element.

বেলগাছিয়া থেকে দক্ষিণ কলকাতার একটি হাসপাতালে নিয়মিত যেতে হয় স্বপন মজুমদারকে৷ প্রতি সপ্তাহে তিনবার ডায়ালিসিস নিতে হয় তাঁকে৷ মেট্রো বন্ধ থাকায় এখন বিপুল টাকা গাড়ি ভাড়া দিয়ে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে৷ তিনি বলেন, ‘‘এপ্রিল-মে মাসে প্রতিবার হাজার দুয়েক টাকা করে ভাড়া দিতে হয়েছে৷ জুনে বাস চালু হলেও তা আমার মতো রোগীর পক্ষে নিরাপদ নয়৷ এখন অ্যাপ ক্যাব চালু হওয়ায় খরচ কিছুটা কমলেও সেটা মেট্রোর থেকে অনেকটাই বেশি৷''

একই বক্তব্য চাকরিজীবীদের৷ উত্তর কলকাতার একটি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী দেবিকা বিশ্বাস কালীঘাট থেকে নিয়মিত শ্যামবাজার যান৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতাল থেকে প্রথমে গাড়ি দিচ্ছিলো৷ বাস চালু হতেই বন্ধ করে দিয়েছে৷ আমি বাসে উঠলে আমার থেকে অন্যদের সংক্রমণ ছড়াতে পারে না? আবার প্রতিদিন গাড়ি করে যাতায়াত করার সামর্থ্য আমার নেই৷''

নিয়ন্ত্রিত মেট্রো পরিষেবার পক্ষে চিকিৎসকদের একাংশ৷ সার্ভিস ডক্টরস্ ফোরাম-এর পক্ষে চিকিৎসক স্বপন বিশ্বাস বলেন, ‘‘আর্থিক কারণে এই পরিষেবা অনেক আগেই শুরু করা দরকার ছিল৷স্বাস্থ্যবিধি মেনে রেল চালাতে হবে৷ কোন ট্রেনে কতজন যাত্রী উঠবেন, সেটা ঠিক করে দিতে হবে৷ তাতে নজরদারি রাখতে হবে৷ এতে অসুস্থ, গরিব মানুষের সংকট লাঘব হবে৷ স্বাস্থ্যকর্মীরাও গন্তব্যে পৌঁছতে পারবেন সহজে৷'' কতটা দূরত্ব বজায় রাখা উচিত যাত্রীদের মধ্যে? প্রবীণ চিকিৎসক ও রাজ্য করোনা টাস্ক ফোর্সের সদস্য সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘তিন থেকে ছয় ফুট দূরত্ব রাখার কথা বলা হচ্ছে বটে, তবে হাঁচির ক্ষেত্রে এই দূরত্ব নিরাপদ নয়৷ একবার হাঁচলে ২০০ মিলিয়ন ভাইরাস বেরোয়৷ তাই ১২ ফুট দূরে থাকলে ভালো৷'' কিন্তু ট্রেনের মধ্যে এত দূরত্বে যাত্রীদের বসা বা দাঁড়ানো অসম্ভব৷

সমীর গোস্বামী

This browser does not support the audio element.

শুধু দূরত্ব বজায় রাখলেই হবে না, রয়েছে অন্য সমস্যাও৷ দমদম বা কবি সুভাষ, এই দুই প্রান্তিক স্টেশনে সব আসন ভরে গেলে মধ্যবর্তী স্টেশনগুলিতে অপেক্ষমাণ যাত্রীরা কী করবেন? কম ট্রেন চললে মাঝের স্টেশনে ট্রেনে ওঠার জন্য বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে৷ এমন নানা কারণে মেট্রো চালু করা বেশ কষ্টসাধ্য বলে মনে করেন রেলের প্রাক্তন মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সমীর গোস্বামী৷ তাঁর মতে, ‘‘ট্রেন চালু করলে ব্যাপক নজরদারি দরকার, যাতে অপ্রয়োজনে কেউ পরিষেবা ব্যবহার করে ভিড় বাড়াতে না পারেন৷ কিন্তু রেলের হাতে এত কর্মী নেই যে এতটা নিবিড় নজরদারি করা হবে৷''

 মেট্রো চালু হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও ইতিমধ্যে অনলাইনে স্মার্ট কার্ড রিচার্জ শুরু হয়েছে৷ করোনা পরিস্থিতিতে মেট্রোর ভূগর্ভস্থ গেট খোলার জন্য টোকেন ব্যবস্থার বদলে কার্ড ব্যবহারকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে৷ কিন্তু এ মাসে মেট্রো চলবে কিনা, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন৷ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