কাবুল থেকে দূতাবাস কর্মীদের দেশে ফেরাতে শুরু করলো অ্যামেরিকা। সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রক কাবুল থেকে দূতাবাস কর্মীদের ফিরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করে দিলো। তবে সেখানে দূতাবাস বন্ধ করে দেয়া হবে না। খুব সামান্য কর্মীকে রেখে কাজ চালানো হবে। তাদের নিরাপত্তার জন্য কিছু সেনা থাকবে।
আফগানিস্তানে অ্যামেরিকার কার্যকরি রাষ্ট্রদূত রস উইলসন জানিয়েছেন, ''সহিংসতা বাড়ছে। ঝুঁকিও বেড়ে গেছে। তাই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে দূতাবাস কোনো পরিষেবা কম করছে না। আফগানিস্তানকে সব ধরনের সাহায্য করা হবে।''
দুই দিন আগেই জেনারেল অস্টিন মিলার জানিয়েছিলেন, ''মার্কিন সেনা আফগানিস্তানে ক্লোসিং অপরেশন শুরু করেছে। এবার আফগান সেনাকেই দায়িত্ব নিতে হবে।''
জো বাইডেন আগেই ঘোষণা করেছিলেন, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা ১১ সেপ্টম্বরের মধ্যে দেশে ফিরবে। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর হলো ৯/১১-র ২০তম বার্ষিকী।
আফগানিস্তান যুদ্ধের যত ক্ষয়ক্ষতি
আফগানিস্তান থেকে দেশে ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছে মার্কিন সেনাদের৷ দেড় যুগেরও বেশি আগে শুরু হওয়া এই যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: Hoshang Hashimi/AP Photo/picture alliance
আফগানিস্তান যুদ্ধ নিয়ে গবেষণা
আফগানিস্তানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে একটি গবেষণা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটি৷ গবেষণায় নিহতের সংখ্যা, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয়ের পরিমাণসহ নানা দিক বেরিয়ে এসেছে৷ এ যুদ্ধে পাকিস্তানের কেমন ক্ষতি হয়েছে উঠে এসেছে সেই তথ্যও৷
ছবি: DW/S. Tanha
নিহতের সংখ্যা
২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে দুই লক্ষ ৪১ হাজার মানুষ মারা গেছেন৷
ছবি: picture-alliance/ASSOCIATED PRESS/R. Gul
আছে বেসামরিক লোকও
এই দুই দশকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের ৭১ হাজারের বেশি বেসামরিক মানুষ মারা গেছেন৷ তাছাড়া দুই হাজার চারশ ৪২ জন মার্কিন সেনা, প্রতিরক্ষা দপ্তরের ছয়জন বেসামরিক লোক, তিন হাজার নয়শ ৩৬ জন মার্কিন ঠিকাদার এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র জোটের এক হাজার একশ ৪৪ জন সেনা মারা গেছেন৷ যুদ্ধে ৬৬ হাজার থেকে ৬৯ হাজার আফগান সেনা ও পুলিশ মারা গেছে, পাকিস্তানের সেনা মারা গেছে ৯,৩১৪ জন৷
ছবি: picture alliance/dpa/J. Jalali
আছে সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীও
গবেষণা পত্রটি বলছে, এ সময়ের মধ্যে ১৩৬ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী এবং ৫৪৯ জন মানবাধিকারকর্মী মারা গেছেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/Shah Marai
সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে
গবেষণায় সরাসরি যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে৷ কিন্তু যুদ্ধ চলাকালীন রোগবালাই, খাবার কিংবা পানির সংকটেও আরো অনেক মানুষ নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Habibi
ব্যয়ের পরিমাণ
যুদ্ধ চলাকালীন এ বিশ বছরে মার্কিন যুত্তরাষ্ট্রকে গুণতে হয়েছে দুই দশমিক দুই ছয় ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার৷
ছবি: Imago Images/Zuma/A. Dinner
সৈন্য ফেরত নেওয়ার ঘোষণা
গত বুধবার আফগানিস্তান থেকে নিজেদের সেনা ফিরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন৷ ১ মে থেকে সৈন্য প্রত্যাহার শুরু করার কথা বলেন তিনি৷ এদিকে, বাইডেনের ঘোষণার পর ন্যাটো বাহিনীও তার সদস্যদের ফিরিয়ে আনার কথা জানায়৷
ছবি: Andrew Harnik/AFP/Getty Images
7 ছবি1 | 7
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমলে তালেবানের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছিল, তাতে ১ মে-র আগে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেয়ার কথা। তবে মিলার জানিয়েছেন, সেই প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। শুরু হয়ে গেছে দূতাবাস থেকে কর্মী দেশে ফেরানোও। তবে মার্কিন জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি জানিয়েছেন, ''আফগানিস্তানে ছোট আকারে দূতাবাস থাকবে। সেখানে সামান্য কয়েকজন সেনা থাকবেন। দূতাবাসের সুরক্ষার জন্য।''
তালেবান-সরকার চুক্তি হয়নি
তালেবানের সঙ্গে আফগানিস্তান সরকারের দীর্ঘ আলোচনা হলেও কোনো চুক্তি হয়নি। আপাতত আলোচনা বন্ধ। আগামী মাসে তা আবার শুরু হবে। তাই আশঙ্কা করা হচ্ছে, মার্কিন ও ন্যাটো সেনা চলে গেলে আফগানিস্তানে আবার গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
আফগানিস্তানে বিশেষ মার্কিন দূত জানিয়েছেন, মানবাধিকতার ভঙ্গ হলে আফগানিস্তানে মার্কিন সাহায্য বন্ধ করে দেয়া হবে। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, তালেবান যদি জোর করে সরকার দখল করে, তা হলে তাদেরও তার ফল পেতে হবে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তারা চাপের মুখে পড়বে। নিষেধাজ্ঞা জারি হবে।