কাতালোনিয়ায় গণভোটে বাধা দিচ্ছে পুলিশ৷ ইতোমধ্যে বেশ কিছু ব্যালোট বাক্স বাতিল করেছে নিরাপত্তা বাহিনী৷ এদিকে, কাতালান কর্তৃপক্ষ ভোটারদের যে কোনো ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
বিতর্কিত গণভোট নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে কাতালোনিয়ায়৷ স্পেন সরকার এই গণভোটকে ‘অবৈধ' আখ্যা দিলেও রবিবার তা আয়োজন করে কাতোলোনিয়ার স্বাধীনতাকামীরা৷ ফলে একাধিক ভোটকেন্দ্রে পুলিশের সঙ্গে ভোটারদের ধস্তাধস্তির খবর পাওয়া গেছে৷ কাতালান শহর গিরোনাতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নেতা কার্লেস পুইগডেমন্ট রবিবার একটি কেন্দ্রে ভোট দিতে গেলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়৷
টেলিভিশন ফুটেজে দেখা গেছে, ঢাল এবং হেলমেটওয়ালা পুলিশ জোর করে সান্ট খুলিয়া দে রামিস ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টা করছে৷ এ সময় তারা উপস্থিতি জনতার উপরে লাঠিচার্জ করে এবং একটি কাঁচের দরজা ভেঙে ফেলে। তবে সেই ঘটনার হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি৷ পুইগডেমন্ট সেই কেন্দ্রে ভোট দিতে ব্যর্থ হলেও পরবর্তীতে অন্য একটি কেন্দ্রে গিয়ে গণভোটে অংশ নেন৷
স্প্যানিশ পত্রিকা এল পাইস জানিয়েছে, পুলিশের সঙ্গে ভোটারদের ধস্তাধস্তির ঘটনার সে অঞ্চলের রাজধানী বার্সেলোনাতেও ঘটেছে৷ আর স্পেন সরকারের কাতালোনিয়া বিষয়ক ডেলিগেট এনরিক মিলো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, ‘অবৈধ' গণভোট বন্ধে পুলিশের অভিযানের দরকার ছিল৷ তবে পুলিশ শুধুমাত্র নির্বাচনি সরঞ্জাম সরিয়ে নিয়েছে বলেও জানান তিনি৷
মিলো বলেন, ‘‘আমরা এমন কিছু করতে বাধ্য হয়েছি যা আসলে করতে চাইনি৷''
বার্সেলোনা: ভূ-মধ্যসাগরের অপূর্ব শহর
এই নামটা শুনে সবাই সেখানে যেতে চায়, হ্যাঁ জায়গাটা বার্সেলোনা৷ স্পেনের এই শহরটি গত তিন দশক ধরে পর্যটক আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্র৷ বার্সেলোনায় গেলে যে ১০টি স্থানে আপনার অবশ্যই যাওয়া উচিত – সেগুলো দেখে নিন ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/DUMONT Bildarchiv/F. Heuer
সমুদ্র বন্দর
১৯৯২ সালে অলিম্পিক গেমস উপলক্ষ্যে এই ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল৷ এর কারণে বন্দরটি অবশ্য লাভবানই হয়েছে৷ ঐ অলিম্পিকের পর থেকে এখানকার বার, রেস্তোরাঁগুলো পর্যটকের জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে৷ ১৯৯২ সালের অলিম্পিকের জন্য বিশাল আকৃতির এই ‘স্বর্ণ মৎসটির’ নকশা করেছিলেন বিখ্যাত স্থপতি ফ্রাংক গেহরি৷
ছবি: picture-alliance/Arco Images/J. de Cuveland
সমুদ্র সৈকত
নাগরিক জীবন থেকে ছুটি চান বা কয়েকটা দিন সৈকতে কাটাতে চান? এ দু’টোর দারুণ সংমিশ্রণ হলো বার্সেলোনা৷ শহরে থেকেও এক পা বাড়ালেই সমুদ্র, তাই নাগরিক জীবনের সাথে সামঞ্জস্য করা ভীষণ সুবিধা৷ বার্সেলোনাকে ঘিরে আছে সাতটি সমুদ্র সৈকত, যেখান থেকে আপনি ভূ-মধ্যসাগরে সূর্যস্নানের সুযোগ পাবেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Jensen
রাম্বলা
শহরের অদূরে যে সমুদ্র সৈকতটি, তার থেকে খুব কাছেই বার্সেলোনার ঐতিহাসিক এই কেন্দ্রস্থলটি৷ এর আয়তন এক কিলোমিটার৷ ফুটপাতের পাশে ক্যাফেগুলো ফ্রেশ হওয়ার জন্য যেন আপনাকে হাতছানি দিতে থাকে৷ শেরি ওয়াইন, তাপাস, মানে বিভিন্ন ধরনের স্ন্যাক্স’সহ নানারকম সুস্বাদু খাবার পাবেন এখানে৷
ছবি: picture-alliance/DUMONT Bildarchiv/F. Heuer
পুরোনো শহর
লা রাম্বলার উত্তরে বারি গোতিক, পুরোনো শহরের গথিক কোয়ার্টার৷ এখানকার বেশিরভাগ ঐতিহাসিক ভবন ১৪ বা ১৫ শতকে তৈরি৷
