কাবুলে সামরিক হাসপাতালে সন্ত্রাসী হামলায় অন্ততপক্ষে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় আইএস শাখা এর দায় স্বীকার করেছে।
বিজ্ঞাপন
বিস্ফোরণের পর আইএস সন্ত্রাসীরা গুলি চালাতে থাকে। তালেবান মুখপাত্র জানিয়েছেন, ১৫ মিনিটের মধ্যে সব আইএস সন্ত্রাসীকে মারা সম্ভব হয়। সন্ত্রাসীরা হাসপাতালের ভিতরে ঢুকতে পারেনি। সশস্ত্র তালেবান যোদ্ধাদের হেলিকপ্টার করে হাসপাতালে নিয়ে এসে নামিয়ে দেয়া হয়। তারাই আইএস সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করে।
তালেবান আফগানিস্তান দখল করার পর থেকে সেখানে আইএস সন্ত্রাসীরা সক্রিয়। তারা একের পর এক আক্রমণ শানাচ্ছে। হাসাপাতালে মোট ছয়জন আইএস আক্রমণকারী ছিল।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষের পাশাপাশি তালেবান যোদ্ধাও মারা গেছেন। বাসিন্দাদের শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হাসপাতালের সামনে থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুইটি হেলিকপ্টার ঘটনাস্থলে যায়।
হাসপাতালে শয্যা খালি নেই, প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যকর্মী নেই, আছে ঔষধ আর সরঞ্জামের সংকট৷ আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে বন্ধ অনেক হাসপাতাল, যেগুলো খোলা সেগুলোর এমনই পরিস্থিতি৷ কাবুলের একটি শিশু হাসপাতালের চিত্র দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: JORGE SILVA/REUTERS
এক ইনকিউবেটর, তিন শিশু
কাবুলের ইন্দিরা গান্ধি শিশু হাসপাতালের ২৪ অক্টোবরের চিত্র এটি৷ একটি ইনকিউবেটরের ভিতরেই জায়গা দিতে হয়েছে তিন শিশুকে৷
ছবি: JORGE SILVA/REUTERS
শয্যা ভাগাভাগি
শুধু ইনকিউবেটর নয় সাধারণ ইউনিটগুলোতেও রয়েছে অসুস্থ্য শিশুদের চাপ৷ ম্যাটারনিটি ইউনিটে এক শয্যাতেই দুই শিশুকে তাই শয্যা ভাগাভাগি করতে হচ্ছে৷
ছবি: JORGE SILVA/REUTERS
স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর চাপ
যেখানে একজন নার্সকে আগে দুইটি বা তিনটি শিশুর দেখাশোনা করতে হতো, সেখানে এখন কুড়ি বা তার বেশি শিশুর দেখভাল করতে হচ্ছে৷ তালেবান ক্ষমতা দখলের পরে অনেক স্বাস্থ্যকর্মী দেশ ছেড়ে যাওয়ায় এই চাপ বেড়েছে৷
ছবি: JORGE SILVA/REUTERS
অপুষ্ট শিশু
ধীরে ধীরে হাসপাতালে যুদ্ধাহত রোগীদের চাপ কমেছে৷ কিন্তু অর্থনৈতিক সংকটে বাড়ছে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা৷ এতে হাসপাতালগুলোতে প্রতিনিয়ত অপুষ্টিজনিত অসুখে ভোগা রোগী ও শিশুর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে৷
ছবি: JORGE SILVA/REUTERS
জাতিসংঘের সতর্কতা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে আফগানিস্তানের ৯৫ শতাংশ মানুষই নিত্যদিনের খাবার যোগাড় করতে পারছেন না৷ আন্তর্জাতিক সহায়তা কমায় দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ছে বলে সতর্ক করেছে তারা৷
ছবি: JORGE SILVA/REUTERS
যে কারণে বাড়তি চাপ
সোভিয়েত আমলে ১৯৮৫ সালে এই হাসপাতালের যাত্রা শুরু৷ এটি পরিচালনার জন্য অর্থের যোগান দিয়ে আসছিল ভারত৷ কাবুলের আশেপাশের প্রদেশের বিভিন্ন ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় ৩৬০ শয্যার হাসপাতালটিকে এখন সক্ষমতার চেয়েও বেশি চাপ বহন করতে হচ্ছে৷
ছবি: JORGE SILVA/REUTERS
আইসিইউ
হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নেই পর্যাপ্ত আলো৷ সেখানে উৎকণ্ঠিত অপেক্ষায় শিশুদের পরিবারের সদস্যরা৷
ছবি: JORGE SILVA/REUTERS
চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব
ইন্দিরা গান্ধি শিশু হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ লতিফ বাহের বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ হাসপাতালটিতে কিছু সাহায্য পাঠিয়েছে৷ কিন্তু ঔষধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের প্রয়োজন মেটাতে দ্রুতই আরো সহযোগিতা প্রয়োজন৷ তিনি বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো আরো সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে৷ আশা করি তারা তাদের প্রতিশ্রুতি রাখবে৷’’
ছবি: JORGE SILVA/REUTERS
8 ছবি1 | 8
এর আগেও ২০১১ ও ২০১৭ সালে ওই হাসপাতাল আক্রান্ত হয়েছিল। ২০১১ সালে তালেবান আত্মঘাতী দলের এক সদস্য হাসপাতালে ঢুকে বিস্ফোরণ ঘটায়। ২০১৭ সালে চিকিৎসাকর্মীর পোশাক পরে এক সন্ত্রাসী ভিতরে ঢুকে গুলি চালাতে থাকে। সেবার ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
তালেবান ও আইএস হলো কট্টরপন্থি সুন্নি সংগঠন, কিন্ত ইসলামিক আইনের ব্যাখ্যা নিয়ে দুই সংগঠনের মতভেদ আছে। তারা একে অপরকে শত্রু বলে মনে করে।