1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কলেরা জীবাণুকে নিষ্ক্রিয় করা

মার্টিন রিবে/এসি২৬ জানুয়ারি ২০১৫

কলেরা জীবাণু, অথচ তা থেকে রোগ হয় না, কেননা তাদের রোগাক্রান্ত করার ক্ষমতা নেই৷ জার্মানির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এমন একটি ওষুধ তৈরি করার চেষ্টা করছেন, যা কলেরা জীবাণুর ‘ভিরুলেন্স'-কে বেঁধে রাখবে৷

Bakterien Erreger der Cholera
ছবি: picture-alliance/Dr.Gary Gaugler/OKAPIA

বিশ্বের বহু দেশে কলেরা এক সুপ্রাচীন ব্যাধি৷ অপরিশুদ্ধ পানি থেকেই সাধারণত এই রোগ ছড়ায়৷ বোখুম-এর রুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ফ্রানৎস নার্বেরহাউস ও তাঁর সতীর্থরা আবিষ্কার করেছেন যে, এই ডায়রিয়া অর্থাৎ পেট নামার রোগের জীবাণুগুলি তাদের মানব শিকারকে চেনে তার শরীরের তাপমাত্রা থেকে৷ ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছলে, তবেই কলেরা জীবাণুর প্রকোপ বা বিষময়তা সক্রিয় হয়৷ অধ্যাপক নার্বেরহাউস বলেন:

‘‘পারিপার্শ্বিকের তাপমাত্রা ২০/২৫ ডিগ্রি হলে, রোগাক্রান্ত করার জিনগুলো সক্রিয় হয় না৷ কিন্তু জীবাণু মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে, সেগুলি সক্রিয় হয় – অর্থাৎ জীবাণুগুলি যখন আমাদের পাকস্থলীতে ৩৭ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পৌঁছায়, তখন সব ক'টি ভিরুলেন্স বা বিষময়তার জিন সক্রিয় হয়৷''

কলেরা রোগ ছড়ায় দূষিত পানি থেকেছবি: ALEXANDER JOE/AFP/Getty Images

তাপমাত্রা দ্বারা নিয়ন্ত্রণের প্রথম হদিশ পান গবেষকরা, যখন তাঁরা একটি রঙ ব্যবহার করে সক্রিয় জিন সিকোয়েন্সগুলি চিহ্নিত করেন৷ ৩৭ ডিগ্রিতে বিষময়তার জিনগুলি সক্রিয় হয়ে উঠলে, জীবাণুগুলি অতিবেগুনি রশ্মিতে আলোক বিচ্ছুরণ করে – কিন্তু ২০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় নয়; কেননা তখন জিনগুলি নিষ্ক্রিয়ই থাকে৷ সক্রিয়তা অথবা নিষ্ক্রিয়তার কারণ হল জীবাণুটির আরএনএ বা রাইবো নিউক্লেয়িক অ্যাসিড-গত কাঠামো৷ আরএনএ ‘খোলা' থাকলে, জীবাণু থেকে রোগ ছড়ায়; আরএনএ ‘জোড়া' থাকলে, কোনো কিছু ঘটে না৷ আরএনএ খোলা না জোড়া, এক্সপেরিমেন্ট করার সময় সেটা দেখার জন্য বিজ্ঞানীরা এক ধরনের এনজাইম ব্যবহার করেন, যা শুধুমাত্র ‘খোলা' আরএনএ-কে কেটে ছোট ছোট অংশে ভাগ করতে পারে৷

আরএনএ হলো ডিএনএ-র নকল৷ জীবাণুর অভ্যন্তরে প্রোটিন তৈরি হয় এই আরএনএ অনুসারে৷ ছোট ছোট প্রোটিন তৈরির ‘কারখানা' আরএনএ-র চারপাশে জমায়েত হয়ে, আরএনএ-তে রাখা তথ্য সংগ্রহ করে এবং সেই অনুযায়ী প্রোটিন তৈরি করে৷ ২০ ডিগ্রি তাপমাত্রার ঠান্ডা পানিতে যখন কলেরা জীবাণু ঘুরে বেড়ায়, তখন তাদের আরএনএ ‘জোড়া'-ই থাকে৷ আরএনএ-র ঠিক যে স্থানটি থেকে বিষময় প্রোটিন তৈরির তথ্য সংগৃহীত হয়, সেখানটা ভাঁজ হয়ে থাকার ফলে, প্রোটিন তৈরির কারখানাগুলি তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য পায় না৷

জীবাণু মানুষের পেটে গেলে, তার পারিপার্শ্বিকের তাপমাত্রা বেড়ে ৩৭ ডিগ্রিতে দাঁড়ায়৷ তখন আরএনএ-র ভাঁজ খুলে যায় – সঠিক স্থান থেকে বিষময় প্রোটিন তৈরির তথ্য সংগৃহীত হয়৷ বিষময় প্রোটিনগুলি তৈরি হয় এবং মানুষ কলেরা রোগে আক্রান্ত হয়৷ জীবজন্তুর উপর পরীক্ষায় গবেষকরা ইতিমধ্যেই কলেরার আরএনএ এমনভাবে বদলাতে পেরেছেন যে, তাপমাত্রা বাড়লেও আরএনএ-র ‘ভাঁজ'-টা খোলে না৷ অর্থাৎ কলেরা সংক্রমণ সত্ত্বেও জীবজন্তুগুলি সুস্থই থেকেছে৷ মানুষের উপযোগী এ ধরনের ওষুধ তৈরি করতে আরো কয়েক বছর সময় লেগে যাবে৷ এমন একটি পদার্থ খুঁজে বার করতে হবে, যা কলেরা-আরএনএ-র সঙ্গে এমনভাবে লেগে থাকবে যে, শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেও আরএনএ-র ভাঁজ খুলবে না৷ এ ধরনের ওষুধ কলেরা প্রতিষেধক হিসেবে পানীয় জলেও মেশানো চলতে পারে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