কান-এ দেখানো হবে 'অরণ্যের দিনরাত্রি', কী বলছেন শর্মিলা, সিমি
শময়িতা চক্রবর্তী কলকাতা
১৩ মে ২০২৫
প্রখ্যাত পরিচালক এবং সত্যজিতের একান্ত অনুরাগী ওয়েস অ্যান্ডারসনের সঙ্গে ছবিটি পরিবেশন করবেন শর্মিলা ঠাকুর। থাকবেন সিমি গারেওয়াল।
কান চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হবে অরন্যের দিনরাত্রি।ছবি: Bertrand Guay/AFP
বিজ্ঞাপন
২০২৫-এ ৭৮ তম কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ১৩ মে থেকে চলবে ২৪ মে পর্যন্ত। এরই মধ্যে ১৯ মে স্যাল বুন্যুল প্রেক্ষাগৃহে দেখানো হবে সত্যজিৎ রায়ের ১৯৭০-এ নির্মিত অরণ্যের দিনরাত্রি। অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর, সিমি গারেওয়ালসহ চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত একাধিক ব্যক্তিত্ব রা উপস্থিত থাকবেন এই প্রদর্শনীতে। প্রখ্যাত পরিচালক এবং সত্যজিতের একান্ত অনুরাগী ওয়েস অ্যান্ডারসনের সঙ্গে ছবিটি পরিবেশন করবেন শর্মিলা।
উৎসব কর্তৃপক্ষের তরফও থেকে জানানো হয়েছে ছবিটির প্রিন্ট পুনরুদ্ধার করে এই উৎসবে দেখানো হচ্ছে। ল্য ইমাজিন রিত্রোভাতার ফিল্ম ফাউন্ডেশানের ওয়ার্ল্ড সিনেমা প্রজেক্টের সঙ্গে ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশান, জানুস ফিল্মস এবং ক্রাইটেরিওন কলেকশান একত্রিত হয়ে ছবিটি পুনরুদ্ধার করেছে অরণ্যের দিনরাত্রির প্রিন্ট।
এই প্রদর্শনীতে উচ্ছ্বসিত অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর। ডিডাব্লিউকে তিনি বলেন, "যারা এই ছবি রিস্টোর করেছেন তাদের কাছে আমি ঋণী। রিস্টোর না করা হলে এই ছবি রক্ষা করা সম্ভব নয়। ফিল্মের মান নানান কারণে ক্ষয় পায়। নতুন করে তাকে পুনুরুদ্ধার করা হলে তবে তো পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছবে।"
অন্যদিকে, সিমি গারেওয়ালও এই খবরে আনন্দ প্রকাশ্য করেছেন। তিনি ডিডাব্লিউকে বলেন, "আমি উত্তেজিত। ছবিটিতে কাজ করার এত বছর পরেও রেড কার্পেটে হাঁটার অবকাশ হবে এটা খুবই আনন্দের।"
ফিরে দেখা: কান চলচ্চিত্র উৎসব
চলচ্চিত্র নিয়ে পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন ও প্রভাবশালী আয়োজন কান চলচ্চিত্র উৎসব৷ ১৯৩৯ সালে শুরু হওয়া উৎসবের এবারের আসর বসছে ফ্রান্সের সমুদ্রতীরবর্তী শহরে৷ ছবিঘরে জেনে নিন উৎসবটির ইতিহাস৷
ছবি: Getty Images/AFP/V. Hache
প্রথম শুরু
ইটালির মোস্ত্রা চলচ্চিত্র উৎসবে হিটলার ও মুসোলিনি প্রভাব বিস্তারের প্রেক্ষাপটে ১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর কানে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হয়৷ দক্ষিণ ফ্রান্সের সমুদ্রতীরবর্তী শহর কানে চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব ও কূটনীতিক ফিলিপ এরল্যাঙ্গার এটি চালু করেন৷ চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রত্যেক দেশ থেকে বাছাই করা একটি করে চলচ্চিত্র স্থান পেতো সেখানে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/V. Le Caer
নতুন করে শুরু
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের টালমাটাল পরিস্থিতিতে কান চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজনও বন্ধ হয়ে যায়৷ কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর ১৯৪৬ সালে আবার এই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হয়৷ ১৯৪৬ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ফেস্টিভ্যাল ‘দু ফিল্ম দ্য কান’ নামে উৎসবটি হয়৷ এর পর্দা নামে ৫ অক্টোবর৷ সেটাই ছিল বর্তমানে চলমান কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের প্রথম আসর৷
ছবি: picture-alliance/UPI
উৎসবে দুই দফার ধাক্কা
