স্পেনের সরকার প্রধান কাটালান নেতাদের হুমকি দিয়ে বলেছেন যে, সে অঞ্চল স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে ফল ভালো হবে না৷ কাটালুনিয়ায় সম্প্রতি এক বিতর্কিত গণভোটের আয়োজন করা হয়, যা স্পেনে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি করেছে৷
বিজ্ঞাপন
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাখোই রবিবার বলেছেন, কাটালুনিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে তাদের স্বায়ত্তশাসনের ক্ষমতা স্থগিত করা হবে৷ গত সপ্তাহে সেখানে বিতর্কিত এক গণভোটের পর এই প্রথম মুখ খুললেন রাখোই৷ তিনি বলেন, ‘‘স্বাভাবিকভাবে, আমার মনে হয় না, আমাদের সেরকম কঠোর কোনো উদ্যোগ নেয়ার প্রয়োজন আছে৷ কিন্তু সেই পরিস্থিতি এড়াতে হলে যা হবার নয় তা করার চেষ্টা বন্ধ করতে হবে৷''
এই নামটা শুনে সবাই সেখানে যেতে চায়, হ্যাঁ জায়গাটা বার্সেলোনা৷ স্পেনের এই শহরটি গত তিন দশক ধরে পর্যটক আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্র৷ বার্সেলোনায় গেলে যে ১০টি স্থানে আপনার অবশ্যই যাওয়া উচিত – সেগুলো দেখে নিন ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/DUMONT Bildarchiv/F. Heuer
সমুদ্র বন্দর
১৯৯২ সালে অলিম্পিক গেমস উপলক্ষ্যে এই ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল৷ এর কারণে বন্দরটি অবশ্য লাভবানই হয়েছে৷ ঐ অলিম্পিকের পর থেকে এখানকার বার, রেস্তোরাঁগুলো পর্যটকের জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে৷ ১৯৯২ সালের অলিম্পিকের জন্য বিশাল আকৃতির এই ‘স্বর্ণ মৎসটির’ নকশা করেছিলেন বিখ্যাত স্থপতি ফ্রাংক গেহরি৷
ছবি: picture-alliance/Arco Images/J. de Cuveland
সমুদ্র সৈকত
নাগরিক জীবন থেকে ছুটি চান বা কয়েকটা দিন সৈকতে কাটাতে চান? এ দু’টোর দারুণ সংমিশ্রণ হলো বার্সেলোনা৷ শহরে থেকেও এক পা বাড়ালেই সমুদ্র, তাই নাগরিক জীবনের সাথে সামঞ্জস্য করা ভীষণ সুবিধা৷ বার্সেলোনাকে ঘিরে আছে সাতটি সমুদ্র সৈকত, যেখান থেকে আপনি ভূ-মধ্যসাগরে সূর্যস্নানের সুযোগ পাবেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Jensen
রাম্বলা
শহরের অদূরে যে সমুদ্র সৈকতটি, তার থেকে খুব কাছেই বার্সেলোনার ঐতিহাসিক এই কেন্দ্রস্থলটি৷ এর আয়তন এক কিলোমিটার৷ ফুটপাতের পাশে ক্যাফেগুলো ফ্রেশ হওয়ার জন্য যেন আপনাকে হাতছানি দিতে থাকে৷ শেরি ওয়াইন, তাপাস, মানে বিভিন্ন ধরনের স্ন্যাক্স’সহ নানারকম সুস্বাদু খাবার পাবেন এখানে৷
ছবি: picture-alliance/DUMONT Bildarchiv/F. Heuer
পুরোনো শহর
লা রাম্বলার উত্তরে বারি গোতিক, পুরোনো শহরের গথিক কোয়ার্টার৷ এখানকার বেশিরভাগ ঐতিহাসিক ভবন ১৪ বা ১৫ শতকে তৈরি৷
ছবি: picture-alliance/DUMONT Bildarchiv/F. Heuer
স্কয়ার
অনেক জায়গায় পুরোনো শহরের রাস্তাগুলো ছোট বা বড় স্কয়ার বা চত্বরে গিয়ে মিলেছে৷ প্লাকা রিয়াল সিটি সেন্টার রাতের পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের জায়গা৷
ছবি: picture-alliance/DUMONT Bildarchiv/F. Heuer
সাগ্রাদা ফামেলিয়া
আধুনিক বার্সেলোনার গুরুত্বপূর্ণ নজির সৃষ্টি করেছেন আন্তোনি গাউডি৷ তাঁর নকশায় বানানো সাগ্রাদা ফামেলিয়া চার্চ বার্সেলোনার অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান৷ বিশ্বের বিখ্যাত ভবনগুলোর অন্যতম এটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Warnecke
