1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কাকদ্বীপে শিক্ষককে মার, নদিয়ায় যুবক খুন, অভিযুক্ত তৃণমূল

১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কাকদ্বীপে শিক্ষককে পেটালো তৃণমূল নেতা। পুলিশ জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করায় সেই নেতা দ্রুত জামিনে মুক্ত। নদিয়ায় বিজেপি কর্মী খুন। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকেই৷

মেদিনীপুরে মোতায়েন করা পুলিশ।
কাকদ্বীপ ও নদিয়ার ঘটনা নিয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ছবি: Subrata Goswami/DW

কাকদ্বীপের বীরেন্দ্র বিদ্যানিকেতনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মিলনকান্তি পালকে স্কুলের ভিতর ঢুকে পড়ুয়াদের সামনে মারলো পঞ্চায়েত সদস্য, স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি ও তৃণমূল নেতা ত্রিদিব বারুই।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ঘাড়ধাক্কা দেওয়া হয়, বুকে ও পেটে ঘুসি মারা হয়। স্কুলের করিডোর দিয়ে শিক্ষককে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয়। পুরো ঘটনা ধরা পড়ে সিসিটিভি ক্যামেরায়।

গ্রেপ্তার ও জামিন

এই ঘটনার পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পুলিশের কাছে এফআইআর করেন। প্রবল জনরোষের মুখে পুলিশ অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু পাঁচটি ধারায় মামলা করা হলেও সবই জামিন-যোগ্য, ফলে সহজেই জামিন পেয়ে শিক্ষার্থীদের সামনেই শিক্ষককে পেটানো তৃণমূল নেতা।

বুধবার সন্ধ্যায় অভিযুক্ত ত্রিদিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায়সংহিতার ১২৬ (২) ধারায় (জোর করে আটকে রাখা), ১১৫ (২) (মারধর), ১১৭ (২) (গুরুতর আঘাত), ৩৫১ (২) (ভয় দেখানো) এবং ৩ (৫) (ষড়যন্ত্র) ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে ত্রিদিবকে কাকদ্বীপ মহাকুমা আদালতে তোলা হলে তিনি জামিন পেয়ে যান। এরপরই অভিযোগ ওঠে, পুলিশ গুরুতর ধারা দেয়নি বলে তিনি সহজেই জামিন পেয়েছেন।

নিগৃহীত শিক্ষক বলেন, ‘‘এটা খুবই হতাশাব্যাঞ্জক। এত তাড়াতাড়ি ত্রিদিব জামিন পাবেন ভাবিনি। আমার মনে হয়, পুলিশ লঘু ধারায় মামলা দেওয়াতেই তিনি জামিন পেয়ে গিয়েছেন। এরপরেও উনি যদি বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি থাকেন, তাহলে আমার আশঙ্কা, আবার আমার উপর একইরকমভাবে হামলা হতে পারে।''

তিনি বলেছেন, ''যেভাবে জোরে ঠেলেছেন, আমি উচ্চ রক্তচাপের রোগী, আমি তো মারাই যেতে পারতাম। এই জামিন অদৃষ্টের অন্ধ পরিহাস।''

তৃণমূল নেতার আইনজীবী প্রদীপ নায়েক বলেছেন, ''জামিনযোগ্য ধারা ছিল। তাই আদালত জামিন মঞ্জুর করেছে।''

কী বলছেন সাবেক পুলিশ কর্তারা?

রাজ্য পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত এজিডি নজরুল ইসলাম বলেছেন, ''একজন সরকারি কর্মীকে তার ডিউটিতে বাধা দেওয়া অবশ্যই জামিন অযোগ্য অপরাধ। ১৩২ নম্বর ধারায় স্পষ্ট বলা আছে এটা জামিন অযোগ্য অপরাধ। এই ধারা দেওয়া হলে জামিন না-ও হতে পারতো।''

সাবেক পুলিশ কর্তা সলিল ভট্টাচার্য মনে করেন, ''ওই শিক্ষক বয়স্ক মানুষ। অনেক অসুস্থতা আছে। তাই এটাকে হত্যার চেষ্টা বলতে হবে।''

কিন্তু কাকদ্বীপের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ''উপযুক্ত ধারায় মামলা করা হয়েছে।''

রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রতিক্রিয়া

সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ''পুলিশ আক্রান্তের পাশে নয়, আক্রমণকারীর পাশে দাঁড়াবে। তৃণমূলের নেতা, তাই জামিনযোগ্য, তাই জামিন, এসব তো ছ্যাবলামো হচ্ছে।''

তবে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেছেন, ''খারাপ ঘটনা। পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। বিুষয়টি আদালতে গেছে। অন্যপক্ষ আদালতে কী বললেন? জামিন দেওয়া না দেওয়া তো বিচারকের সিদ্ধান্ত।''

নদিয়ায় বিজেপি কর্মী খুন

বুধ ও বৃহস্পতিবারের দিবাগত রাতে নদিয়ার নবদ্বীপ পুরসভার প্রাচীন মায়াপুরে এক বিজেপি কর্মীকে ঘুম থেকে তুলে নৃশংসভাবে মারধর করে দুষ্কৃতীরা। তারপর তারা সারা রাত বাড়ির বাইরে অপেক্ষা করে। আতঙ্কে তাকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে পারেনি পরিবার। বৃহস্পতিবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সঞ্জয় ভৌমিকের মৃত্যু হয়

সঞ্জয়ের মা বলেছেন, ''তাপস দেবনাথ যে এমএলএ বা বিধায়কের গাড়ি চালায়, সে মেরেছে। তার সঙ্গে থাকা সন্তু, দীপঙ্কর, তাপস দাস কী করে জানি না।'' তিনি টিভি৯-কে এ-ও বলেছেন, ''থানায় জানিয়ে কিছু হয় না। দেশে আইন নেই, বিচার নেই। আছে শুধু দুর্নীতি, অন্য়ায় ও গরিবের উপর অত্যাচার।''

শোকসন্তপ্ত মা আরো বলেন, ''আমি আর কিছু চাই না। ওই ছেলেদের একবার সামনে চাই। ওদের তো লুকিয়ে রেখেছে।''  

স্থানীয় বিজেপি নেতা শশধর নন্দী বলেছেন, ''তৃণমূলের আশ্রিত গুণ্ডারা সেভেন স্টার ক্লাবে ঢুকে প্রথমে ওকে মারধর করে। সেখান থেকে ছেলেটি বাড়ি ঢুকলে সেখানে গিয়ে মারে। আমরা দোষীদের উপযুক্ত সাজা চাইছি।''

পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে কেউ এখনো গ্রেপ্তার হয়নি।

কাকদ্বীপ ও নদিয়ার ঘটনার মধ্য়ে মিল হলো, দুই জায়গাতেই তৃণমূলের নেতা ও কর্মীরা অভিযুক্ত। দুই জায়গাতেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আক্রান্ত বা তার পরিবার।

জিএইচ/এসিবি(এবিপি আনন্দত, টিভি৯)

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