কার্বন নিঃসরণ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিষয়ে ইইউ-র গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত
২৪ অক্টোবর ২০১৪
ব্রাসেলসে কয়েক ঘণ্টার আলোচনার পর গ্রিনহাউস গ্যাস কমানো এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার পর্যায়ক্রমে বাড়াতে সম্মত হয়েছেন ইইউ নেতারা৷
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার সকালেই ইইউ প্রেসিডেন্ট হ্যার্মান ফান রম্পয় জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো ২০৩০ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে গ্রিনহাউস গ্যাসের উৎপাদন কমানোর নতুন লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে৷ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কার্বন নিঃসরণও ১৯৯০ সালের তুলনায় শতকরা ৪০ ভাগ পর্যন্ত কমানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবে সদস্য দেশগুলো৷ ইইউভুক্ত দেশগুলোর সরকার প্রধানরা ব্রাসেলসে ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি এবং জ্বালানি ব্যবহারে দক্ষতা বৃদ্ধি করতেও সম্মত হন৷
পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টিক বোতল প্রক্রিয়াজাতকরণ
গত কয়েক বছরে ঢাকায় প্লাস্টিক বোতলজাত পানীয় ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায়, তা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল৷ তবে বর্তমানে বেশ কিছু প্লাস্টিক বোতল প্রক্রিয়াজাতকরণ কারাখানা গড়ে ওঠায়, এ সমস্যা অনেকটাই দূর হওয়ার পথে৷
ছবি: DW/M. Mamun
পরিবেশের হুমকি প্লাস্টিক বোতল
ঢাকার একটি দোকানে প্লাস্টিক বোতলগুলোয় বিভিন্ন রকম পানীয়৷ গত কয়েক বছরে প্লাস্টিক বোতলজাত পানীয় বিক্রি বৃদ্ধি পাওয়ায়, তা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ ব্যবহৃত বোতল যেখানে সেখানে ফেলায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে৷ তবে এবার বেশ কয়েকটা প্লাস্টিক বোতল প্রক্রিয়াজাতকরণ কারাখানা গড়ে ওঠায় এ সমস্যা দূর হতে যাচ্ছে বলে আশা করছেন অনেকেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
কামরাঙ্গীর চরের কারখানা
ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যবহৃত প্লাস্টিক বোতল সংগ্রহ করে এনে বিক্রির জন্য পরিমাপ করা হচ্ছে কামরাঙ্গীর চরের একটি কারখানায়৷ এখানে ধরণ অনুযায়ী প্রতি কেজি বোতলের জন্য দেয়া হয়ে থাকে ছয় টাকা থেকে পনেরো টাকা৷
ছবি: DW/M. Mamun
শ্রমিকদের বেশিরভাগই নারী
পরিমাপের পর বাছাই করার জন্য বোতল নামাচ্ছেন এক মহিলা কর্মীরা৷ ঢাকার বিভিন্ন বোতল প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের অধিকাংশই নারী৷ কামরাঙ্গীরচরের এ সব কারখানায় মহিলা শ্রমিকেরা পুরুষের চেয়ে কম বেতন পান৷ এক সপ্তাহ কাজ করে একজন পুরুষ শ্রমিকের বেতন কমপক্ষে ২০০০ টাকা৷ অথচ সমান কিংবা তারও বেশি কাজ করে একজন নারী শ্রমিক পান মাত্র ১৪০০ টাকা৷
ছবি: DW/M. Mamun
কারখানার জন্য স্বতন্ত্র জায়গা
বিভিন্ন রঙের বোতলগুলো বাছাই করে আলাদা করা হয়৷ এ সব প্লাস্টিকের বোতল থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশে আসে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা৷ রপ্তানিতে উৎসাহ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকও এ সব রপ্তানীকারকদের দশ ভাগ ‘ইনসেনটিভ’ দিয়ে থাকে৷ এছাড়া এ ধরণের কারখানার জন্য স্বতন্ত্র একটি জায়গার কথাও ভাবছে বাংলাদেশে ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বড় সংগঠন এফবিসিসিআই৷
ছবি: DW/M. Mamun
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ
প্লাস্টিক বোতল প্রক্রিয়াকরণ কারখানার শ্রমিকরা কাজ করেন মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে৷ ছবিটা দেখেই যেটা একেবারে স্পষ্ট হয়ে উঠছে আপনার কাছে – তাই না?