ছবি: picture-alliance/DUMONT Bildarchiv/F. Heuer
স্কয়ার
অনেক জায়গায় পুরোনো শহরের রাস্তাগুলো ছোট বা বড় স্কয়ার বা চত্বরে গিয়ে মিলেছে৷ প্লাকা রিয়াল সিটি সেন্টার রাতের পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের জায়গা৷
ছবি: picture-alliance/DUMONT Bildarchiv/F. Heuer
সাগ্রাদা ফামেলিয়া
আধুনিক বার্সেলোনার গুরুত্বপূর্ণ নজির সৃষ্টি করেছেন আন্তোনি গাউডি৷ তাঁর নকশায় বানানো সাগ্রাদা ফামেলিয়া চার্চ বার্সেলোনার অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান৷ বিশ্বের বিখ্যাত ভবনগুলোর অন্যতম এটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Warnecke
গাউডি-র বিশ্ব
আলো আর রঙের এমন অপূর্ব সংমিশ্রণ বিশ্বের আর কোনো চার্চের ভেতরে হয়ত দেখতে পাবেন না৷ গাউডি তাঁর স্থাপত্যে প্রকৃতি থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন৷ ছাদটা এমনভাবে নির্মিত যে, মনে হবে এর কলামগুলো গাছের মতো আকাশের দিকে মুখ করে আছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Goldmann
ফুন্দাসিও জোয়ান মিরো
বার্সেলোনা এমন একটা শহর, যে শহর আপনাকে অনেক কাজে উৎসাহ দেবে৷ মন্টউইক পাহাড়ের উপর জাদুঘরটি জোয়ান মিরোর স্মরণে তৈরি৷ এই শিল্পীর কাজে কাতালান ফোক আর্টের বিষয় ও রং চোখে পড়ে৷ তাঁর তৈরি বর্নিল ভাস্কর্য এবং সেরামিকের কাজ বার্সেলোনা জুড়ে চোখে পড়বে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Read
ফন্ত মাগিকা
বার্সেলোনার সবচেয়ে রোম্যান্টিক জায়গা ফন্ত মাগিকা৷ ১৯২৯ সালে নির্মিত এই ঝর্ণাটিতে আলোর ৫০ট রকমের বর্ণচ্ছটা আপনাকে অভিভূত করবে৷ শহরের সবচেয়ে বড় ঝর্ণা এটি৷
ছবি: picture-alliance/Eibner
তিবিদাবো
বার্সেলোনা দু’টো পাহাড় দিয়ে ঘেরা৷ এর একটি মন্টউইক (১৭৩ মিটার) আর অন্যটি তিবিদাবো (৫২০ মিটার)৷ তিবিদাবো থেকে আপনি শহরের বেশিরভাগ অংশটা দেখতে পাবেন৷ বার্সেলোনার একমাত্র ঐতিহাসিক ট্রামলাইন দ্য ট্রামভিয়া ব্লাও-এর সাহায্যে আপনি পাহাড়ের উপরে উঠতে পারবেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Reboredo
10 ছবি1 | 10
স্পেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ব্যালোট বাক্স এবং পেপার বাজেয়াপ্ত করতে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে পুলিশ এবং সিভিল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে৷ চারটি প্লাস্টিকের ব্যালোট বাক্স এবং পেপার ছবি টুইটারে প্রকাশ করে মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে লেখা হয়েছে, ‘‘পুলিশ বার্সেলোনা থেকে এগুলো প্রথমে বাজেয়াপ্ত করেছে৷ কাতালোনিয়ায় তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে৷''
প্রসঙ্গত, শনিবার দিবাগত রাতে কাতালোনিয়ার অনেক এলাকায় কাতালান সরকারের সিলযুক্ত ব্যালোট পেপার এবং বাক্স পৌঁছে দেয় স্বাধীনতাকামীরা৷ যদিও সেদেশের সরকার আগেই দাবি করেছিল যে, ‘অবৈধ' গণভোট বন্ধে সক্ষম হয়েছে তারা৷
কাতালান স্বাধীনতার পক্ষের অনেকে রাতভর বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে অবস্থান করে সকালে ন'টায় ভোটকেন্দ্র খুলে দেয়৷ অন্তত ১৬৩টি স্কুলে এরকম ভোটকেন্দ্র তৈরি করা হয়৷ কোনো কোনো ভোটকেন্দ্রের সামনে ভোর পাঁচটা থেকেই হাজার হাজার ভোটারকে জড়ো হতে দেখা যায়৷
উল্লেখ্য, কাতালোনিয়ার অনেক মানুষ স্বাধীনতা দাবি করে আসলেও স্পেন সরকার তা আমলে নিচ্ছে না৷ আন্তর্জাতিক সমাজ এটাকে স্পেনের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে বিবেচনা করছে৷ ফলে স্বাধীনতাকামীদের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন তেমন একটা নেই৷