কাবুলে হাজারা শিয়া অধ্যুষিত এলাকায় বোমা বিস্ফোরণে একজন মারা গেছেন। আহত বহু। আইএস খোরাসান এর দায় স্বীকার করেছে।
বিজ্ঞাপন
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছে, দাস্ত-ই-বারছি জেলায় এই বিস্ফোরণ হয়েছে। তাদের কাছে একজনের মৃত্যুর খবর এসেছে। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আরো কয়েকজন বিস্ফোরণে মারা গেছেন।
তালেবানের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ''আমাদের কাছে প্রাথমিক যে খবর এসেছে, তাতে জানা গেছে, বোমাটি একটি মিনিবাসে রাখা ছিল। আমরা তদন্ত শুরু করেছি।''
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, ''আমি বিস্ফোরণের প্রচণ্ড আওয়াজ শুনি। তাকিয়ে দেখি, একটা মিনিবাস ও ট্যাক্সিতে আগুন ধরে গেছে। সামাজিক মাধ্যমেও পোড়া গাড়ির ছবি শেয়ার করেছেন অনেকে।''
ইসলামিক স্টেট খোরাসান কারা?
কাবুল বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট খোরাসান। তালেবানের সঙ্গে এই গোষ্ঠীর বিরোধ কোথায়?
ছবি: Xinhua/imago images
ভয়াবহ কাবুল বিস্ফোরণ
বৃহস্পতিবার জোড়া বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কাবুল বিমানবন্দর। অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত বহু। ইসলামিক স্টেট খোরাসান গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
ছবি: REUTERS
সতর্কতা জারি হয়েছিল
মার্কিন সেনা এবং যুক্তরাজ্যের সেনা আগেই ইসলামিক স্টেট খোরাসান নিয়ে সতর্কতা জারি করেছিল। তাদের বক্তব্য ছিল, কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে এই গোষ্ঠী ক্রমশ শক্তিবৃদ্ধি করছে। তাদের কাছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র আছে। যে কোনো সময় তারা হামলা চালাতে পারে।
ছবি: REUTERS
মৃত্যু হয়েছে তালেবানের
বিস্ফোরণে বেশ কিছু তালেবানেরও মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ইসলামিক স্টেট খোরাসানকে রুখতে তারা বিমানবন্দরের বাইরে চেকপোস্ট তৈরি করেছিল।
ছবি: Konstantinos Kololokouris
কেন খোরাসান
আইএসআইএস জঙ্গিদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ইসলামিক স্টেট খোরাসান। মধ্যযুগে আফগানিস্তান, ইরান এবং মধ্য এশিয়ার একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে খোরাসান প্রদেশ বলা হতো। সেখান থেকেই খোরাসান শব্দটি নিয়েছে এই গোষ্ঠীটি।
ছবি: picture-alliance/dpa/TTP
তালেবান সমঝোতার রাস্তায়
ইসলামিক স্টেটের এই গোষ্ঠীটি মনে করে, অ্যামেরিকার সঙ্গে আলোচনা করে তালেবান সমঝোতার রাস্তায় চলে গেছে। সে কারণে তালেবানকে পছন্দ করে না এই গোষ্ঠী।
তালেবান আফগানিস্তান দখল করার পর তাদের সঙ্গে আইএস খোরাসানের একাধিকবার সংঘর্ষ হয়েছে। বেশ কিছু খোরাসান জঙ্গি তালেবানের হাতে মারা গেছে। তারাও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।
ছবি: Rahmat Gul/AP/picture alliance
বিশ্বাসের বিভেদ
তালেবান ইসলামের দেওবন্দি মতে বিশ্বাসী। ইসলামিক স্টেট বিশ্বাস করে ইসলামের সালাফি আন্দোলনে। ফলে গোড়া থেকেই এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মতপার্থক্য আছে।
ছবি: AFP/B. Kilic
কে কী চায়
তালেবান দীর্ঘদিন ধরে আফগানিস্তানকে ইসলামিক আমিরাত বানানোর লক্ষ্যে লড়াই চালাচ্ছিল। আইএস চায় গোটা মধ্য এশিয়া। বস্তুত, তালেবান আফগানিস্তান দখলের পর বহু ইসলামি গোষ্ঠী উল্লাস প্রকাশ করলেও আইএস তা করেনি।
ছবি: Sefa Karacan/AA/picture alliance
কাবুলে ইসলামিক খোরাসান
মার্কিন গোয়েন্দাদের বক্তব্য, শুধু কাবুলে এই মুহূর্তে অন্তত দেড় হাজার আইএস-কে যোদ্ধা আছে। তারা ক্রমশ শক্তিবৃদ্ধি করছে। সিরিয়া, ইরাক থেকেও যোদ্ধাদের নিয়ে আসা হচ্ছে।
ছবি: AFP/Getty Images
মোট যোদ্ধার সংখ্যা
জাতিসংঘের একটি সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, সব মিলিয়ে হাজার দশেক ইসলামিক স্টেট খোরাসানের যোদ্ধা আছে। দ্রুত তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে।
ছবি: Wakil Kohsar/AFP/Getty Images
জিহাদই একমাত্র রাস্তা
ইসলামিক স্টেট খোরাসান মনে করে, জিহাদের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে হবে। অমুসলিমদের সঙ্গে সমঝোতা নয়, তাদের শাস্তি দিতে হবে।
শহরের অন্যপ্রান্তে আরেকটি বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। তবে তালেবান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা খবর সংগ্রহ করছেন।
গত সপ্তাহে একই এলাকায় বিস্ফোরণ হয়। সেই বিস্ফোরণও একটি মিনিবাসে হয়েছিল। কাবুলে এখন ঘনঘন বিস্ফোরণ হচ্ছে। অধিকাংশই সংখ্যালঘু শিয়া অধ্যুষিত এলাকায়। আইএস খোরাসান এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে এবং তারা জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ২০ জন শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
আইএস খোরাসান তালেবানের বিরোধী। তালেবান ক্ষমতাদখল করার পর তারা একের পর এক আক্রমণ শানাচ্ছে।