1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কাঁচামালের উৎস সম্পর্কে আরও সচেতনতার দাবি বাড়ছে

২৮ অক্টোবর ২০১১

প্রাকৃতিক সম্পদ মানেই কাঁচামাল৷ যেভাবেই হোক তা চাই৷ আজকের বিশ্বে এমন সর্বনাশা চাহিদার ফলে পরিবেশের ক্ষতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন, সশস্ত্র সংঘাত দেখা যাচ্ছে৷ দাবি উঠছে নিয়ন্ত্রণের৷

***Achtung: Nur zur mit BICC abgesprochenen Berichterstattung verwenden!*** Goldwäscherinnen in Cote d'Ivoire. Faire Standards würde ihnen auch faire Arbeitsbedingungen sichern *** Washing for gold in cote d ivoire, Foto Lena Guesnet, BICC, 2011
আফ্রিকার দেশ আইভরি কোস্টে সোনা ছাঁকার কাজ চলছেছবি: Lena Guesnet, BICC

বেড়ে চলা চাহিদা

গোটা বিশ্বে প্রাকৃতিক সম্পদের চাহিদা হু হু করে বেড়ে চলেছে৷ সেইসঙ্গে বেড়ে চলেছে দামও৷ খনিজ সম্পদ আহরণের ফলে ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের, বেঘর হয়ে যাচ্ছে গোটা জনপদ, সংঘাত ও শোষণের ঘটনাও বেড়ে চলেছে৷ প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের ক্ষেত্রে তাই কড়া মানদণ্ড চালু করার জন্য চাপ বাড়ছে৷ শুধু মানদণ্ড নয়, তা মানা হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্যও নজরদারি ব্যবস্থা দরকার৷

আসলে প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ কিছু কাঁচামালের চাহিদার অভূতপূর্ব মাত্রা দেখা যাচ্ছে৷ রিচার্জেবল ব্যাটারির জন্য চাই লিথিয়াম, মোবাইল ফোন তৈরির জন্য চাই সোনা ও কোল্টান, সৌর বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য চাই টেলারিয়াম ও ইন্ডিয়াম৷ এই তালিকা বেশ দীর্ঘ৷ জার্মানির মতো দেশ উন্নয়নশীল বিশ্ব থেকেই প্রায় সব কাঁচামাল আমদানি করে থাকে৷ তবে জার্মানি তো একা নয় – সবারই চাই সেই সব দুর্লভ কাঁচামাল৷ অতএব তুমুল প্রতিযোগিতা৷ এমনকি এসব কাঁচামালের দাম হু হু বেড়ে যাওয়া সত্ত্বেও কোনো পরোয়া নেই৷ জার্মান সংস্থাগুলির দুশ্চিন্তা, ঠিক সময় কাঁচামালের সরবরাহ হবে তো?

হীরার খোঁজে শ্রমিকছবি: Jolien Schure, BICC

যোগান প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব

কাঁচামালের দাম বাড়া নিয়ে তর্ক-বিতর্কের অভাব নেই, কিন্তু এই চাহিদা ও যোগান প্রক্রিয়ার আসল পরিণাম নিয়ে তেমন আলোচনা হয় না৷ পরিবেশ দূষণ, মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে শুরু করে অনেক নেতিবাচক বিষয় জড়িয়ে গেছে গোটা প্রক্রিয়ার সঙ্গে৷ কাঁচামাল বেচে যে অর্থ উপার্জন হয়, তারও একটা বড় অংশ চলে যায় দুর্নীতিবাজ রাজনীতিকদের পকেটে৷ অথবা তা কাজে লাগানো হয় কোন সশস্ত্র সংগ্রাম চালাতে৷ কাঁচামালের উৎস থেকে শুরু করে ক্রেতার হাতে পৌঁছানোর দীর্ঘ প্রক্রিয়ার প্রায় প্রতিটি স্তরেই এমন অনেক অনিয়ম দেখা যায়৷ তাই জার্মানির বেশ কিছু এনজিও একযোগে সুনির্দিষ্ট মানদণ্ড চালু করার জন্য চাপ দিচ্ছে৷ শুধু রাষ্ট্রের উপর চাপ নয়, ভোক্তাদেরও এবিষয়ে আরও সচেতন করতে চায় তারা৷ এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত ফ্রিডেল হ্যুৎস আডামস৷ তিনি জানালেন, ‘‘এই মুহূর্তে সমস্যা হলো, জার্মানি তথা ইউরোপের মানুষ খবরই রাখে না যে কাঁচামাল কোথা থেকে আসছে৷ এমনকি যেসব কোম্পানি সেই সব কাঁচামাল কাজে লাগায়, তারাও প্রায়ই সেই কাঁচামালের উৎস সম্পর্কে কিছু জানে না৷ সচেতনতার এই অভাবের ফলে যেসব এলাকায় প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ করা হচ্ছে, সেখানকার প্রকৃতি, পরিবেশ ও মানুষের স্বার্থের পরোয়া করা হয় না৷ কেউ প্রশ্ন না তুললে যা হয় আর কি!''

