কান্দাহার ঘিরে ফেলেছে তালেবান। শহরের প্রাণকেন্দ্রে না এলেও, নিয়মিত তারা শহরে ঢুকে 'শত্রু'দের ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
অপরাধ তিনি আফগান পুলিশ ফোর্সে চাকরি করতেন। তাই গত সপ্তাহে দুর মোহাম্মদের ভাইপোকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল তালেবান বাহিনী। চারদিন তার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। সূত্র মারফত দুর মোহাম্মদ জানতে পেরেছেন, তার ভাইপোকে প্রকাশ্য রাস্তায় হত্যা করা হয়েছে। ৪২ বছরের দুর সারা জীবন কান্দাহার ছেড়ে কোথাও যাননি। কিন্তু এখন তিনি পালানোর পরিকল্পনা করছেন।
দানিশ সিদ্দিকির চোখে বিশ্ব
পুলিৎজার জয়ী ভারতীয় ফোটোগ্রাফার দানিশ সিদ্দিকি সম্প্রতি নিহত হয়েছেন তালিবানের হাতে। ফিরে দেখা তার কিছু কাজ।
ছবি: Danish Siddiqui/REUTERS
সালাম দানিশ
সংবাদসংস্থা রয়টার্সের প্রধান ফোটোগ্রাফার ছিলেন দানিশ। রোহিঙ্গাদের নিয়ে তার কাজের জন্য পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছিলেন।
ছবি: Mumbairt/CC
তালেবানের ডেরায়
আফগানিস্তানে একাধিকবার ছবি তুলতে গেছেন দানিশ। যুদ্ধক্ষেত্রে বহু কাজ করেছেন। এবারেও আফগান বাহিনীর সঙ্গে ঘুরছিলেন তিনি।
ছবি: Danish Siddiqui/REUTERS
কান্দাহারের লড়াই
কান্দাহারের কাছে পাকিস্তান সীমান্তে তালেবানের সঙ্গে চূড়ান্ত লড়াই হয় আফগান সেনার। দানিশ ছবি তুলছিলেন। তখনই তালেবান আক্রমণে মৃত্যু হয় তার।
ছবি: Danish Siddiqui/REUTERS
যুদ্ধক্ষেত্র যেমন
২০১২ সালে এই ছবিটি তুলেছিলেন দানিশ। তখনও আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনী ছিল। মার্কিন সেনা বুলডগ এভাবেই সুরক্ষিত করে রেখেছে অঞ্চলটি। পিছনে কাজ চলছে।
ছবি: Danish Siddiqui/REUTERS
তালেবানের ঘরে
ছবির প্রয়োজনে সমস্তরকম ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত ছিলেন দানিশ। এভাবেই ঢুকে পড়তেন তালেবানের ঘরে।
ছবি: Danish Siddiqui/REUTERS
করোনার ভারত
করোনাকালে দানিশের এই ছবি ঝাঁকিয়ে দিয়েছিল গোটা বিশ্বকে। দিল্লিতে এভাবেই পোড়ানো হচ্ছিল করোনা রোগীদের দেহ। দানিশের এই মর্মান্তিক ছবি করোনাকালে ভারতের অবস্থা সামনে নিয়ে এসেছিল।
ছবি: Danish Siddiqui/REUTERS
রোহিঙ্গা নারী
সুদূর মিয়ানমার থেকে নৌকো করে পাড়ি দিয়েছিলেন এই রোহিঙ্গা নারী। দিনের পর দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করার পর মাটি খুঁজে পেয়েছেন। কক্সবাজারের সৈকতে মাটি ধরে কাঁদছেন তিনি।
ছবি: Danish Siddiqui/REUTERS
রোহিঙ্গা শিশু
রোহিঙ্গাদের নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন দানিশ। থেকেছেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। বাংলাদেশের সমুদ্রসৈকতে পৌঁছে শিশুকে ক্যাম্পে নিয়ে যাচ্ছেন বাবা।
ছবি: Danish Siddiqui/REUTERS
মুম্বইয়ের রাস্তায়
মুম্বইয়ের রাস্তায় এভাবেই ঘুমোতে হয় গৃহহীনদের। হ্যামকে ঘুমোচ্ছে তিন বছরের শিশু। ২০১২ সালে তোলা দানিশের এই ছবিও সাড়া ফেলে দিয়েছিল ভারতে।
