সার্বিয়া-কসোভো সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছে বলে অভিযোগ। ন্যাটো ৬০০ সেনা পাঠাচ্ছে।
কসোভোয় উত্তেজনাছবি: Erkin Keci/AA/picture alliance
বিজ্ঞাপন
কসোভোয় সম্প্রতি পুলিশ স্টেশনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। তারপরেই ন্যাটো আরো ৬০০ সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উল্লেখ্য, মাসকয়েক আগে পুরনির্বাচনকে কেন্দ্র করেও প্রবলউত্তেজনা দেখা গেছিল কসোভোয়। ন্যাটোর সেনার উপর হামলা হয়েছিল। সে সময়েও বেশ কিছু রিজার্ভ ফোর্স কসোভোয় পাঠিয়েছিল ন্যাটো। এবার আরো সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
নির্বাচনের সময়ে উত্তেজনা দেখা গেছিল সার্বিয়ান অধ্যুষিত কসোভোর বেশ কিছু অঞ্চলে। সাম্প্রতিক গন্ডগোলও হচ্ছে সার্বিয়ান অঞ্চলে। অভিযোগ, কসোভো-সার্বিয়া সীমান্তে সার্বিয়া সেনা মোতায়েন করেছে। সে কারণেই উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে।
১৯৯৯ সালে কসোভোর আলবেনিয়ান জনগোষ্ঠীর উপর আক্রমণ চালিয়েছিল সার্বিয়ার প্রশাসন। এরপর ২০০৮ সালে সার্বিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করে কসোভো। যদিও সার্বিয়া তা মেনে নেয়নি।
ছবি: Bojan Slavkovic/AP/picture alliance
গাড়ির নম্বর-প্লেট
সার্বিয়া-কসোভো সীমান্তে উত্তেজনা লেগেই থাকে। কসোভো থেকে কোনো গাড়ি সার্বিয়ায় ঢুকলে সার্বিয়া কসোভোর নম্বর-প্লেটকে মান্যতা দেয় না। সীমান্তে নতুন নম্বর প্লেট লাগাতে হয় কসোভোর গাড়িতে। যা নিয়ে একাধিকবার আপত্তি তুলেছে কসোভো।
ছবি: Office/ Kosovo Government
কসোভোর উত্তর
সম্প্রতি কসোভো নিয়ম চালু করেছে যে, সার্বিয়ার গাড়ি কসোভোয় ঢুকলে পাঁচ ইউরো খরচ করে নতুন নম্বর-প্লেট কিনতে হবে। এতেই কসোভোর সীমান্তে বসবাসকারী সার্বিয়ার জনগোষ্ঠীর মানুষ আপত্তি তুলেছে। তারা রাস্তা অবরোধও করেছে।
ছবি: Laura Hasani/REUTERS
কসোভোর বাহিনী
সার্বিয়ার জনগোষ্ঠীর মানুষের আন্দোলন থামাতে সীমান্ত অঞ্চলে সেনা পাঠিয়ে দেয় কসোভো। আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেয় তারা।
ছবি: Bojan Slavkovic/AP/picture alliance
সার্বিয়ার জবাব
এরই জবাবে সীমান্তে ট্যাঙ্ক এবং যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে দেয় সার্বিয়া। সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, সার্বিয়া শান্তি চায় কিন্তু কসোভো সার্বিয়াকে অপমান করলে তার জবাব দেওয়া হবে।
ছবি: Laura Hasani/REUTERS
ন্যাটোর হস্তক্ষেপ
কসোভোয় চার হাজার ন্যাটোর সেনা থাকে। ১৯৯৯ সাল থেকে ন্যাটোর সেনা সেখানে অবস্থান করছে। লড়াই বন্ধ করতেই তারা সেখানে আছে। সার্বিয়া সীমান্তে সেনা মোতায়েন করার পরে ন্যাটো হস্তক্ষেপ করেছে। দুই দেশকেই শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ করা হয়েছে।
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Gambarini
অ্যামেরিকা এবং ক্যানাডা
সার্বিয়ায় মার্কিন এবং ক্যানাডার দূতাবাস থেকে সামরিক কূটনীতিকরা কসোভো সীমান্ত ঘুরে এসেছেন। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতেই তারা সেখানে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন।
ছবি: Irfan Licina/AFP
রাশিয়ার অবস্থান
সার্বিয়ার মতো রাশিয়াও কসোভোকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে মানে না। সাম্প্রতিক উত্তেজনার পরে সার্বিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে রাশিয়া।
ছবি: Irfan Licina/AFP
আলবেনিয়ার অবস্থান
আলবেনিয়া কসোভোকে সমর্থন করছে। সার্বিয়া যেভাবে সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছে, তার সমালোচনা করেছেন আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী।
ছবি: Bojan Slavkovic/AP/picture alliance
9 ছবি1 | 9
সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চলছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন তিনি। তবে সার্বিয়া-কসোভো সীমান্তে যে উত্তেজনা আছে, প্রত্যক্ষদর্শীরা সকলেই তা বলছেন। বস্তুত, সার্বিয়া এখনো কসোভোকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে মেনে নেয় না।
এদিকে যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, ন্যাটো তাদের কাছে সেনা চেয়েছিল। তারা প্রিন্সেস অফ ওয়েলসের রয়্যাল ব্যাটেলিয়ন থেকে ২০০ সেনা সার্বিয়ায় পাচ্ছে। এর আগেও তারা কেফরকে (ন্যাটো বাহিনী) সাহায্য করতে বেশ কিছু সেনা সেখানে পাঠিয়েছিল।
সম্প্রতি সার্বিয়ান অধ্যুষিত অঞ্চলে একটি পুলিশ স্টেশনে হামলা হয়। সেখানে কসোভোর এক পুলিশ অফিসার মারা যান। তিনজন সশস্ত্র সার্বিয়ান সন্ত্রাসীরও মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার পর থেকেই উত্তেজনা অনেকটা বেড়ে গেছে।
মাত্র ১৫ বছর আগে ২০০৮ সালে কসোভো স্বাধীন দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর তাদের এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়। আগে তারা সার্বিয়ার অংশ ছিল। কিন্তু সার্বিয়া কখনোই কসোভোকে আলাদা দেশের স্বীকৃতি দেয়নি।