সোমবার কিয়েভের একটি শপিং মলে হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার সেনা বাহিনী। রকেট হামলায় কার্যত গোটা বাড়িটি ধসে গেছে। ইউক্রেন জানিয়েছে, ওই হামলায় অন্তত আটজন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তারা ওই ভবনে আশ্রয় নিয়েছিলেন। রাশিয়ার দাবি, বন্ধ শপিং মলে ইউক্রেনের সেনা রকেট মজুত করছিল।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ জানিয়েছেন, ''ওই শপিং মলটিতে রকেট মজুত করে রাখা হচ্ছিল। সে কারণেই সেখানে হামলা চালানো হয়েছে। ওই মলের পাশে রকেট লঞ্চারও তৈরি করা হয়েছিল। গোটা এলাকাকে সে জন্য ধ্বংস করা হয়েছে।''
ইউক্রেন ছেড়ে বিপাকে বিদেশিরা
01:35
ইউক্রেন অবশ্য রাশিয়ার দাবি স্বীকার করেনি। তারা জানিয়েছে, ওই ভবনটি কেবলমাত্র আশ্রয় শিবির হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। রাশিয়ার আক্রমণে অন্তত আটজন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
রাশিয়ার সেনার মৃত্যু
এদিকে রাশিয়ার একটি সংবাদপত্র ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার সেনার মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশ করে দিয়েছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই অবশ্য তারা ডিলিট করে দেয়। কমসোমোলসকায়া প্রাভদা একটি প্রতিবেদনে লিখেছিল, তিন সপ্তাহ লড়াইয়ের পর প্রায় ১০ হাজার রাশিয়ার সেনার মৃত্যু হয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই তা ডিলিট করে দেওয়া হয়। এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেছিলেন, অন্তত ১৪ হাজার রাশিয়ার সেনার মৃত্যু হয়েছে। উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের যুদ্ধে নয় বছরে ১৫ হাজার রাশিয়ার সেনার মৃত্যু হয়েছিল। সেখানে ইউক্রেনে মাত্র তিন সপ্তাহে ১০ হাজার রাশিয়ার সেনার মৃত্যু গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়ার সরকারি সূত্রের অবশ্য দাবি, এখনো পর্যন্ত ৪৯৮ জন সেনার মৃত্যু হয়েছে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিশ্বময় জেলেনস্কি
তিন বছর আগে ‘মস্কো-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের’ বিরুদ্ধে লড়াই শেষ করার প্রত্যয় নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন ভোলোদিমির জেলেনস্কি৷ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এখন দেশরক্ষার লড়াইয়ের নেতৃত্বে৷ ক্রমশ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছেন তিনি...
ছবি: Piotr Skornicki/AGENCJA WYBORCZA/Reuters
আহত যোদ্ধার পাশে
যুদ্ধ চলছে৷ এ অবস্থায় প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে বসে থাকেন কী করে? জেলেনস্কি দেশের জনগণকে উজ্জীবিত করতে বার্তা দিচ্ছেন, যুদ্ধ বন্ধে কিংবা রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি, হাসপাতালে ছুটে যাচ্ছেন যুদ্ধাহতদের দেখতে৷ওপরের ছবিতে কিয়েভের সামরিক হাসপাতালে আহত এক সৈনিকের পাশে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি৷
গত ১৬ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন জেলেনস্কি৷ ওপরের ছবিতে তারই একটি মুহূর্ত৷
ছবি: J. Scott Applewhite/Pool/REUTERS
সাক্ষাৎকার শেষে স্বস্তি
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে আগেও অনেক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন জেলেনস্কি৷ তবে যুদ্ধ শুরুর পর তার বক্তব্য শোনার আগ্রহ সারা বিশ্বেই অনেক বেড়েছে৷ এক সাক্ষাৎকার শেষে ছবির জন্য পোজ দিচ্ছেন কৌতুক অভিনেতা থেকে প্রেসিডেন্ট হওয়া জেলেনস্কি৷