দুই বছর আয়োজনের পর অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ১৯৪৮ ও ১৯৫০ সালে উৎসবটি হয়নি৷ তবে ততদিনে বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক উৎসবের মর্যাদা পেয়ে গেছে এটি৷ ১৯৫৫ সালে ফ্রান্সের কান শহরকে স্থায়ীভাবে এ উৎসব আয়োজনের কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়৷ এরপরও ফ্রান্স চতুর্থ রিপাবলিক থেকে পঞ্চম রিপাবলিকে রূপান্তরের সময় উৎসব আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল৷ পরের বছর এক চুক্তির ফলে সেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Fotomil Mailand
উৎসবে বিবর্তন
ষাটের দশকে বিভক্তি আসে কান চলচ্চিত্র উৎসবে৷ প্রচলিত উৎসবের পাশাপাশি শুরু হয় পিয়েরে অঁরি ডিলিউর নেতৃত্বে ডিরেক্টরস ফোর্টনাইট, এর পুরোটাই ছিল চলচ্চিত্র নির্মাতাদের দখলে৷ ১৯৬২ সালে ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রিটিকস উইক’ নামে উৎসবের আরেকটি অংশ চালু করে ‘ফ্রেঞ্চ ইউনিয়ন অব ফিল্ম ক্রিটিকস’৷ তাঁরা নবীন পরিচালকের ১ম বা ২য় কাজকে পুরস্কার দিয়ে মূল্যায়ন শুরু করেন৷ পরিবর্তন আসে পুরস্কারের বিভিন্ন নিয়মেও৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Niko
স্বর্ণপাম
কান চলচ্চিত্র উৎসবের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার হচ্ছে পাম ডি’অর বা স্বর্ণপাম৷ প্রতিযোগিতা বিভাগের ছবিগুলো থেকে এর বিজয়ী নির্বাচিত হয়৷ এগুলো প্রদর্শন করা হয় থিয়েটার লুমিয়েরে৷ পুরস্কারটির বর্তমান নকশা অনুযায়ী এতে ১৮ ক্যারেট সোনা ব্যবহার করা হয়৷ এর পেছনে ব্যয় হয় ২০ হাজার ইউরো৷ শুধু স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের জন্য রয়েছে শর্টফিল্ম পাম ডি’অর পুরস্কার৷
ছবি: Getty Images/AFP/V. Hache
রেড কার্পেট
কান উৎসবের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো ‘রেড কার্পেট’৷ বিশ্বের নামি-দামি তারকারা লালগালিচা মাড়িয়ে উৎসবে যোগ দেন৷ এর দু’পাশে সাংবাদিকরা ভিড় করে থাকেন তারকাদের ছবি তোলার জন্য৷ ৬০ মিটার (২০০ ফুট) দৈর্ঘ্যের লাল কার্পেটটি দিনে তিনবার পরিবর্তন করা হয়৷
ছবি: picture alliance/abaca
উৎসবের সময়
নানা সময় ধাক্কা খেলেও ১৯৫০ সালের পর থেকে প্রতি বছর নিয়মিতভাবে আয়োজন হয়ে আসছে কান চলচ্চিত্র উৎসব৷ তবে শুরুর দিকে আয়োজনের কোনো নির্দিষ্ট সময় ছিল না৷ ১৯৬৭ সালের পর থেকে প্রতি বছর মে মাসে, অর্থাৎ ফরাসি বসন্তে আয়োজন করা হয় কান উৎসব, যা ১২ দিন ধরে চলে৷
ছবি: picture-alliance/Mandoga Media
সিনেফাউন্ডেশন বিভাগ
কান চলচ্চিত্র উৎসবে চলচ্চিত্র শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ‘সিনেফাউন্ডেশন বিভাগ’৷ সারা বিশ্বের বিভিন্ন চলচ্চিত্র স্কুল থেকে শিক্ষার্থীরা তাঁদের ছবি প্রদর্শনের জন্য এখানে আবেদন করেন৷ এর মধ্য থেকে নির্বাচিত স্বল্পদৈর্ঘ্য বা তারও কম দৈর্ঘ্যের ছবিগুলো সেল বুনুয়েল প্রেক্ষাগৃহে দেখানো হয়৷ এখানকার সেরা তিনটি চলচ্চিত্র পায় পুরস্কার৷
ছবি: Getty Images/AFP/L. Emmanuel
অংশগ্রহণকারী
উৎসবে অংশগ্রহণের জন্য প্রায় ৪০ হাজার জন অফিসিয়াল অ্যাক্রেডিটেশন পায়, যার মধ্যে সাড়ে ৪ হাজার জন থাকেন সাংবাদিক৷ উৎসব চলার সময় কানে ৭৪ হাজার থেকে ২ লাখ মানুষের আগমন ঘটে৷ এর মধ্যে ফিল্ম মার্কেটে যেতে পারেন ১৩ হাজার জন৷ এ বছর ১,৮৪৫টি ফিচার ফিল্ম এবং ৪,২৪০টি শর্টফিল্ম জমা পড়েছে কান উৎসবে৷ অংশ নিচ্ছে ৩৯টি দেশ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Sputnik/E. Chesnokova
উৎসবের বাজেট
কান চলচ্চিত্র উৎসবের বাজেট ২০ মিলিয়ন ইউরো৷ এর অর্ধেক অর্থ আসে ফরাসিদের বাজেট থেকে আর বাকি অর্ধেক দেন স্পন্সররা৷
ছবি: Getty Images/AFP/F. Coffrini
উৎসবের বাইরে...
