রাশিয়ার সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ ঘেষণা করলো কিয়েভের সিটি কাউন্সিল। মানবাধিকার সংগঠনের মতে, এই সিদ্ধান্ত ঠিক নয়।
বিজ্ঞাপন
কিয়েভে আর রাশিয়ার গান শোনা যাবে না। রাস্তায় কেউ রাশিয়ার গানের সুর বাজাতে পারবেন না। রাশিয়ার বই নিষিদ্ধ। রাশিয়ার সাহিত্য ও সংস্কৃতির ছোঁয়া আপাতত কিয়েভে আর পাওয়া যাবে না। সিটি কাউন্সিল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ইউক্রেনের এমপিরা বলেছেন, রুশ ভাষা হলো আক্রমণকারীদের ভাষা। তাই কিয়েভে এই ভাষার কোনো স্থান নেই। তারা আগ্রাসনকারীদের সংস্কৃতি থেকে নিজেদের বাঁচাতে চান। তাই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রাইমিয়া দখল করার পর ইউক্রেনে এই দাবি উঠেছিল। তখন অবশ্য এরকম সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এবার হলো। জানানো হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা সাময়িক, স্থায়ী নয়।
ইউক্রেন সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিজের তরফে জানানো হয়েছে, ''এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা অসাংবিধানিক ও বিভেদ তৈরি করে। এটা কিয়েভের পুর সংস্থার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। একমাত্র ইউক্রেনের পার্লামেন্টই এই ব্যাপারে আইন করতে পারে।''
ইউক্রেনের শিল্পী বেলোরাসেট বলেছেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত নয়।
যখন সাবওয়েই তাদের ঘর, স্কুল এবং বিনোদনকেন্দ্র
ইউক্রেন যুদ্ধ বদলে দিয়েছে তাদের জীবন৷ সব সময় যেন প্রাণ হাতে নিয়ে বাঁচতে হয় তাদের৷ যেখানে যখন রাশিয়ার হামলা সেখানে তখনই হতে পারে জীবনাবসান৷ তবুও কাটছে জীবন৷ সাবওয়েতেও চলছে বসবাস, লেখাপড়া এবং বিনোদন৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Viacheslav Ratynskyi/REUTERS
আকস্মিক হামলা
রাশিয়ার মিসাইল বা বোমা হামলার বিভীষিকা নেমে আসে যখন তখন৷ তাই ইউক্রেনের মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাবার প্রস্তুতি রাখতে হয় সব সময়৷ রাজধানী কিয়েভেও জীবন চলছে একই নিয়মে৷
ছবি: Valentyn Ogirenko/REUTERS
এসকেলেটর যেন বিশ্রামাগার
প্রাণভয়ে মেট্রোস্টেশনে আশ্রয় নিয়েছেন তারা৷ তখন এসকেলেটরের সিঁড়িই তাদের আশ্রয়স্থল, সেখানে কেটে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা৷ মিসাইল বা বোমা হামলার বিকট শব্দ না থামা পর্যন্ত কারো মেট্রো স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার উপায় নেই৷ গত ২৯ মে-র তোলা ছবি৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
শত শত মানুষের ভিড়
এই ছবিটিও গত ২৯ মে-র৷ কিয়েভে তখন আবার শুরু হয়েছে রাশিয়ার বিমান হামলা৷ মেট্রো স্টেশনটিতে তাই শত শত মানুষের ভিড়৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
সৈনিকের অসহায়ত্ব
হঠাৎ আকাশ থেকে বোমা হামলা শুরু হলে সৈন্যদেরও বিশেষ কিছু করার থাকে না৷ তাদেরও তখন ছুটতে হয় নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে৷ ২৯ মে-র ছবিটিতে ধরা পড়েছে এক মেট্রোস্টেশনে ইউক্রেনের দুই সেনা সদস্যের অসহায়ত্ব৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
বাবা-মেয়ে
এক সেনাসদস্য মেয়েকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন মেট্রোস্টেশনে৷ বাবার কাছে বসে মেয়েটি মন দিয়েছে ট্যাবে৷ বাবা নিজের টুপি পরিয়ে দিয়েছেন মেয়েকে৷ গত ৯ মার্চের ছবি৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
অস্থায়ী স্কুল
রাশিয়ার হামলা শুরু হলে কখনো কখনো মেট্রোস্টেশন যে অস্থায়ী স্কুলের রূপ নেয়, ওপরের ছবিটি তার প্রমাণ৷ স্কুলের শিক্ষার্থীদের সেখানেই ক্লাস নিচ্ছেন এক শিক্ষক৷
ছবি: Viacheslav Ratynskyi/REUTERS
সাবওয়েতে কনসার্ট!
