1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কলসেন্টার বানিজ্যে বাংলাদেশ

আরাফাতুল ইসলাম১ সেপ্টেম্বর ২০০৮

তথ্য প্রযুক্তি খাতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এক লোভনীয় ব্যবসা এটি৷ বাংলাদেশের পাশের দেশ ভারত বেশ কয়েক বছর আগেই শুরু করে কল সেন্টার বানিজ্য৷ বর্তমানে ভারতে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের এক অন্যতম উত্‌স হয়ে উঠেছে কল সেন্টার৷

কলসেন্টার, ভারতে বেঙ্গালুরুতেছবি: dpa

কি এই কল সেন্টার? কিভাবেই বা কাজ করে এটি? জানতে চেয়েছিলাম আমার নেটওয়ার্কস এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল টি আহমেদের কাছে৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, উন্নত বিশ্বে আসলে বিভিন্ন ধরণের সার্ভিসের জন্য কল সেন্টারের প্রয়োজন হয়৷ যেমন, পুলিশ সার্ভিস, এভিয়েশন সার্ভিস বা কুরিয়ার সার্ভিস৷ এইসব সার্ভিসের জন্য ২৪ ঘন্টা কাউকে না কাউকে ফোনের উত্তর দেবার জন্য অপেক্ষা করতে হয়৷ উন্নত বিশ্বে এই কাজের জন্য জনশক্তি বেশ ব্যয়বহুল৷ ফলে এখন বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই ধরনের ফোন-নির্ভর সেবা নিতে চাচ্ছে৷ যে কারণে এই কলসেন্টার কনসেপ্টটা বাংলাদেশেও এসেছে৷

বাংলাদেশের প্রযুক্তি নির্ভর তরুণ জনশক্তিছবি: DW

তবে বাংলাদেশে কলসেন্টার ব্যবসা করতে গেলে বেশ কিছু নিয়ম কানুনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে আগ্রহী ব্যবসায়ীদের৷ ইতিমধ্যে এসব নিয়ম কানুন নিয়ে খানিকটা বিতর্কেরও সৃষ্টি হয়েছে৷ বিশেষ করে কল সেন্টার ব্যবসা করতে গেলে নাকি ইন্টারনেট আইপি'র বদলে বিশিষায়িত ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিজড সার্কিট বা আইপিএলসি গেটওয়ে ব্যবহার করতে হবে৷ ব্যবসায়ীদের দাবি, এই গেটওয়ে ব্যবহার করলে তা ইন্টারনেট আইপির চেয়ে ব্যয়বহুল হবে৷ ফলে অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামাটা দূরুহ হয়ে পড়বে৷ এই প্রসঙ্গে রাসেল টি আহমেদ জানান, ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা কলসেন্টার করতে পারবে না৷ তাদের আইপিএলসি লাগবে, যা ইন্টারনেট আইপির তুলনায় খুবই ব্যয়বহুল৷ সুতরাং এতো ব্যয়বহুল সিস্টেম ব্যবহার করে আমরা ভিয়েতনাম বা ফিলিপেনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় যেতে পারবো না৷

কল সেন্টার ব্যবসা করার জন্য ইতিমধ্যে ৩১০টি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে৷ এসব প্রতিষ্ঠান কলসেন্টার ব্যবসা করার ক্ষেত্রে সরকারের কাছ থেকে ট্যাক্সসহ বিভিন্ন খাতে বিশেষ সুবিধা পাবে৷ তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, ঠিক কিসের ভিত্তিতে এসব প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে তা এখনো পরিষ্কার নয়৷ বিশেষ করে, এসব প্রতিষ্ঠান কল সেন্টার খাতে বিনিয়োগের জন্য কতটা যোগ্য তা নাকি ঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি৷ এই প্রসঙ্গে রাসেল টি আহমেদ জানান, আমি মনে করি লাইসেন্স আমরা দিয়েছি, সেটা ঠিকই আছে৷ কিন্তু কে কি করছে সেটা যদি নিয়ন্ত্রণের কোন ব্যবস্থা থাকে তাহলে খুব ভালো হয়৷

ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ুয়া তরুণরা হবে কলসেন্টার কর্মীছবি: DW

কলসেন্টার এর জন্য মুলত প্রয়োজন পড়বে ইংরেজি জানা তরুণ জনশক্তি৷ এধরনের জনশক্তি ভারতে এখন বেশ সহজলভ্য৷ ভারতের কল সেন্টার ব্যবসায়ীদের দাবিও অনেকটা সেরকমই৷ এই প্রসঙ্গে কলকাতার তথ্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান লিংকটেক্স এর কল সেন্টার কর্মী ইন্দ্রজিত স্টিফেন ব্যানার্জি জানান, ভারতে কলসেন্টারে সফলতা পাওয়ার একটাই কারণ, সেটা হচ্ছে ভারতীয়রা ইংরেজি খুব ভালো বলতে পারে৷

বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম নাকি এখন ইংরেজিতে বেশ পারদর্শী৷ ফলে কলসেন্টার ব্যবসার ক্ষেত্রে লোকবল তেমন একটা সমস্যা নয় বলেই মনে করছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা৷

কলসেন্টার এমন একটি সেবা যা ২৪ ঘন্টাই উম্মুক্ত রাখতে হয়৷ ফলে কলসেন্টার ব্যবসা করতে গেলে যেকোন দেশের অবকাঠামো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন৷ বর্তমানে বাংলাদেশের ইন্টারনেট অবকাঠামো উন্নত হলেও তার স্থায়িত্ব নিয়ে বেশ সমস্যা রয়েছে৷ বিশেষ করে একটি মাত্র সাবমেরিন কেবেল-এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় মাঝে মাঝেই ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বাংলাদেশ৷ কল সেন্টার ব্যবসার ক্ষেত্রে এটি একটি বড় প্রতিবন্ধকতা৷ এছাড়া বাংলাদেশে ২৪ ঘন্টা বিদ্যুত সেবা পাওয়াও এখন বেশ দূরূহ ব্যাপার৷ তবে এতোকিছুর মধ্যেও কলসেন্টার ব্যবসা সফল হবে বলেই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা৷ এর অন্যতম কারন নাকি কম খরচের তরুণ জনশক্তি৷

বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) মনজুরুল আলম মনে করেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে বাংলাদেশে পুরোদমে জমে উঠবে কল সেন্টার বানিজ্যছবি: DW

অবশ্য ভারতে কল সেন্টার কর্মী দিনে দিনে ব্যয়বহুল হয়ে পড়লেও তা নাকি তেমন একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে না আন্তর্জাতিক অঙ্গনে৷ কলসেন্টার কর্মী ইন্দ্রজিত স্টিফেন ব্যানার্জি অন্তত তাই মনে করছেন৷

বাংলাদেশের কলসেন্টার ব্যবসার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বা বিটিআরসি৷ উক্ত প্রতিষ্ঠানের দাবি বাংলাদেশে পুরোমাত্রায় কলসেন্টার ব্যবসা শুরু হতে নাকি আরো দুই বছরের মতো সময় লাগবে৷ আর এই সময়ের মধ্যে সাবমেরিন কেবেলসহ অন্যান্য অবকাঠামোর উন্নয়ন করবে সরকার৷ এসব বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলেছি বিটিআরসি'র চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) মনজুরুল আলম এর সঙ্গে৷ এই পাতার একটু নিচে ক্লিক করেই শুনতে পারবেন তার সাক্ষাত্‌কারটি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