1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কলম্বিয়ার লুপ্তপ্রায় বানর বাঁচাতে উদ্যোগ

১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বিশ্বের লুপ্তপ্রায় প্রাণীদের মধ্যে কলম্বিয়ার কটন-টপ ট্যামারিন বানর অন্যতম৷ তাদের অস্তিত্ব নিশ্চিত করতে এক অভিনব বহুমুখী প্রকল্প চলছে৷ স্থানীয় মানুষের উপার্জনের ব্যবস্থা করে রেন ফরেস্ট বাঁচানোর প্রচেষ্টাও তার অঙ্গ৷

19.11.2015 global 3000 BioKolumbien neu
ছবি: DW

বর্তমানে মাত্র সাত হাজারের মতো কটন-টপ ট্যামারিন মুক্ত প্রকৃতিতে বসবাস করে৷ অসংখ্য জঙ্গল ও ডোবা পেরিয়ে তবেই মুক্ত প্রকৃতিতে কটন-টপ ট্যামারিন-দের দেখা মেলে৷ খুবই লাজুক প্রকৃতির এই প্রাণীর আকার বিড়ালের মতো, ওজন আধ কিলোরও কম৷ গাছের মাথায় তারা থাকে৷ টিটি প্রকল্প ফাউন্ডেশনের প্রধান রোসামিরা গিয়েন বলেন, ‘‘আমার কাছে কটন-টপ ট্যামারিন বানরের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে৷ তাদের নিয়ে কাজ করতে খুব ভালো লাগে৷ তারা সত্যি সুন্দর এক প্রজাতি৷ ফলে তাদের সংরক্ষণের স্বার্থে আমরা বেশি আগ্রহ জাগাতে পারি৷''

এই প্রজাতি বিশ্বের সবচেয়ে লুপ্তপ্রায় প্রাণীদের অন্যতম৷ রোসামিরা বলেন, ‘‘কটন-টপ ট্যামারিন একমাত্র কলম্বিয়ায় পাওয়া যায়৷ শুধু ক্যারিবীয় এলাকার একটি অংশে তাদের দেখা মেলে৷ যাট ও সত্তরের দশকে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায়, বিশেষ করে আন্ত্রিক ক্যানসার সম্পর্কে গবেষণায় তাদের বিশাল সংখ্যায় ব্যবহার করা হতো৷ সে সময় এই প্রজাতির ২০ থেকে ৩০ হাজার প্রাণীকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা হয়৷''

রোসামিরা গিয়েন এক সময়ে চিড়িয়াখানার অধিকর্তা ছিলেন৷ তারপর চাকুরি জীবন ছেড়ে তিনি এই প্রজাতির সংরক্ষণে সহায়তা করছেন এবং সেই লক্ষ্যে একটি প্রকল্প চালাচ্ছেন৷ প্রকল্পের সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক হলো বিশ্ববিখ্যাত মিডিয়া কোম্পানি ডিজনি৷ রোসামিরা বলেন, ‘‘কটন-টপ ট্যামারিনদের নিয়ে গবেষণা ও তাদের সুরক্ষাই আমাদের মূল লক্ষ্য৷ তবে বানরগুলিকে বাঁচাতে এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো রেন ফরেস্ট সংরক্ষণ৷''

কলম্বিয়ার উত্তরের এই রেন ফরেস্ট আসলে অনেকগুলি বিচ্ছিন্ন জঙ্গল এলাকার সমষ্টি৷ এই অঞ্চলে ব্যাপক হারে গাছ কাটা হয়েছে৷ এই এনজিও করিডোর তৈরি করে বিচ্ছিন্ন জঙ্গলগুলিকে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করতে চায়৷ তাদের নিজস্ব পুনর্বনায়ন কেন্দ্র রয়েছে৷ সেখানে নানা ধরনের ছোট-বড় গাছ চাষ করা হয়৷ তবে শুধু নতুন করে অরণ্য সৃষ্টি করে কটন-টপ ট্যামারিনদের বাঁচানো সম্ভব নয়৷

এই প্রকল্প স্থানীয় গ্রামের মানুষের সঙ্গেও কাজ করে৷ আগে সেখানকার মানুষ এই বানরদের শিকার করে বিক্রি করতো৷ এনজিও-র টিম স্থানীয় মানুষদের জন্য আয়ের নতুন উৎস সৃষ্টি করতে সাহায্য করেছে৷ গ্রামের নারীরা এক হস্তশিল্প গোষ্ঠী গড়ে তুলেছেন৷ ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক ব্যাগ দিয়ে তাঁরা রঙিন হ্যান্ডব্যাগ তৈরি করছেন৷ নারীদের হস্তশিল্প গোষ্ঠীর আনা ইসাবেল আরোইয়ো বলেন, ‘‘আমরা এমন স্টাফড খেলনাও তৈরি করি৷ আমাদের বার্তা হলো, নকল প্রাণী কিনুন, তবে আসলগুলি নয়৷ এই প্রক্রিয়ায় বৃহত্তর সমাজের উপকার হয় এবং কটন-টপ ট্যামারিন বানরের অস্তিত্ব নিশ্চিত করা যায়৷''

বিক্রির অর্থ এই প্রকল্পের কাজে এবং নারী শ্রমিকদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়৷ প্রায় ১৬ বছর ধরে এই এনজিও মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে৷ কটন-টপ ট্যামারিনদের সংরক্ষণের বার্তাসহ নতুন সাইনবোর্ড গোটা গ্রামে শোভা পাচ্ছে৷ এমনকি স্থানীয় স্কুলের পাঠক্রমেও এই বানররা স্থান পেয়েছে৷

স্কুলপড়ুয়ারা একটি খেলায় সেই প্রাণীদের চরিত্রে অভিনয় করে৷ প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নিজের গাছ, অর্থাৎ, চেয়ার বাঁচাতে লড়াই করতে হয়৷ বাস্তব জগতে গাছের অভাব বোঝাতে খেলার মধ্যে যথেষ্ট সংখ্যক চেয়ার রাখা হয় না৷ তারা প্রশ্ন তোলে, জঙ্গলের প্রাণীদের কী হবে? তারা মারা যাবে৷ তাদের কোনো খাদ্য, বাসস্থান, গাছ নেই৷

পরবর্তী প্রজন্মের জন্য শিক্ষা, ভবিষ্যতে বনায়ন এবং নতুন ধরনের পেশা৷ এই প্রকল্প তার লক্ষ্য পূরণ করতে একাধিক ক্ষেত্রে সক্রিয় রয়েছে৷ রোসামিরা গিয়েন বলেন, ‘‘যদি মানুষের স্থায়ী আয় না থাকে এবং এই প্রজাতি সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা না থাকে, তাহলে কিছুই হবে না৷ অন্যদিকে মানুষের হাতে তথ্য থাকলেও জঙ্গল সংরক্ষণ সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা না থাকলেও চলবে না৷ আমাদের লক্ষ্য পূরণে স্বপ্ন সহায়ক হবে বলে আমরা আশা করি৷ কটন-টপ ট্যামারিনদের বিলুপ্তির হুমকি থেকে বাঁচাতে চাই৷''

কাটিয়া ড্যোনে/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