কানে উৎসব বহির্ভূত সংগঠনগুলোর আয়োজনে কয়েকটি বিভাগ চালু আছে৷ এর মধ্যে রয়েছে ‘ডিরেক্টরস্ ফোর্টনাইট’ ও ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রিটিকস্ উইক’ বিভাগ দুটি৷ এখানে নির্বাচিত পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্য থেকে দেওয়া হয় গ্রাঁ প্রিঁ পুরস্কার৷ পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবিগুলোকে সেরা চিত্রনাট্যের জন্য দেওয়া হয় প্রিঁ দু সিনারিও৷
ছবি: picture-alliance/Zumapress/Xinhua/Jin Yu
বাঙালির অর্জন
কান চলচ্চিত্র উৎসবে বাঙালির সবচেয়ে বড় অর্জন স্বর্ণপামের জন্য ১৯৫৬ সালে সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’ চলচ্চিত্রের মনোনয়ন৷ সেই সময় ‘বেস্ট হিউম্যান ডকুমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছিল এটি৷ ২০০২ সালের কান উৎসবে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ পরিচালিত ‘মাটির ময়না’ দেখানো হয়েছিল ভিন্ন ভাষার শ্রেষ্ঠ ছবির প্রতিযোগিতা সেকশনে৷
ছবি: Faget/AFP/Getty Images
12 ছবি1 | 12
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের উপন্যাসের উপর ১৯৭০-এ নির্মিত এই ছবিটিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শর্মিলা ঠাকুর, রবি ঘোষ, সমিত ভঞ্জ, সিমি গারেওয়াল, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়, কাবরী বসুসহ অন্যান্যরা। সেই সময়ের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে শর্মিলা বলেন, "সেই সময় ওই জায়গায় (পালামৌ জঙ্গলে) ভীষণ গরম ছিল। দুপুরে শুটিং হত না। আমরা আড্ডা মারতাম। আদিবাসী গ্রামে যেতাম। খুবই মজা করেছি আমরা।"
অরণ্যের দিনরাত্রির প্রযোজক ছিলেন অসীম দত্ত এবং নেপাল দত্ত। প্রযোজক পরিবারের তরফ থেকে অরিজিত দত্ত ডিডাব্লিউকে জানান, "কয়েকবছর আগে আমাদের ছবি প্রতিদ্বন্দ্বী কান চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হয়। এবছর অরণ্যের দিনিরাত্রি দেখানো হবে। আমরা আনন্দিত। আমার স্ত্রী এবং বোন সেখানে উপস্থিত থাকবেন। আমাদের আরেক ছবি গুপী গাইন বাঘা বাইনও রিস্টোর করা হচ্ছে। আশা করছি সেটাও কয়েক বছরের মধ্যে প্রদর্শিত হবে।"
‘মহারাজা, তোমারে সেলাম’
বিশ্বের দরবারে বাঙালি সংস্কৃতির উজ্জ্বল প্রতিনিধি সত্যজিৎ রায়৷ অস্কারবিজেতা চিত্রপরিচালক সত্যজিৎ, চিত্রশিল্পী ও সাহিত্যিক রূপেও সমাদৃত৷ ২ মে, জন্মবার্ষিকীতে তাঁর ঘর ঘুরে এসে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন.....