দায়-দায়িত্ব নিয়ে বিভ্রান্তি

আডামস ও তাঁর সহযোগীরা তিনটি মহাদেশের বেশ কিছু খনি অঞ্চলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন৷ সব জায়গায়ই তারা কঠিন সমস্যা দেখতে পেয়েছেন৷ কিন্তু প্রশ্ন হলো, কাঁচামালকে ঘিরে অনিয়মের দায়-দায়িত্ব আসলে কার? রাষ্ট্র, সরকার, বেসরকারি সংস্থা নাকি ভোক্তাদের? আডামস মনে করেন, একটি মোবাইল ফোনের মধ্যে অতি সামান্য পরিমাণ সোনা ও ট্যান্টালাম থাকে৷ ক্রেতার পক্ষে এখন সেই কাঁচামাল সরবরাহের দীর্ঘ প্রক্রিয়ার তদন্ত করা অসম্ভব এবং সেটা একেবারেই অবাস্তব৷ অতএব নির্মাতাদেরই স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসংক্রান্ত একটি আইনের ফলে ইতিমধ্যেই সুফল পাওয়া যাচ্ছে৷ এই আইন অনুযায়ী অ্যামেরিকার শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত সব মার্কিন ও বিদেশি কোম্পানিগুলিকে তাদের কাঁচামালের উৎস প্রকাশ করতে হবে৷ তারা কীভাবে সেই কাঁচামাল কিনছে, তাও স্পষ্টভাবে জানাতে হবে৷ এর ফলে নির্মাতাদের উপর চাপ বাড়ছে৷ আডামস জানালেন, ‘‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি সত্যি এই আইন ঠিকমতো প্রয়োগ করার সদিচ্ছা দেখায়, তখন জার্মান কোম্পানিগুলিকেও তাদের কাঁচামাল সরবরাহের গোটা প্রক্রিয়া আরও নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে৷ তারা অবশ্য আপাতত সেই পথে যেতেই চাইছে না৷ অ্যামেরিকায় কিছু করতে না পারলেও জার্মানিতে এমন আইনের পথ বন্ধ করতে তারা বার্লিনে জোরালো প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে৷''

বিশ্বায়ন ও বাজার অর্থনীতির এই যুগে কাঁচামালের জটিল সরবরাহ প্রক্রিয়া সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া সত্যি বেশ কঠিন৷ মধ্য আফ্রিকার দেশগুলিতে এমন সাপ্লাই চেন'এর বৈধ পথ মেনে চলা হচ্ছে কি না, জার্মানি ইতিমধ্যেই সেবিষয়ে এক সার্টিফিকেট প্রক্রিয়া চালু করেছে৷ এমন আরও অনেক উদ্যোগেরও সুফল পাওয়া যাচ্ছে৷ এখন মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে গোটা বিশ্বে এক্ষেত্রে একক নিয়ম চালু করা৷

প্রতিবেদন: মাটিল্ডা ইয়র্ডানভা-ডুডা / সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