তিন বছর আগে নৃশংসভাবে খুন হন সাংবাদিক সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি৷ এই দীর্ঘ সময়ে তদন্তের কূল-কিনারা করতে পারেনি ব়্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী৷ বিভিন্ন সময়ে নানা ইস্যু সামনে এলেও এখন প্রধান আলোচ্য সাগরের ল্যাপটপট দু’টি৷
বিজ্ঞাপন
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি খুন হওয়ার পর বাসা থেকে তেমন কিছুই খোয়া যায়নি৷ শুধু দু'টি মোবাইল ফোন এবং দু'টি ল্যাপটপ পাওয়া যায়নি৷ তাই স্বাভাবিকভাবেই আলোচনার কেন্দ্রে এখন খোয়া যাওয়া ঐ দু'টি ল্যাপটপ৷
বর্তমানে দেশের অন্যতম আলোচিত এই মামলাটির তদন্ত করছে ‘ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যটেলিয়ন' সংক্ষেপে ব়্যাব৷ তদন্তকারী সংস্থার মুখপাত্র লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘তদন্তের শুরু থেকেই আমরা ল্যাপটপ দু'টি খুঁজছি৷ কিন্তু ল্যাপটপের কোনো ‘ক্লু' পাওয়া যায়নি৷ ফলে গত ৮ই জানুয়ারি আদালতের অনুমতি নিয়ে আমরা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) চিঠি দিয়েছি৷ তাদের কাছে ল্যাপটপের ব্যাপারে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে৷ গত ২৯শএ জানুয়ারি বিটিআরসি সবগুলো মোবাইল ফোন কোম্পানিকে চিঠি দিয়ে এ ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া গেলে সহযোগিতা করতে নির্দেশ দিয়েছে৷ কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো মোবাইল ফোন কোম্পানি তথ্য দিতে পারেনি৷''
কেন খুন হয়েছেন সাগর, রুনি?
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার এবং মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের তিন বছর পূর্ণ হয়েছে৷ কিন্তু আজও নিহতের পরিবার, শুভানুধ্যায়ী আর সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারলো না, কেন এই হত্যাকাণ্ড? এই বিষয়ে ছবিঘর দেখুন এখানে:
ছবি: DW
সেই কালোরাত
২০১২ সালের এগারোই ফেব্রুয়ারি৷ সেদিন খুব ভোরবেলা জানা গিয়েছিল, ঢাকায় নিজের ভাড়া বাসায় খুন হয়েছেন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার এবং মেহেরুন রুনি৷ একই ফ্ল্যাটে থাকলেও প্রাণে বেঁচে যান তাদের একমাত্র শিশুপুত্র মেঘ৷
ছবি: dapd
সাগর সরওয়ার
দেশি-বিদেশি একাধিক গণমাধ্যমে কাজ করার পর ২০১১ সালে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন সাগর সরওয়ার (ডানে)৷ সর্বশেষ সেই টেলিভিশন চ্যানেলেই কাজ করেছেন তিনি৷ ২০১২ সালের দশই ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে কাজ থেকে বাসায় ফেরার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই খুন হন সাগর৷
ছবি: DW
মেহেরুন রুনি
একাধিক দৈনিকে কাজ করার পর কয়েক বছর আগে টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলায় কাজ শুরু করেন মেহেরুন রুনি (বামে)৷ মাঝে স্বামীর সঙ্গে বছর দেড়েক জার্মানিতে কাটিয়েছেন তিনি৷ এরপর ২০১১ সালে আবারো ফিরে যান নিজের কর্মস্থলে৷
ছবি: DW
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার!
