কাল আবার বাকের ভাইয়ের ‘ফাঁসি দেখব’
৬ মে ২০২০নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশ টেলিভিশন বা বিটিভিতে প্রচারিত হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘কোথাও কেউ নেই’ ধারাবাহিক নাটকের একটি চরিত্র বাকের ভাই৷ আর তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়েছিল বদি৷
শেষ পর্বে বাকের ভাইয়ের ফাঁসি হবে, এই খবর জানাজানি হলে সারা দেশে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল৷ মনে আছে, তখন পত্রিকায় গুরুত্ব দিয়ে সেসব বিক্ষোভের খবর বেরিয়েছিল৷ হুমায়ূন আহমেদকে তাঁর সিদ্ধান্ত বদলের আহ্বানও জানানো হয়েছিল৷ কিন্তু তিনি তা করবেন না বললে তাঁকে হুমকিও দেয়া হয়৷ পরে নিজের নিরাপত্তায় পুলিশের সহায়তা নিতে হয়েছিল হুমায়ূন আহমেদকে৷
এরপর যখন বাকের ভাইয়ের ফাঁসি হয় তখন দেশের বিভিন্ন স্থানে কুলখানিও হয়েছে৷ সেই খবরও সংবাদপত্রে পড়েছি৷
সবকিছু ঠিক থাকলে কাল বৃহস্পতিবার আবারও বিটিভিতে ‘কোথাও কেউ নেই’ এর শেষ পর্বটি প্রচারিত হবে৷ করোনার কারণে ঘরে বসে থাকা মানুষের একঘেয়েমি কাটাতে ৬ এপ্রিল থেকে প্রতিদিন রাত সাড়ে আটটায় ‘কোথাও কেউ নেই’ দেখাচ্ছে বিটিভি৷
এর সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের লেখা আরেক ধারাবাহিক ‘বহুব্রীহি’ও দেখানো হয়েছে৷ সেটির প্রচার শেষ হওয়ার পর এখন চলছে একই লেখকের লেখা আরেক জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘এইসব দিনরাত্রি’৷ এই নাটকটি শেষ হয়েছিল টুনি নামের ছোট্ট এক মেয়ের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে৷ সে লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত ছিল৷ আবেগী বাঙালি সেই মেয়েটিকে বাঁচাতেও হুমায়ূন আহমেদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছিল৷
করোনার কারণে পুরনো জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটকগুলো দেখানোর বিটিভির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী৷ এসব দেখে তাদের অনেকে নস্টালজিয়ায় ভুগছেন৷ কারও মনে পড়ে যাচ্ছে এসব নাটক দেখার সময়কার বিভিন্ন স্মৃতি৷ এ যেন এক ধাক্কায় ত্রিশ বছর আগে ফিরে যাওয়া!
নব্বইয়ের দশকের কিশোর-কিশোরীদের কাছে আসাদুজ্জামান নূর এখনও বাকের ভাই৷ সুবর্ণা মুস্তাফা এখনও মুনা আপা৷
পুরনো নাটকগুলো দেখতে গিয়ে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের একটা কথা মনে পড়ছে৷ সম্ভবত তিনিই কোনো একসময় বলেছিলেন, তাঁরা যখন লেখাপড়া করেছেন তখন স্কুল ঘরগুলো ছিল কাঁচা, কিন্তু বেশিরভাগ শিক্ষকই ছিলেন পাকা৷ আর এখন স্কুল ঘরগুলোর বেশিরভাগই হয়েছে পাকা, কিন্তু এখন শিক্ষকেরা কাঁচা৷
প্রিয় পাঠক, বর্তমান আর পুরনো সময়ে নির্মিত নাটক দেখলে আপনারও কি এমন মনে হয়?