কিয়েভে এক ভারতীয় ছাত্রের গুলি লেগেছে বলে জানা গেছে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ইউক্রেনে এখনো আটক বহু ভারতীয়। এর মধ্যে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা অনেক। কিয়েভ এবং খারকিভ থেকে বের হতে পারেননি বহু ছাত্র। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় একাধিক বিবৃতি দিয়ে ছাত্রদের কিয়েভ এবং খারকিভ ছাড়তে বলেছিল। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে অনেকেই সে চেষ্টা করেছে। পালানোর সময়েই এক ছাত্রের গুলি লেগেছে বলে জানা গেছে।
খাদ্য, ওষুধের সংকট আর আতঙ্কের শহর কিয়েভ
কয়েকদিন আগেও ইউরোপের অন্য দেশগুলোর রাজধানীর মতোই শান্তিময় ব্যস্ততার শহর ছিল কিয়েভ৷ রাশিয়ার হামলা শুরুর পর বদলে গেছে সব৷ ইউক্রেনের রাজধানীর মানুষের এখন পর্যাপ্ত খাবার, ওষুধ নেই, নেই জীবনের নিরাপত্তা...
ছবি: Emilio Morenatti/AP/picture alliance
সার্বক্ষণিক আতঙ্ক
রাশিয়ার সেনাবাহিনীর হামলার প্রধান লক্ষ্য রাজধানী কিয়েভ৷ হঠাৎ হঠাৎ তাই বোমার আঘাতে কেঁপে উঠছে কিয়েভ৷ ওপরের ছবিতে তেমনই এক হামলার পর জায়গাটি ঘুরে দেখছেন ইউক্রেনের এক সেনাসদস্য৷
ছবি: Efrem Lukatsky/AP/dpa/picture alliance
রাজধানীবাসীর দুর্বিষহ জীবন
১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সি পুরুষদের যুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য দেশে থাকার নির্দেশ দিয়েছে ইউক্রেন সরকার৷ বাকিদের অনেকেই কিয়েভ ছেড়েছেন৷ যারা এখনো আছেন, তারা পড়ছেন নানা সমস্যায়৷ খাবার এবং ওষুধও শেষ হয়ে যাওয়ায় সুপারমার্কেট, মুদি দোকান, ফার্মেসি কিংবা এটিএম বুথের সামনে ভিড় করছেন তারা৷ সোমবার সুপারমার্কেটের সামনে অনেক মানুষকে টানা দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছেন ডয়চে ভেলের আলেক্সান্দার সাভিৎস্কি৷
ছবি: Lilia Rzheutska/DW
সাবোটাজের আশঙ্কায় কড়া নিরাপত্তা
রাশিয়ার কোনো সমর্থক হঠাৎ হামলা চালাতে পারে- এই আশঙ্কায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে কিয়েভে৷ ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল প্রায় বন্ধ৷ সব গাড়িতে চলছে ব্যাপক তল্লাশি৷
ছবি: Aytac Unal/AA/picture alliance
হাসপাতালেও আতঙ্ক
রাশিয়ার হামলার আশঙ্কায় হাসপাতালের রোগীদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ জায়গায়৷ বেশিরভাগ হাসপাতালে রোগীদের ঠাঁই হয়েছে বেসমেন্টে৷ ওপরের ছবিতে ওখমাদেত শিশু হাসপাতালে সন্তানকে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছেন এক মা৷
ছবি: Emilio Morenatti/AP/picture alliance
বেসমেন্টেই চিকিৎসাসেবা
ওখমাদেত শিশু হাসপাতালের বেসমেন্টে রোগীদের অসুস্থতাজনিত সব তথ্য লিখে নিচ্ছেন এক নার্স৷
ছবি: Emilio Morenatti/AP/picture alliance
হাসপাতাল যখন বিকল্প আশ্রয়কেন্দ্র
রাশিয়ার বোমা হামলা থেকে বাঁচতে রোগীদের পরিবারের সদস্যরাও আশ্রয় নিয়েছেন ওখমাদেত শিশু হাসপাতালের বেসমেন্টে৷
ছবি: Emilio Morenatti/AP/picture alliance
নিরুপায় অবস্থান
যুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য শুধু ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সি পুরুষদেরই দেশ না ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে ইউক্রেন সরকার৷ শিশু অসুস্থ, তাই নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও অন্য শহর বা দেশে যেতে পারেননি ছবির এই মা-শিশুরা৷
ছবি: Emilio Morenatti/AP/picture alliance
রেল স্টেশনে আশ্রয়
রাশিয়ার হামলার আঘাত থেকে বাঁচতে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন ট্রেন স্টেশনে৷
কিয়েভ ট্রেন স্টেশনের এটি এখন নিয়মিত দৃশ্য৷ পোল্যান্ডগামী ট্রেনের অপেক্ষায় হাজারো মানুষ৷
ছবি: Chris McGrath/Getty Images
হেঁটে অন্য দেশে...
রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে প্রায় সব বিদেশিই ইউক্রেনের পাশের দেশগুলোতে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন৷ অনেকে হেঁটেই পাড়ি দিয়েছেন দীর্ঘ পথ৷ ওপরের ছবিতে কিয়েভ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ভারতীয় শিক্ষার্থীর হেঁটে হাঙ্গেরিতে পৌঁছানোর মুহূর্ত৷
ছবি: ATTILA KISBENEDEK/AFP/Getty Images
10 ছবি1 | 10
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল ভি কে সিং ছাত্রছাত্রীদের উদ্ধার করতে বিশেষ অভিযানে এখন ইউরোপে। অপারেশন গঙ্গায় যে চার মন্ত্রীকে পাঠানো হয়েছে, জেনারেল ভি কে সিং তার অন্যতম। সংবাদমাধ্যমকে ভি কে সিং জানিয়েছেন, ''আমরা খবর পেয়েছি, এক ছাত্রের গুলি লেগেছে। আহত হলেও সে বেঁচে আছে। তাকে কিয়েভের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।'' ওই ছাত্রের নাম, পরিচয় কিছুই এখনো পর্যন্ত সরকারের তরফে প্রকাশ করা হয়নি। তবে ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট বলছে, ওই ছাত্র কিয়েভ চেড়ে পালানোর সময় লড়াইয়ের মধ্যে পড়ে যায়। তখনই তার গুলি লাগে। ঘটনাস্থল থেকে তাকে ফের কিয়েভের হাসপাতালের দিকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
রোমানিয়া, হাঙ্গেরি এবং পোল্যান্ডের সীমান্তে পৌঁছে গেছে ভারতের একাধিক বিমান। এয়ার ইন্ডিয়ার পাশাপাশি ভারতীয় বায়ুসেনার বিমানও সেখানে পৌঁছেছে। ছাত্রছাত্রীদের যেভাবেই হোক সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছানোর কথা বলা হচ্ছে। বস্তুত, বুধবার এবং বৃহস্পতিবার দুইটি বিবৃতি প্রকাশ করেছিল ভারত। সেখানে বলা হয়েছিল, ট্রেন না পেলে পায়ে হেঁটে সীমান্তে পৌঁছাতে হবে। খারকিভের ছাত্রদের জন্য এই নির্দেশিকা জারি হয়েছিল।
খারকিভ এবং কিয়েভ থেকে যে ছাত্ররা এখনো পর্যন্ত এসে পৌঁছাতে পেরেছে, তারা জানিয়েছে, পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে আছে। ইউক্রেনের সেনাও ভারতীয় ছাত্রদের সঙ্গে সহায়তা করছে না। বহু পথ হেঁটে সীমান্তে পৌঁছানোর পরেও সবসময় ভারতীয় কর্মকর্তাদের দেখা যাচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার ভারত অবশ্য জানিয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের ফোনে কথা হয়েছে। রাশিয়া ভারতীয় ছাত্রদের সেফ প্যাসেজ দেওয়ার কথা জানিয়েছে। তারপরেই এক ছাত্রের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর জানা গেল।