ছবি: DW/M. Mamun
ধোয়া ও শুকানো
বোতলগুলো চূর্ণ করে ভাঙার পরে সেগুলো ফেলা হয় ছোট এই চৌবাচ্চায়৷ এরপর সেখান থেকে ধুয়ে সেগুলো শুকানোর জন্য দেয়া হয়৷
ছবি: DW/M. Mamun
রপ্তানির জন্য প্রস্তুত
পানিতে ধোয়া প্লাস্টিকের টুকরা শুকানো হচ্ছে বৈদ্যুতিক পাখার বাতাসে৷ বলা বাহুল্য, এগুলোকে সম্পূর্ণ পানিমুক্ত করে তবেই রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করা হয়৷
ছবি: DW/M. Mamun
চূড়ান্ত বাছাই
সবশেষে চূড়ান্ত বাছাই করা হয় টুকরাগুলো৷ এ সব প্লাস্টিকের টুকরাগুলো মূলত চীনে রপ্তানি করা হয়৷ তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশেও কয়েকটি কারখানা গড়ে উঠেছে, যেখানে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয় এ সব বর্জ্য প্লাস্টিক৷ এই প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হয় মূলত বিভিন্নরকম ফাইবার৷
ছবি: DW/M. Mamun
ঝুঁকিপূর্ণ কাজ
বোতলগুলোকে এ পর্যায়ে মেশিনে দিয়ে ভাঙা হয়৷ এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি মহিলা ও পুরুষেরা সমানভাবেই করে থাকেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
বর্জ্য অপসারণের পাশাপাশি বর্জ্য তৈরি
এ সব কারখানা ঢাকা থেকে বর্জ্য অপসারণে ভূমিকা রাখলেও, নিজেরাই আবার ভূমিকা রাখে বর্জ্য তৈরিতে৷ প্লাস্টিক বোতলের যেসব অংশের বাণিজ্যিক মূল্য নেই, সেসব সরাসরি ফেলা হয় পাশের বুড়িগঙ্গার শাখা নদীতে৷ ফলে এ নদীটির জলপ্রবাহ প্রায় বন্ধের উপক্রম৷
ছবি: DW/M. Mamun
10 ছবি1 | 10
ব্রাসেলস সম্মেলনে গৃহিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ইইউ-ভুক্ত দেশগুলো মোট জ্বালানির অন্তত ২৭ ভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি, অর্থাৎ সৌর এবং বায়ুশক্তি থেকে উৎপন্ন করবে৷ জ্বালানি ব্যবহারে দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জ্বালানির ব্যবহারও কমপক্ষে ২৭ ভাগ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে৷
পোল্যান্ডের কয়লা খনিগুলো রক্ষার বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হওয়ায় শুক্রবার ভোর পর্যন্ত চলে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক৷ বৈঠকে উষ্ণায়ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে যে অর্থনৈতিক ক্ষতি স্বীকার করতে হয় এ বিষয়টি নিয়েও বিতর্ক হয়েছে৷ ব্রিটেনও নিজস্ব শিল্প জগতের স্বার্থ দেখিয়ে লক্ষ্যমাত্রা আরও দুর্বল করতে বাকিদের কার্যত বাধ্য করেছে৷
আগামী বছর প্যারিসে অনুষ্ঠিত হবে পরিবেশ বিষয়ক বিশ্ব সম্মেলন৷ সেখানে বিশ্বের প্রায় সব দেশই অংশ নেবে৷