ছবি: DW/P. Samanta
শততম জন্মদিন
১৯২১ সালের ২ মে তাঁর জন্ম৷ শ্রদ্ধা পুত্র সন্দীপ রায়ের৷
ছবি: DW/P. Samanta
হলুদ বাড়ির তিনতলায়
শুধু বাড়ি বললে কম বলা হবে৷ বলা ভালো, সৃষ্টির সূতিকাগার৷ বিশপ লেফ্রয় রোডের দি প্রপার্টি ইন্ডিয়া কোম্পানির বাড়িতে সত্যজিৎ রায় ১৯৯২ সালের শেষ দিনটি পর্যন্ত কাটিয়েছেন৷ তাঁর লেখা-আঁকা আর চলচ্চিত্রের উদ্ভাবনী দক্ষতার সাক্ষী তিনতলার ঘরগুলি৷
ছবি: DW/P. Samanta
ভরা থাক স্মৃতিসুধায়
এই বাড়ির ইঁট-কাঠ-কড়ি-বরগায় এক দীর্ঘদেহী মানুষের স্মৃতি৷ তাঁকেই ছুঁয়ে দেখার চেষ্টাই যেন ভক্তদের৷ জন্মদিনে মানিকবাবুর বসার ঘর জমজমাট৷ অতিথি আপ্যায়নে তাঁর পুত্র সন্দীপ৷
ছবি: DW/P. Samanta
বারান্দার স্মৃতি
ছোটবেলা থেকেই তাঁর পছন্দ ছিল বারান্দা৷ ভবানীপুরে মামার বাড়ির বারা্ন্দা সম্পর্কে নিজেই বলেছেন, ‘‘শোবার ঘর থেকে বেরিয়েই বারান্দা, সকাল-দুপুর-বিকেলভরে দেখতাম রাস্তায় কতরকম লোকের চলাফেরা৷’’ বিশপ লেফ্রয় রোডের বাড়ির লম্বা লাল বারান্দা জুড়ে তাঁর কত স্মৃতি জড়িয়ে৷ পুত্রের জন্মদিনে বাবা সুকুমার রায়কেও স্মরণ৷
ছবি: DW/P. Samanta
তোমার সৃষ্টির পথ
বাংলা চলচ্চিত্রকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার প্রথম কৃতিত্ব তাঁরই৷ কলকাতা পুরসভা বিশ্ববরেণ্য চিত্র পরিচালকের স্মৃতিধন্য বিশপ লেফ্রয় রোডকে শিল্পীর সৃষ্টিতে সাজিয়েছে৷ রাস্তার দুধারে ভিক্টোরিয়ান যুগের আদলে তৈরি আলোকস্তম্ভের সঙ্গে সত্যজিতের আঁকা পোস্টার যেন তাঁর নিবাসের দিকচিহ্ন৷
ছবি: DW/P. Samanta
দাদু-নাতি যুগলবন্দি
বুদ্ধদেব বসু বলেছেন, ‘‘...বাংলা শিশুসাহিত্য এই রায়চৌধুরীদের পারিবারিক এবং মৌরশি কারবার ভিন্ন কিছুই নয়৷’’ উপেন্দ্রকিশোর, সুকুমার, সত্যজিতের তিন প্রজন্মকে কুর্নিশ জানায় বাঙালি৷ দাদু উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর অসামান্য সৃষ্টি গুপী গাইন-বাঘা বাইনকে বইয়ের পাতা থেকে চলচ্চিত্রের পর্দায় তুলে এনেছিলেন সত্যজিৎ৷ কলকাতায় জহরলাল নেহরু রোড থেকে বিশপ লেফ্রয় রোডে ঢোকার মুখে ‘হীরক রাজার দেশে’র পোস্টার৷
ছবি: DW/P. Samanta
এ তোমার মাটি
দক্ষিণ কলকাতার লি রোডের খুব কাছেই ১/১, বিশপ লেফ্রয় রোড৷ এটাই রায় পরিবারের ঠিকানা৷ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর নামকরণ করেছেন ‘সত্যজিৎ রায় ধরণী’৷ সরণী নয়, কারণ এটাই ছিল মানিকবাবুর সৃষ্টির আপন ভুবন৷
ছবি: DW/P. Samanta
বাঙালি গোয়েন্দার বিশ্বজয়