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে একটা সময় পর্যন্ত মেট্রো রেল স্টেশনে আশ্রয় নেয়া মানুষদের প্রতিটি মুহূর্ত কাটতো মহাতঙ্কে৷ তবে ধীরে ধীরে যুদ্ধের এই নির্মম বাস্তবতা মানতে শুরু করেন তারা৷ বিশেষ করে এক বছর আগে রক ব্যান্ড ইউ-টু যখন সেখানে এসে কনসার্ট করলো, ইউক্রেনবাসীরাও যেন বুঝতে শুরু করলেন যুদ্ধপরিস্থিতিতে সব সময় সব পরিস্থিতেই মানিয়ে নিতে হবে নিজেদের৷ ওপরের ছবিতে নেচে নেচে গাইছেন ইউ-টু তারকা বোনো৷
ছবি: VALENTYN OGIRENKO/REUTERS
শিল্পী-সেনার দ্বৈত সংগীত
ইউ-টু তারকা বোনোর সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে গাইছেন ইউক্রেনের এক সেনা সদস্য৷ কিয়েভের এক মেট্রোস্টেশনের এই কনসার্টের ছবিটি ২০২২ সালের ৮ মে তোলা৷
ছবি: VALENTYN OGIRENKO/REUTERS
মগ্ন শ্রোতা
পল ডেভিড হিউসন, অর্থাৎ ইউ-টু রক ব্যান্ডের ভোকালিস্ট বোনোর গান মন দিয়ে শুনছেন কিয়েভের কয়েক শ মানুষ৷ গত বছরের ৮ মে-র ছবি৷
ছবি: VALENTYN OGIRENKO/REUTERS
সাবওয়েতে ভাষাশিক্ষা
বিমান হামলা সেই কখন শুরু হয়েছে, থামার কোনো লক্ষণই নেই৷ তাই এক শিক্ষক মেট্রোরেলেই শুরু করে দিয়েছেন ভাষা শেখানোর ক্লাস৷ গত ৩ মে-র ছবি৷
ছবি: Viacheslav Ratynskyi/REUTERS
10 ছবি1 | 10
ইউক্রেনকে অস্ত্র কেনার জন্য সাহায্য
রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্যই এই সাহায্য দিচ্ছে ইইউ। চার বছরে দুই হাজার দুইশ কোটি ডলার দেয়া হবে।
ইইউ-র পররাষ্ট্র নীতি সংক্রান্ত প্রধান জোসেপ বরেল এনিয়ে বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ইইউ-র পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারপর বরেল জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে এবার দীর্ঘমেয়াদী সাহায্য করা হবে। ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং তারা যাতে প্রতিরক্ষাক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে সেজন্যই এই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
বরেল বলেছেন, ''আমরা প্রতি বছর ইউক্রেনকে পাঁচশ কোটি ডলার দেব। আগামী চার বছর ধরে এই সাহায্য দেয়া হবে। এর ফলে প্রতিরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ পেয়ে যাবে ইউক্রেন। তাদের নিরাপত্তার জন্য দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে কত খরচ হতে পারে, তা হিসাব করেই এই অর্থসাহায্য করা হচ্ছে।''
ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি জি৭ এবং ন্যাটোর বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। ন্যাটোর বৈঠকে বলা হয়েছে, ইউক্রেন যাতে ভবিষ্যতে এই জোটে ঢুকতে পারে তা দেখা হবে। তবে এখনই ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করা হচ্ছে না। শুধু বলা হয়েছে, ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ হলো ন্যাটো। এরপর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট তার হতাশার কথা জানিয়েছেন।
তখনই ইউক্রেনকে আরো সামরিক ও অর্থসাহায্য দেয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। সেই কাজটাই করলেন ইইউ-র পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। এবার ৩১ অগাস্ট ইইউ-র ফরেন অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিলে বিষয়টি নিয়ে আরো বিস্তারিত বিতর্ক হবে। তবে হাঙ্গেরির মতো কিছু দেশ এতে আপত্তি জানাতে পারে।