পেশায় বিজ্ঞাপন ফটোগ্রাফার হলেও কাঠ দিয়ে অসাধারণ সৃষ্টির কাজে মেতে উঠেছেন সুইডেনের এক মানুষ৷ দেশের সীমা পেরিয়ে তাঁর সৃষ্টিকর্ম দ্রুত সমাদর পেয়েছে৷ খাদ্যের সঙ্গেও যোগসূত্র তৈরি হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
ডানিয়েল ভেস্টার পেশায় বিজ্ঞাপন ক্ষেত্রের ফটোগ্রাফার৷ মাত্র চার বছর আগে তিনি কাঠ নিয়ে কাজ শুরু করেন৷ তারপর দ্রুত প্রদর্শনী শুরু হলো৷ স্টকহোম, অসলো ও টোকিও শহরেও মানুষ তাঁর সৃষ্টির স্বাদ পেলেন৷ এই শখ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘কাঠের একটা আলাদা আবেদন রয়েছে৷ সেটি একইসঙ্গে শক্তিশালী ও শক্ত, আবার নরম ও নমনীয়৷ জীবন্তও বটে৷ আমি এই সব চামচগুলিকে শিল্পকর্ম হিসেবে দেখি৷ এর একটা প্রতীকী দিক রয়েছে, এর পেছনে ভাবনাচিন্তা রয়েছে৷ নির্দিষ্ট এক নান্দনিকতাও রয়েছে৷’’
কাঠ শিল্পী ডানিয়েল ভেস্টার জঙ্গল খুব পছন্দ করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘জঙ্গল আমার কাছে এমন এক জায়গা, যেখানে আমি একইসঙ্গে আরাম করতে পারি এবং নিজেকে রিচার্জ করতে পারি৷ আবার প্রেরণাও পাই৷ জঙ্গল সত্যি অসাধারণ৷ এই মুহূর্তে আমি এই লম্বা চামচ নিয়ে কাজ করছি৷ তার জন্য বিচ গাছের এক টুকরো কাঠের প্রয়োজন৷ উজ্জ্বল এই কাঠের মধ্যে দানা কম৷ তবে দেখতে বেশ ফ্যাকাশে হলেও বেশ রাজকীয় এক সৌন্দর্য রয়েছে৷ এবার তাহলে বিচ কাঠই চাই৷ সেটি দিয়ে আমি এক থেকে চারটি দীর্ঘ আকারের টুকরো তৈরি করতে পারি৷’’
পেশাদার ফটোগ্রাফার ডানিয়েলের অন্যরূপ
04:30
কাঠের প্রতি এমন ভালবাসা একেবারেই তাঁর একান্ত অনুভূতি৷ অন্যের জন্য কাজ না করে নিজস্ব কিছু করার তাগিদ থেকেই সবকিছু শুরু হয়৷ তিনি একেবারে অন্তরের ভাব প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন৷ ডানিয়েল বলেন, ‘‘শুরুতে বস্তু হিসেবে চামচের নানা দিক বোঝার চেষ্টা করেছিলাম৷ প্রথাগত রূপের বদলে ভিন্ন আকারের সন্ধান করছিলাম৷ আমার মতে বস্তুর দীর্ঘ এই আকার আলোর সন্ধান, নস্টালজিয়া বা অতীত সম্পর্কে আকুলতার বহিঃপ্রকাশ৷ আলোর খোঁজে শরীরকে টানটান করে তুলতে হয়৷ সেটা করতে হলে মানুষ নিজের বর্ম খুলে ফেলে, নিজেকে উন্মুক্ত করে৷’’
সুইডেনের বিখ্যাত রাঁধুনী ডানিয়েল বার্লিন দুটি মিশল্যাঁ তারকা অর্জন করেছেন৷ ডানিয়েল ভেস্টার তাঁর রেস্তোরাঁর জন্য কাঠ দিয়ে বাসনপত্র, হাতাখুন্তি, কাঁটাচামচ ইত্যাদির গোটা সেট তৈরি করেছেন৷ শিল্পকর্ম নয়, সেগুলি সত্যি ব্যবহার করা যায়৷ ডানিয়েল বার্লিন বলেন, ‘‘আমার কাছে জাদুময় মনে হয়৷ সত্যি খুব সুন্দর৷ কাঠ প্রায় উধাও হয়ে যাচ্ছে৷ প্রথমে বুঝতেই পারিনি যে বাটিগুলি কাঠের তৈরি৷’’
ইয়েন্স ফন লার্খার/এসবি
কাঠের বাড়ি সমৃদ্ধ জার্মানির সুন্দর দশ শহর
জার্মানিতে প্রায় বিশ লক্ষ বাড়ি আছে, যেগুলোর প্রায় অর্ধেক কাঠ দিয়ে তৈরি৷ এমন বাড়ির বেশিরভাগেরই দেখা পাওয়া যাবে ছবিঘরে নাম করা দশটি শহরে৷
ছবি: picture-alliance/imagebroker/G. Lenz
কুয়েডলিনবুর্গ
এই শহরে ১,৩০০-র বেশি কাঠের বাড়ি রয়েছে৷ ১৯৯৪ সালে শহরের পুরোনো অংশকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে৷