ছবি: Danish Siddiqui/REUTERS
শেষ সময়ের কথা
দানিশের বাবা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ছুটি কাটাতে পরিবার নিয়ে জার্মানি যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু শেষমুহূর্তে নিজের যাওয়া বাতিল করেন তিনি। জানিয়ে দেন আফগানিস্তান যাবেন যুদ্ধের ছবি তুলতে।
ছবি: Danish Siddiqui/REUTERS
যুদ্ধক্ষেত্রের প্রার্থনা
যুদ্ধের মধ্যেই অস্ত্র পাশে নিয়ে নামাজ পড়ছেন আফগান সেনা বাহিনীর এক জওয়ান।
আফগান স্পেশাল ফোর্স গ্রামে ঢুকে এভাবেই আশ্বস্ত করছেন সাধারণ মানুষকে।
ছবি: Danish Siddiqui/REUTERS
ভয়ংকর লড়াই
কিন্তু শেষ পর্যন্ত কান্দাহারের দখল নিতে পারেনি আফগান বাহিনী। তালেবানের শক্তির সামনে আফগান বাহিনীকে পিছু হঠতে হয়। একের পর এক সেনা জওয়ানকে মারতে থাকে তালেবান।
ছবি: Danish Siddiqui/REUTERS
শেষ ছবি
মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে এই ছবিটি তুলেছিলেন দানেশ। একটি সেনা কনভয়ে ছিলেন তিনি। গাড়ি থেকে কনভয়ের ছবি তুলেছিলেন।
ছবি: Danish Siddiqui/REUTERS
15 ছবি1 | 15
কান্দাহার ছেড়ে বহু মানুষ পালিয়ে যাচ্ছেন। এখনো কাবুল যাওয়া যাচ্ছে বিমানে। বহু মানুষ সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করছেন। কারণ স্থলপথ বন্ধ। গোটা কান্দাহার ঘিরে ফেলেছে তালেবান। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো যাচ্ছে না। দোকানপাট অধিকাংশ সময়েই বন্ধ থাকছে। খোলা থাকলেও তারা যেতে ভয় পাচ্ছেন। কারণ, গোটা সীমানা জুড়ে লড়াই চলছে। শহরের প্রাণকেন্দ্রে তালেবান একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনও দখল করেছে বলে শোনা গেছে।
সম্প্রতি মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, তালেবান সাধারণ মানুষকেও আক্রমণ করছে। প্রকাশ্য রাস্তায় তাদের হত্যা করা হচ্ছে। এখুনি এ ঘটনা বন্ধ হওয়া দরকার। তাদের বক্তব্য, সরকারি কর্মী অথবা সরকারের কোনো কাজের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি চালাচ্ছে তালেবান। তাদের তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। জাতিসংঘও সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। যেখানে সবপক্ষকেই মানবাধিকারের কথা মাথায় রাখতে বলা হয়েছে।
তালেবান অবশ্য এ কথা মানতে রাজি হয়নি। তাদের বক্তব্য, যাবতীয় মানবাধিকার মেনেই তারা লড়াই করছে। কান্দাহারে সাংবাদিকদের একটি দল নিয়ে গিয়ে তারা পরিস্থিতি দেখাবে বলে জানিয়েছেন তালেবান মুখপাত্র। তার দাবি, ইসলামের আইন মেনেই তারা কান্দাহারে লড়াই করছেন।
এদিকে বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে কান্দাহারে আটক করেছে আফগান সরকার। অভিযোগ, টেলিভিশন এবং রেডিও-র ওই সাংবাদিকরা প্রোপাগান্ডা ছড়াতে সেখানে গিয়েছিলেন। অ্যামনেস্টি দ্রুত ওই সাংবাদিকদের রেহাইয়ের ব্যবস্থা করতে বলেছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন সাংবাদিকদের ছাড়ার ব্যাপারে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করছে।