রনির মামলা নিয়ে বিতর্ক
৩০ জুলাই ২০১৩গত ২০শে জুলাই তোপখানা এলাকায় সাংসদ রনির অফিসে ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের দুই সাংবাদিককে নির্যাতনের ঘটনায় মোট ২টি মামলা হয়৷ প্রথম মামলাটি করা হয় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের পক্ষ থেকে৷ তাতে সাংসদ রনিসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়৷ এই মামলায় রনি প্রথমে জামিন পেলেও পরে তাঁর জামিন বাতিল হয়৷ ২৪শে জুলাই থেকে তিনি কারাগারে আছেন৷
দ্বিতীয় মামলাটি করেন সাংসদ রনি৷ এতে ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের মালিক এবং শাসক দল আওয়ামী লীগের নেতা সালমান এফ রহমান এবং দুই সাংবাদিক ইমতিয়াজ মোমিন ও মোহসীন মুকুলকে আসামি করা হয়৷ তাঁদের বিরুদ্ধে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবিরও অভিযোগ করা হয়৷ রনির দায়ের করা মামলাটি মিথ্যা বলে ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে মঙ্গলবার আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দিয়েছেন শাহবাগ থানার সাব ইন্সপেক্টর আবু জাফর৷ তিনি মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে মিথ্যা মামলা করায় রনির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ারও আবেদন করেছেন৷
সাংসদ রনির আইনজীবী কবির হোসেন ডয়চে ভেলেকে জানান, পুলিশ তাঁদের মামলাটির সঠিক তদন্ত করেনি৷ তাঁর মতে, কোনো মামলার সপক্ষে যদি পর্যাপ্ত তথ্য উপাত্ত পাওয়া না যায়, তাহলে আরো তথ্যের জন্য বাদিকে নোটিশ করতে হয়৷ কিন্তু পুলিশ এই তদন্তে রনির সঙ্গে কোনো কথাই বলেনি, নোটিশ দেয়া তো দূরের কথা৷ বাদির কাছে তাঁর মামলার সপক্ষে যে সব তথ্য প্রমাণ আছে, তা পুলিশ আমলে নেয়ার কোন চেষ্টা না করে মাত্র ১০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত রিপোর্ট দিল, যা সন্দেহের সৃষ্টি করে৷ পুলিশ এত দ্রুত কাজ করে বলে অতীতে কোন নজির আছে বলে তাঁর জানা নেই৷ তিনি বলেন, এই চূড়ান্ত রিপোর্টের বিরুদ্ধে তাঁরা আদালতে আইনি লড়াই চালাবেন৷
মহানগর হাকিম আদালতের সিনিয়র আইনজীবী সৈয়দ আহমেদ গাজী ডয়চে ভেলেকে জানান, মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগে সাংসদ রনির বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়ার যে আবেদন করেছে, তা এখন আদালতের এখতিয়ার৷ আদালত যদি মনে করেন ব্যবস্থা নেয়া যায়, তাহলে তদন্ত কর্মকর্তাকে অভিযোগ দায়ের করতে বলবেন৷ তিনি জানান, মিথ্যা মামলা দায়ের করলে ফৌজদারি কার্যবিধির ২১১ ধারায় শাস্তির বিধান আছে৷ তাতে সর্বোচ্চ শাস্তি ৬ মাসের কারাদণ্ড৷ সৈয়দ আহমেদ গাজী জানান, তাঁর জানা মতে, অতীতে দু-একটি ঘটনায় আদালত এ ধরনের অভিযোগ আমলে নিয়েছেন৷ তবে কেউ শাস্তি পেয়েছেন বলে তাঁর জানা নেই৷
এদিকে পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু ডয়চে ভেলেকে জানান, এখন এই চূড়ান্ত রিপোর্টের ওপর শুনানি হবে৷ শুনানির পর আদালতের কাছে চূড়ান্ত রিপোর্ট যদি গ্রহণযোগ্য হয়, তাহলে মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ আনা হবে কিনা আদালত সেই সিদ্ধান্ত দেবেন৷
এদিকে শাহবাগ থানা পুলিশ জানায় সাংসদ রনির বিরুদ্ধে ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের দায়ের করা মামলার তদন্ত প্রায় শেষ৷ এই মামলায় রনিসহ আরো কয়েকজনকে সাংবাদিক নির্যাতনের জন্য দায়ী করে চার্জশিট দেয়া হবে৷