ছবি: picture-alliance/imagebroker/GTW
সেলে
এই শহরে কাঠের বাড়িগুলো একের পর এক এমনভাবে দাঁড়িয়ে আছে যেন লকেটে গাঁথা মুক্তা! এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বাড়িটি তৈরি হয়েছিল ১৫৩২ সালে, নাম হপেনার হাউস৷
ছবি: picture-alliance/dpa/H. Hollemann
ফ্রিৎসলার
গত কয়েক শতকে এই শহরের রূপে পরিবর্তন হয়নি৷ এখনো সেখানে গেলে কাঠের বাড়ি আর সরু লেনের দেখা পাওয়া যাবে৷ এসবের মাঝে পাওয়া যাবে ছোট রেস্তোরাঁ, আইসক্রিমের দোকান আর ক্যাফে – নীরব, শান্তির এক পরিবেশ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/U. Zucchi
মোনশাউ
সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে ভরপুর হওয়ার কারণে মোনশাউকে ‘আইফেলের মুক্তা’ নামে ডাকা হয়৷ প্রায় তিনশ’র মতো তালিকাবদ্ধ ভবন আছে সেখানে৷ পাথর বাঁধানো পথ ধরে হাঁটতে গিয়ে আর্ট গ্যালারি আর বুটিকের সন্ধান মিলবে৷
ছবি: picture-alliance/Dumont/R. Kiedrowski
ব্যার্নকাস্টেল-কুয়েস
মোজেল নদীর ধারে আঙুর খেত সমৃদ্ধ শহর ছিল ব্যার্নকাস্টেল৷ ১৯০৫ সালে এটি নদীর অপর পাশের কুয়েসের সঙ্গে মিলে যায়৷ ফলে শহরটির নাম এখন ব্যার্নকাস্টেল-কুয়েস৷ স্থান স্বল্পতার কারণে সেখানে বাড়িগুলো যতটা সম্ভব উঁচু করে তৈরি করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/imagebroker/M. Moxter
এসলিঙেন
এই শহরে গেলেও অনেক আঙুর খেতের দেখা মিলবে৷ তের থেকে ষোলো শতকের মধ্যে নির্মিত ২০০-র বেশি কাঠের বাড়ি আছে সেখানে৷
ছবি: picture-alliance/Arco Images/J. Pfeiffer
ট্যুবিঙেন
বিশ্ববিদ্যালয় শহর বলে ট্যুবিঙেনের মোট বাসিন্দার তিনজনের একজন শিক্ষার্থী৷ মধ্যযুগে নির্মিত কাঠের বাড়িসহ শহরের সরু লেন, রাস্তা, সবকিছু ভালোভাবে সংরক্ষণ করে রাখা আছে৷
ছবি: picture-alliance/imagebroker/E. Bömsch
রটেনবুর্গ অব ডেয়ার টাউবার
কাঠের বাড়ি দেখার জন্য সম্ভবত জার্মানির সবচেয়ে পরিচিত শহর এটি৷ প্রতিবছর প্রায় ২০ লক্ষ পর্যটক সেখানে যান৷ ঐতিহাসিক ভবন, আঁকাবাঁকা চলার পথ, কাঠের বাড়ি, ৪২টি দরজা আর টাওয়ার সমৃদ্ধ মধ্যযুগীয় এই শহরের প্রাচীর – পর্যটক আকর্ষণের জন্য আর কি কিছু চাই!
ছবি: picture-alliance/imagebrokerW. Dieterich
বামব্যার্গ
ছবিতে শহরের পুরনো টাউন হল দেখতে পাচ্ছেন৷ রেগনিৎস নদীর মাঝে একটি কৃত্রিম দ্বীপ বানিয়ে সেখানে এটি নির্মাণ করা হয়েছে৷ টাউন হলের পেছনে সারি ধরে কাঠের অনেক বাড়ি রয়েছে, যেখানে একসময় জেলেরা বাস করতেন৷ বামব্যার্গে প্রায় ২,৪০০ তালিকাভুক্ত ভবন রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/imagebroker/G. Lenz
স্টাডে
হামবুর্গের কাছে এই ছোট্ট শহরটি অবস্থিত৷ ‘জার্মান টিম্বার ফ্রেম রুট’-এর মধ্যে এই শহরটিও পড়বে৷ আপনি যদি এমন একের অধিক শহর দেখতে চান, তাহলে ঐ রুটের একটি অংশ দেখলেও চলবে৷ রুটটি প্রায় সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ৷ উত্তরে এলবে নদী থেকে শুরু করে দক্ষিণ লেক কনস্টান্স পর্যন্ত এর ব্যাপ্তি৷