ছবি: Umit Bektas/REUTERS
কাতেরিয়ানাকে সমবেদনা
রুশ হামলা থেকে বাঁচতে পরিবারের অন্যদের সঙ্গে ভোরজেল শহর থেকে পালাচ্ছিল কাতেরিয়ানা ভ্লাসেঙ্কো৷ কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি৷ আহত হয়ে কাতেরিয়ানা এখন কিয়েভের হাসপাতালে৷ ১৭ মার্চ ফুল নিয়ে তাকে দেখতে গিয়েছিলেন জেলেনস্কি৷ প্রেসিডেন্টকে পাশে পেয়ে মনে বেশ জোর পেয়েছে ১৬ বছর বয়সি কিশোরী৷
ইউক্রেনে যারা আছেন, তারা প্রতিটি মুহূর্ত কাটাচ্ছেন মৃত্যুর আতঙ্ক নিয়ে৷ যারা দেশ ছেড়েছেন, তারা প্রতিবেশী দেশে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ের মাঝেও নিচ্ছেন দেশের খবর৷ সুযোগ পেলে জেলেনস্কির ভাষণ শোনেন না এমন ইউক্রেনীয় খুঁজে পাওয়া কঠিন৷ ছবিতে মোবাইল ফোনে জেলেনস্কির ভাষণ শুনছেন হাঙ্গেরিতে আশ্রয় নেয়া এক ইউক্রেনীয় নারী৷
ছবি: Bernadett Szabo/REUTERS
ট্রুডোর সম্মান
গত ১৫ মার্চ ভিডিও কলের মাধ্যমে ক্যানাডার সংসদে ভাষণ দেন জেলেনস্কি৷ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য শুরু হতেই আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়ান ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো৷
ছবি: Patrick Doyle/REUTERS
বালিশে জেলেনস্কি
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নানা পণ্যে দেখা যাচ্ছে জেলেনস্কির ছবি৷ চেক প্রজাতন্ত্রের চেসকা লিপা শহরে তার ছবি সম্বলিত বালিশের কাভার গুছিয়ে রাখছেন এক নারী৷
ছবি: REUTERS
যুক্তরাষ্ট্রের রাস্তায়
ওয়াশিংটনে রুশ অ্যাম্বাসির পাশের রাস্তার পথ-নির্দেশিকাতেও দেখা যাচ্ছে জেলেনস্কির নাম৷
ছবি: Leah Millis/REUTERS
পোল্যান্ডের রাস্তায়
পোল্যান্ডের রাস্তায়ও জেলেনস্কির দেখা মিলছে৷ এক শিল্পী হ্যারি পটারের আদলে ম্যুরাল এঁকে জেলেনস্কির নামের প্রথম অক্ষর ‘জেড’ লিখে দিয়েছেন কপালে৷
ছবি: Piotr Skornicki/AGENCJA WYBORCZA/Reuters
জরুরি সেবাকর্মীদের সঙ্গে
ইউক্রেনে যারা যেভাবেই দেশ ও জনগণের জীবন রক্ষায় কাজ করছেন, তাদের সবার পাশেই থাকার চেষ্টা করছেন জেলেনস্কি৷ ওপরের ছবিতে কিয়েভের এক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে তাকে৷
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ফের একবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে আলোচনায় বসার আর্জি জানিয়েছেন। জেলেনস্কির বক্তব্য, ''যে কোনো ফর্মে বৈঠক করতেই তিনি প্রস্তুত। বৈঠক না হলে বোঝা যাবে না, যুদ্ধ বন্ধের জন্য রাশিয়া কী পদক্ষেপ নিতে চায়।''
তবে একইসঙ্গে জেলেনস্কি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কোনোভাবেই পুটিনের শর্ত মেনে ইউক্রেন আত্মসমর্পণ করবে না। জেলেনস্কির বক্তব্য, ''রাশিয়া চাইছে কিয়েভ, খারকিভ এবং মারিউপলের যোদ্ধারা আত্মসমর্পণ করুক। কিন্তু রাশিয়ার দাবির সামনে আমরা মাথা নত করব না।''
চীনের বিরুদ্ধে সরব
এদিকে ফের চীনের বিরুদ্ধে সরব হলো অ্যামেরিকা। জার্মানিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ইউক্রেন আক্রমণে রাশিয়াকে সাহায্য করছে চীন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আগে বলেছিলেন, এই লড়াই তিনি নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়েছেন। কিন্তু রাশিয়ার দাবি, ভিতরে ভিতরে চীন রাশিয়াকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্টও এই অভিযোগ করেছিলেন।