1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কার্বন বশে আনতে বহুমুখী উদ্যোগ

১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২

কার্বন নির্গমন কমাতে গোটা বিশ্বে নানা উদ্যোগ চলছে৷ বিকল্প জ্বালানির পাশাপাশি কার্বন-ডাই-অক্সাইড বশে এনে অন্যভাবে প্রয়োগের নানা সম্ভাবনাও খুলে যাচ্ছে৷ বাণিজ্যিক সাফল্যের আশায় এমন সব ক্ষেত্রের বিপুল সম্ভাবনাও রয়েছে৷

ছবি: Oliver Berg/dpa/picture alliance

এমন ভবিষ্যৎ, যেখানে আপনার সাবান দূষিত বায়ু দিয়ে তৈরি৷ অথবা আপনার ভোদকাও নির্গত গ্যাস দিয়ে তৈরি৷ এনগেজমেন্টের আংটিও যদি এমন উপকরণ দিয়ে তৈরি হয়! ঘটনা হলে, সেই দিন হয়তো আর বেশি দূরে নেই৷

প্যারিস জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে গোটা বিশ্বকে ২০২৫ সালের মধ্যে দশ কোটি টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড দূর করতে হবে৷ ফলে আমাদের আরও দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে৷

জার্মানি-ভিত্তিক কোভেস্ট্রো নামের কোম্পানি কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মতো দূষনকারী গ্যাসকে প্রায় যে কোনো বস্তুতে রূপান্তর করতে পারে৷ বিছানার তোশক, চিকিৎসা সরঞ্জাম, মোজা, জুতা, গাড়ির সিট, মোবাইল ফোনের কেস, ইনসুলেশন, মেঝে থেকে শুরু করে দীর্ঘ সেই তালিকা৷

শুনতে ভালো লাগলেও প্রশ্ন হলো, এভাবে কি কার্বনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমানো সম্ভব? রিসাইকেল করা কার্বন দেখতেই বা কেমন?

আসলে কিন্তু বহু দশক ধরেই ‘কার্বন ক্যাপচার’ প্রক্রিয়া চলে আসছে৷ ১৯৭০-এর দশকে তেল কোম্পানিগুলি নির্গত কার্বন-ডাই-অক্সাইড ধারণ করে তৈলকূপে ঢুকিয়ে আরও বেশি পেট্রোলিয়াম উত্তোলন করতো৷ আমরা সেই দূষণ রূপান্তরিত করে মাটির নীচে জমাও রাখতে পারি৷

কার্বন-ডাই-অক্সাইড দিয়ে তৈরি জুতা, মোজা!

03:44

This browser does not support the video element.

কিন্তু রিসাইক্লিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অন্য কোনো পদার্থে রূপান্তর করলে কেমন হয়? সেই প্রযুক্তির নাম ‘কার্বন ক্যাপচার অ্যান্ড ইউটিলাইজেশন’ বা সিসিইউ৷ বর্তমানে অন্যতম চর্চার বিষয় এটি৷ রিসাইকেল করা কার্বন দিয়ে তাহলে কী তৈরি করা যায়?

সুজান ফ্যান্সি অ্যামেরিকার মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল সিওটু ইনিশিয়েটিভের প্রোগ্রাম ম্যানেজার৷ তিনি সিসিইউ নিয়ে খুবই উৎসাহী৷ সুজান বলেন, ‘‘জামাকাপড়ের দোকানে আজকাল বেশিরভাগ সিন্থেটিক কাপড়ের পোশাক পাওয়া যায়৷ সবই জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানি দিয়ে তৈরি৷’’

যেমন এক তোশক৷ এমন ধরনের প্রায় সবকিছুই পলিইউরিথেন ফোম দিয়ে তৈরি৷ ক্রিস্টফ গ্যুর্টলার কোভেস্ট্রো কোম্পানিতে পণ্য সৃষ্টি করেন৷ ফোম বা ফেনা সম্পর্কে তার মতো জ্ঞান অন্য কারও নেই৷ তিনি বলেন, ‘‘এখানে পলিইউরিথেন ফোমের বড় ব্লক রয়েছে, যার ওজন ১০ থেকে ২০ কিলো৷ আমরা কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিয়ে জীবাশ্ম উপকরণের আংশিক বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করি, যা এমন ম্যাট্রেস তৈরির কাজে লাগে৷’’

এই প্রক্রিয়ায় রিসাইকেল করা কার্বন-ডাই-অক্সাইড ২০ শতাংশ পর্যন্ত জীবাশ্মভিত্তিক উৎসের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নে বছরে তিন কোটিরও বেশি তোশক ফেলে দেওয়া হয়৷ সে সব একত্র করলে মাউন্ট এভারেস্টের ৬৭৮ গুণ উচ্চতা ছুঁতে পারতো৷ ক্রিস্টফ বলেন, ‘‘সাংবাদিকেরা সব সময়ে প্রশ্ন করেন, শুধু এই প্রক্রিয়া দিয়ে আপনি পৃথিবী বাঁচাতে পারবেন কি? আমি বলি, একেবারে ঠিক৷ আর সেটা মোটেই উদ্দেশ্য নয়৷’’

তবে এমন সব পণ্য উৎপাদন করতে অনেক জ্বালানি ব্যবহৃত হয়৷ কার্বন-ডাই-অক্সাইড পলিমার ও জ্বালানিতে রূপান্তর করার প্রক্রিয়ায় আরও জ্বালানির প্রয়োজন৷ তবে শুধু গ্রিন এনার্জি থাকলেই এটা করা যায়৷

গ্যোর্গে ডেয়ারব্যার্গ কেমিকাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে রিসাইকেল করা সিওটু পণ্য ও উপাদান তৈরির ক্ষেত্রে জ্বালানির সাশ্রয়ের লক্ষ্যে কাজ করছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার মতে এটাই হলো সমস্যা৷ গ্রিন কেমিক্যাল ও গ্রিন স্টিল তৈরির জন্য আমাদের যথেষ্ট গ্রিন এনার্জি নেই৷’’

কার্বন নেগেটিভ মোজা কিনেও আমরা সম্ভবত আমাদের পৃথিবী বাঁচাতে পারবো না৷ যে পরিমাণ কার্বন-ডাই-অক্সাইড রাসায়নিক, প্লাস্টিক ও ফাইবারের মধ্যে থাকে, সেই সামান্য পরিমাণ সাশ্রয় করে বৈশ্বিক নির্গমনের ক্ষেত্রে তেমন পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়৷ সেটির পরিমাণ বছরে বড়জোর চার থেকে নয় কোটি মেট্রিক টন৷ অন্যদিকে আমরা বছরে প্রায় ৩,৩০০ কোটি টন কার্বন নির্গমন করি৷

বেইনা শু/এসবি

গত নভেম্বরের ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