1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কাশ্মীরে বন্যা সহায়তা

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪

ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যাপক ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ চলেছে লাগাতার৷ অনুরূপ পরিস্থিতি পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে৷

গত ৫০ বছরে এত ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিত জম্মু-কাশ্মীরে আর হয়নিছবি: picture-alliance/dpa/Farooq Khan

তাই দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে চলেছে বন্যা দুর্গতদের ‘সাহায্যদানের প্রস্তাব নিয়ে কূটনীতি’৷

গত ৫০ বছরে এত ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিত জম্মু-কাশ্মীরে আর হয়নি৷ অবিরাম বর্ষণে জলস্ফীতি ঝিলাম, চিনাব ও তাউই নদী ভাসিয়ে নিয়ে গেছে রাজ্যের বেশির ভাগ এলাকা৷ এমনকি হাইকোর্ট, সচিবালয়ও বাদ যায়নি৷ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আকাশপথে বন্যা প্লাবিত এলাকাগুলি ঘুরে দেখে বন্যা পরিস্থিতিকে জাতীয় বিপর্যয় বলে ঘোষণা করেছেন৷ জম্মু-কাশ্মীর সরকারকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেছেন যে, গোটা দেশ রাজ্যবাসীদের দুরবস্থার ভাগীদার৷ এছাড়া বন্যা দুর্গতদের জন্য ১,০০০ কোটি টাকার প্যাকেজ সাহায্য দেবার কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার সঙ্গে উদ্ধার ও ত্রাণ সাহায্য নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি৷ যুদ্ধকালীন তৎপরাতায় এ কাজে নামানো হয়েছে সেনা ও বিমান বাহিনীকে৷ নিয়োগ করা হয়েছে ২৬টি হেলিকপ্টার ও ২৩টি ভারি মালবাহী বিমান৷ বিমানযোগে পাঠানো হয়েছে ১৭০টি নৌকা৷ পাঠানো হয়েছে পাঁচটি বিপর্যয় মোকাবিলা ‘টিম'৷ দিল্লি, জম্মু ও শ্রীনগরে খোলা হয়েছে ‘কন্ট্রোল রুম'৷ এ পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার ব্যক্তিকে৷ তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ ভেঙে পড়া ব্রিজ, রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি দ্রুত মেরামতের জন্য সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং দলকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷

কাশ্মীরে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীছবি: Reuters/Mukesh Gupta

ত্রাণ ও উদ্ধার কাজের গতি দ্রুততর করার দিকে লাগাতার নজর রেখে চলেছে ওমর আবদুল্লা সরকার৷ গোটা রাজ্য এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপের চেহারা নিয়েছে৷ শ্রীনগরের কেন্দ্রস্থলে কোমর সমান জল৷ অন্যত্র জলস্তর দোতালার সমান৷ প্রশাসন বন্যা কবলিত মানুষজনকে তিন তলায় আশ্রয় নেবার পরামর্শ দেয়া হয়েছে৷ সেখান থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হবে৷ টেলিফোন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন৷ শ্রীনগর রেডিও থেকে সম্প্রচার বন্ধ৷ টেলিভিশন সম্প্রচার অন্য জায়গা থেকে অস্থায়ী স্টুডিও থেকে আপাতত করা হচ্ছে৷ জানা গেছে, বন্যায় মৃতদের প্রত্যেক পরিবারকে ২ লাখ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা দেয়া হবে৷ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে দেয়া ৫ কোটি টাকা দিয়ে কম্বল, দুধ ও সৌরবাতি কেনা হবে৷

ছবি: Tauseef Mustafa/AFP/Getty Images

নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপাশে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বন্যা পরিস্থিতিও একই রকম ভয়াবহ৷ সেদিকে তাকিয়ে পাকিস্তানকে সব রকম সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী৷ বলেছেন, এই রকম প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ভারত পাশে আছে৷ সব রকম সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছেন৷ ভারতের এই মানবিক সাহায্যের প্রস্তাব সম্পর্কে কোনো মন্তব্য না করে অনুরূপ প্রস্তাব এসেছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের কাছ থেকে৷ উনি বলেছেন, কাশ্মীরের অপর অংশের বন্যা দুর্গতদের পাকিস্তান সব রকম মানবিক সহায়তা দিতে প্রস্তুত৷

ছবি: Tauseef Mustafa/AFP/Getty Images

দু'দেশের কূটনৈতিক মহল মনে করেন, বন্যা দুর্গতদের মানবিক সাহায্য নিয়েও একটা কূটনীতি চলেছে, যেটা হিমঘরে গিয়েছিল দ্বিপাক্ষিক পররাষ্ট্রসচিব স্তরের বৈঠক স্থগিত রাখার মোদী সরকারের সিদ্ধান্তে৷ কিন্তু কোনো প্রধানমন্ত্রীই চাননি যোগসূত্রটা একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাক৷ নওয়াজ শরিফ সদর্থক বার্তা দেন কিছুদিন আগে মোদীকে এক ঝুড়ি পাকিস্তানি আম পাঠিয়ে৷ এই রকম প্রতীকী বার্তার নিহিতার্থ হলো, এ মাসে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় যখন উভয় প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন, তখন যেন উভয় প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একটা পার্শ্ব বৈঠক সম্ভব হয়৷

উল্লেখ্য, অতীতেও এই ধরণের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মানবিক সাহায্য উভয় দেশ একে অপরের দিকে বাড়িয়ে দিয়েছিল৷ ২০০৫ সালে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ভারত ব্যাপক ত্রাণ সাহায্য পাঠিয়েছিল৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