শক্তিশালী বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল কাবুল। লক্ষ্য ছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বাড়ি। তিনি নিরাপদ। গুলির লড়াই।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার কাবুলে একাধিক বিস্ফোরণ হয়। প্রথমে একটি শক্তিশালী গাড়িবোমা বিস্ফোরণ হয়। লক্ষ্য ছিল প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও পার্লামেন্ট সদস্যদের বাড়ি। এর পরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিসমিল্লাহ মোহাম্মদি জানিয়েছেন, তিনি ও তার পরিবারের সদস্যদের কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী আহত হয়েছেন।
বিস্ফোরণের পরেই কয়েকজন বন্দুকধারী এলাকায় ঢুকে পড়ে। গুলির শব্দ শোনা যায়। নিরাপত্তা বাহিনীর দাবি, তিনজন বন্ধুকধারী তাদের গুলিতে মারা গেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাড়ি বোমা বিস্ফোরণের পরেই বন্দুকধারীরা সেখানে ঢোকে। পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে তারা মারা যায়। পুলিশ এখন এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে।
স্থানীয় হাসপাতাল জানিয়েছে, বিস্ফোরণে আহত ছয় জন এখন চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানিয়েছে, প্রথম বিস্ফোরণে দশজন আহত হয়েছিলেন।
প্রথম বিস্ফোরণের ঘণ্টাদুয়েক পরে ওই এলাকায় আবার একটি বিস্ফোরণ হয়। আবার গুলি চলতে শুরু করে। কাবুল পুলিশের মুখপাত্র জানিয়েছেন, এলাকার মানুষদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে এখন তল্লাশি করছে পুলিশ। তারা একটি গাড়ি বোমা নিস্ক্রিয় করে দিয়েছে।
'আফগানিস্তানে পরাজিত অ্যামেরিকা'
পরাজয় স্বীকার করছেন আফগানিস্তানে লড়াই করা মার্কিন সেনা অফিসাররাই। তুলনা টানছেন ভিয়েতনামের।
ছবি: Goran Tomasevic/REUTERS
বিশ বছরের যুদ্ধ
৯/১১ হামলার পরে আফগানিস্তানে প্রথম সেনা পাঠান তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ। জানিয়েছিলেন, এ হলো সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই।
ছবি: picture-alliance/dpa
লাদেন কোথায়
আল কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে বার করতেই বহু বছর সময় লেগে গেছে মার্কিন সেনার। শেষপর্যন্ত পাকিস্তানে তাকে হত্যা করা হয়। আফগানিস্তানে বহু তালেবান নেতার মৃত্যু হয়েছে মার্কিন সেনার হাতে।
ছবি: picture-alliance/dpa/Ausaf
মৃত্যুমিছিল সর্বত্র
গত প্রায় বিশ বছরে শুধু আফগানিস্তানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ন্যাটো বাহিনীর মৃত্যু হয়েছে। যার অধিকাংশই মার্কিন। ৪৭ হাজার আফগান নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। ৬৬ হাজার আফগান সেনা মারা গেছেন। লাখ লাখ আফগান দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
ছবি: Getty Images/AFP//N. Noorullha
বর্তমান পরিস্থিতি
কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে আফগানিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকা। যুদ্ধের চিহ্ন সর্বত্র। আর্থ-সামাজিক দিক থেকেও দেশটির অবস্থা ভয়াবহ।
ছবি: picture-alliance/dpa
বাইডেনের বক্তব্য
এতদিন যুদ্ধের পর বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, আর যুদ্ধ নয়, অগাস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সমস্ত সেনা ফেরত আনা হবে। আফগানিস্তানের দায়িত্ব অ্যামেরিকা আর নিতে পারবে না।
ছবি: picture-alliance/dpa
কঠিন বাস্তব
মার্কিন সেনা ফিরতে শুরু করার পরেই ফের আফগানিস্তানের দখল নিতে শুরু করেছে তালেবান। আফগানিস্তান কার্যত গৃহযুদ্ধের মুখোমুখি।
ছবি: Ashaq Akramy/DW
অ্যামেরিকার হার
আফগানিস্তানে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করা মার্কিন সেনাদের একাংশ বলছেন, এটা আসলে অ্যামেরিকার হার। বিশ বছরেও যুদ্ধ জয় করতে পারেনি অ্যামেরিকা।
ছবি: Ashaq Akramy/DW
ভিয়েতনামের সঙ্গে তুলনা
কেউ কেউ এই হারকে ভিয়েতনামের সঙ্গে তুলনা করছেন। তাদের দাবি, ভিয়েতনাম থেকেও শেষ পর্যন্ত মার্কিন সেনাকে ফিরে আসতে হয়েছিল। আফগানিস্তানেও তাই হলো।
ছবি: Ashaq Akramy/DW
লক্ষ্য ছিল না
তাদের দাবি, ভিয়েতনামের মতোই আফগানিস্তানে অ্যামেরিকার কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিল না। কিছু নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু সার্বিক পরিবর্তন ঘটানো যায়নি।
ছবি: John Moore/Getty Images
9 ছবি1 | 9
যে এলাকায় বিস্ফোরণ হয়েছে, তা কাবুলের সব চেয়ে সুরক্ষিত জায়গা। সেখানে যেতে গেলে একের পর এক চেক পয়েন্ট পার হতে হয়। যে জায়গায় প্রথম গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে, তার কাছেই চেক পয়েন্ট আছে। এই কঠোর সুরক্ষা ব্যবস্থার জন্য ওই এলাকাকে বলা হয় রিং অফ স্টিল। তা সত্ত্বেও এই ধরনের হামলা হলো।
কোনো সংগঠন এর দায় স্বীকার করেনি। তবে অ্যামেরিকা জানিয়েছে, যেভাবে হামলা হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে, তালেবান এর পিছনে আছে। ওরাই এই ভাবে আক্রমণ করে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, অ্যামেরিকা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এভাবে চলতে থাকলে আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধ শুরু হবে।