গাউডি-র বিশ্ব
আলো আর রঙের এমন অপূর্ব সংমিশ্রণ বিশ্বের আর কোনো চার্চের ভেতরে হয়ত দেখতে পাবেন না৷ গাউডি তাঁর স্থাপত্যে প্রকৃতি থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন৷ ছাদটা এমনভাবে নির্মিত যে, মনে হবে এর কলামগুলো গাছের মতো আকাশের দিকে মুখ করে আছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Goldmann
ফুন্দাসিও জোয়ান মিরো
বার্সেলোনা এমন একটা শহর, যে শহর আপনাকে অনেক কাজে উৎসাহ দেবে৷ মন্টউইক পাহাড়ের উপর জাদুঘরটি জোয়ান মিরোর স্মরণে তৈরি৷ এই শিল্পীর কাজে কাতালান ফোক আর্টের বিষয় ও রং চোখে পড়ে৷ তাঁর তৈরি বর্নিল ভাস্কর্য এবং সেরামিকের কাজ বার্সেলোনা জুড়ে চোখে পড়বে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Read
ফন্ত মাগিকা
বার্সেলোনার সবচেয়ে রোম্যান্টিক জায়গা ফন্ত মাগিকা৷ ১৯২৯ সালে নির্মিত এই ঝর্ণাটিতে আলোর ৫০ট রকমের বর্ণচ্ছটা আপনাকে অভিভূত করবে৷ শহরের সবচেয়ে বড় ঝর্ণা এটি৷
ছবি: picture-alliance/Eibner
তিবিদাবো
বার্সেলোনা দু’টো পাহাড় দিয়ে ঘেরা৷ এর একটি মন্টউইক (১৭৩ মিটার) আর অন্যটি তিবিদাবো (৫২০ মিটার)৷ তিবিদাবো থেকে আপনি শহরের বেশিরভাগ অংশটা দেখতে পাবেন৷ বার্সেলোনার একমাত্র ঐতিহাসিক ট্রামলাইন দ্য ট্রামভিয়া ব্লাও-এর সাহায্যে আপনি পাহাড়ের উপরে উঠতে পারবেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Reboredo
10 ছবি1 | 10
প্রসঙ্গত, স্পেনের সর্বোচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও গত পহেলা অক্টোবর কাটালুনিয়ায় স্বাধীনতা বিষয়ক গণভোটের আয়োজন করেন স্থানীয় নেতারা৷ গণভোটে স্বাধীনতার পক্ষে রায় দেন অধিকাংশ মানুষ৷ ফলে এক রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয় স্পেনে৷
এদিকে, শনিবার স্পেনের বিভিন্ন শহরে কাটালুনিয়ার স্বাধীনতার পক্ষের এবং বিপক্ষের গোষ্ঠী রাজপথে বিক্ষোভে অংশ নেয়৷ তারা মাদ্রিদ এবং বার্সেলোনার মধ্যে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে৷ ‘‘লেটস টক'' ব্যানার হাতে এক বিক্ষোভে অংশ নেয়া ৬১ বছর বয়সি কাটালান অর্থনীতিবিদ মানুয়েল গর্সিয়া বলেন, ‘‘স্বাধীনতার বিষয়টি কাটালুনিয়াতে এক সামাজিক বিচ্ছেদ সৃষ্টি করছে, আমি মনে করি সিদ্ধান্ত ঘোষণার মাধ্যমে নয়, বরং সংলাপের মাধ্যমে এই ইস্যুর সমাধান করতে হবে৷''
মাদ্রিদে বিক্ষোভে ‘‘কাটালুনিয়া, উই লাভ ইউ'' লেখা ব্যানার প্রদর্শন করেন বিক্ষোভকারীরা৷ তবে কোনো কোনো বিক্ষোভকারী কাটালুনিয়ার স্বায়ত্তশাসন প্রত্যাহারের ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য স্পেনের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন৷
উল্লেখ্য, কাটালুনিয়া সরকার শুক্রবার জানিয়েছে যে গণভোটে অংশ নেয়াদের নব্বই শতাংশই স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দিয়েছেন৷ তবে মাত্র ৪৩ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন৷ স্থানীয় গণমাধ্যমের দাবি, যারা স্বাধীনতার পক্ষে নন, তারা এই গণভোটে অংশ নেননি৷ সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪ হাজার বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করেছে স্পেন সরকার৷