সত্যজিৎ সৃষ্ট তুখোড়, মেধাবী, অসামান্য পর্যবেক্ষণশক্তির অধিকারী ও অসীম সাহসী গোয়েন্দা প্রদোষচন্দ্র মিত্র ওরফে ফেলুদা সববয়সি পাঠকের একান্ত প্রিয়জন৷ রহস্যের জট ছাড়াতে তাঁকে দেশ-বিদেশের নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াতে হলেও তিনি আদ্যোপান্ত বাঙালি যুবক৷ ছাপার অক্ষরে ছড়িয়ে পড়েছেন বিশ্বময়৷ সত্যজিতের ফেলুদার ফরাসি, ইতালীয়, জাপানি ও জার্মান অনুবাদের প্রচ্ছদ৷
ছবি: DW/P. Samanta
দেশেও ফেলুদার জয়জয়কার
সত্যজিতের চলচ্চিত্রের মতো সাহিত্যের চাহিদা বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায়৷ গোয়েন্দাকাহিনী থেকে আশ্চর্য সব ছোটগল্পের অনুবাদ হয়েছে৷ ওড়িয়া, গুজরাতি, মারাঠি, মালায়ালম ভাষায় অনূদিত বইয়ের প্রচ্ছদ৷
ছবি: DW/P. Samanta
চলচ্চিত্রের নেপথ্য ভাবনা
কোনও কাহিনী থেকে সিনেমা তৈরির ক্ষেত্রে অভিনেতার কস্টিউম থেকে কেশসজ্জা, সব কিছুতেই নিখুঁত ডিটেলিংয়ে বিশ্বাসী ছিলেন সত্যজিৎ৷ তা সে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা নরেন্দ্রনাথ মিত্রের কাহিনী হোক, কিংবা নিজের লেখা ফেলু মিত্তিরের উপন্যাস৷ সোনার কেল্লা’র জন্য ফেলুদা এবং ভিলেন মন্দার বোস ও ডাক্তার হাজরার মেক-আপ ভাবনার স্কেচ৷
ছবি: DW/P. Samanta
নিঁখুতেই নজর
খুঁতখুঁতে ছিলেন বলেই নিখুঁত না হওয়া পর্যন্ত হাল ছাড়তেন না৷ ফেলুদার খাস কলকাতার রহস্য কাহিনী ‘বোসপুকুরে খুনখারাপি’র খসড়া দেখেই সেটা বোঝা যায়৷ তাঁর হাতে লেখা খসড়াটির সঙ্গে আঁকা প্রচ্ছদ৷
ছবি: DW/P. Samanta
নতুন যুগের কেতা
সিনেমা আর গল্পের বাইরে ফেলুদা অনেক আগেই টিভি সিরিয়াল ও কমিক্সে হাজির হয়েছেন৷ এখন ব্যাটম্যান, সুপারম্যানের মতো টি-শার্টেও হাজির তিনি৷ বিপণনের জগতে ছোটদের সঙ্গে মোলাকাতের জন্য নয়া রাস্তা এই ফেলুদা টি-শার্ট৷ ৩০০ টাকায় দেদার বিকোচ্ছে কলকাতার আইসিসিআর-এ৷
ছবি: DW/P. Samanta
তথ্যচিত্রে সত্যজিৎ
পূর্ণদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্রের পাশাপাশি সত্যজিৎ তৈরি করেছেন তথ্যচিত্রও৷ ‘রবীন্দ্রনাথ’, ‘সিকিম’, ‘সুকুমার রায়’, ‘বালা’, ‘ইনার আই’ প্রভৃতি৷ তাঁর জীবন ঘিরে তৈরি হয়েছে একাধিক তথ্যচিত্র৷ জন্মদিনে নতুন একটি তথ্যচিত্রের মুক্তি সন্দীপ রায় ও সব্যসাচী চক্রবর্তীর হাতে৷
ছবি: DW/P. Samanta
দেওয়াল জুড়ে সত্যজিৎ
ছোটদের জন্য লেখালেখি ও ছবি তৈরিতে খুব উৎসাহী ছিলেন সত্যজিৎ রায়৷ তাদের রং-তুলিতেই ফুটে উঠেছেন তিনি৷ একটি কর্মশালায় ছেলেমেয়েরা এঁকেছে সত্যজিতের পৃথিবীকে৷ নেহরু চিল্ড্রেন্স মিউজিয়ামের দেওয়ালে৷