১১ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন৷ বলাবাহুল্য, সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি৷
ছবি: DW
সাংবাদিকদের আন্দোলন
বাংলাদেশের বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের মধ্যে মতের অমিল থাকলেও সাগর-রুনি ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের ঘোষণা প্রদান করে সব সংগঠন৷ খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গত এক বছরে বেশ কয়েকটি প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন সংগঠন৷
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan
আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ
সাংবাদিক দম্পতি হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে গর্জে ওঠে বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাঙালিরা৷ জার্মানিসহ কয়েকটি দেশে খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়৷ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনও খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিবৃতি প্রকাশ করেছে৷
ছবি: DW
ব্লগারদের প্রতিরোধ
সাংবাদিক সংগঠনগুলোর আন্দোলনের পাশাপাশি ব্লগাররা এই দম্পতি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে রাজপথে নামে৷ গত বছর এই ইস্যুতে ব্লগ ‘ব্ল্যাক আউট’ পালন করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ব্লগ৷ সামহয়্যার ইন ব্লগে এখনো রয়েছে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ব্যানার৷
ছবি: DW
রিপোটার্স উইদাআউট বর্ডার্স
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে রাজপথে ব্লগারদের সক্রিয় আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকাসহ বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম ইত্যাদি ইস্যুতে ব্লগ লিখে ডয়চে ভেলের দ্য বব্স প্রতিযোগিতার রিপোটার্স উইদাআউট বর্ডার্স অ্যাওয়ার্ড জয় করে আবু সুফিয়ানের বাংলা ব্লগ৷ ছবিতে আন্দোলনরত আবু সুফিয়ান৷
ছবি: DW
নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাটকীয় ঘোষণা
গত অক্টোবর মাসে নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে ‘জড়িত’ আটজনকে চিহ্নিত করে সাতজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানান৷ বাকি একজনকে গ্রেপ্তার করা হয় গত সপ্তাহে৷ ব়্যাব গ্রেপ্তারকৃতদের বলছে ‘সন্দেহভাজন’৷ আর পরিবার মনে করছে, এদেরকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে কার্যত ‘জজ মিয়া’ নাটক সাজানো হচ্ছে৷
আন্তর্জাতিক তদন্ত চান পরিবার
সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের এক বছর হলেও তদন্তে কোনো অগ্রগতি নেই৷ ধরা পড়েনি মূল অপরাধীরা৷ তাই তাদের পরিবার এখন আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করেছেন৷ রুনির ভাই নওশের রোমান জানিয়েছেন, তারা (ব়্যাব) তদন্তের চেয়ে হয়রানি করতে বেশি উৎসাহী৷ সাগর রুনির একমাত্র সন্তান মেঘের নিরাপত্তাও প্রত্যাহার করা হয়েছে৷
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan
জজ মিয়া নাটক চান না সাগরের মা
সাগরের মা সালেহা মনির এখনও কাঁদেন৷ তাঁর দাবি হচ্ছে, প্রকৃত অপরাধীদের ধরতে হবে৷ এক বছর পর দারোয়ান এনামুলকে গ্রেফতার তাঁর কাছে জজ মিয়া নাটক ছাড়া কিছুই নয়৷ তাঁর মতে, এক বছরে নানা টালবাহানা করে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা চলছে৷
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan
11 ছবি1 | 11
প্রশ্ন উঠেছে কী ছিল সাগরের ল্যাপটপ দু'টোয়? সাগরের অন্যতম ঘনিষ্ট বন্ধু, একসঙ্গে এনার্জি সেক্টরে একসঙ্গে কাজ করা সহকর্মী এবং বর্তমানে ‘সমকাল'-এর সিনিয়র রিপোর্টার রফিকুল বাসার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সাগর ভাই নিহত হওয়ার ঠিক চার দিন আগে আমার সঙ্গে তাঁর লম্বা সময় আলোচনা হয়েছে৷ আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল তাঁর একটি বই৷ এর আগে ‘সাম্প্রতিক' থেকে সাগর ভাইয়ের একটি বই বের হয়েছে৷ বইয়ের নাম ‘কর্ণেলকে আমি মনে রেখেছি'৷ চার দিন আগের ঐ আলোচনায় সাগর ভাই আমাকে বলেন যে, বইটির পরবর্তী সংস্করণের লেখা তাঁর শেষ হয়েছে৷ এবারের বইমেলাতেই বইটা বের করতে চান তিনি৷'' বইয়ের বিষয়স্তু সম্পর্কে সাগর ভাই বলেন, পার্বত্য এলাকার আদিবাসীদের নিয়ে তাঁর এই লেখা৷ কয়েকদিনের মধ্যেই পান্ডুলিপি আমার কাছে দিতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু তার আগেই তো তিনি পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিলেন৷''
রফিকুল বাসার বলেন, ‘‘বইয়ের পান্ডুলিপি ছাড়াও সাগর ভাইয়ের অভ্যাস ছিল ব্যক্তিগত ডায়েরি লেখা৷ একই সঙ্গে তিনি ব্লগও লিখতেন৷ তাঁর ল্যাপটপ দু'টির মধ্যে একটি বড় সাইজের এবং অপরটি ছোট আকারের৷ বড় ল্যাপটপটি তিনি জার্মানিতে ডয়চে ভেলেতে কাজ করার সময় কিনেছিলেন৷ আর ছোটটি দেশে ফেরার পর কেনেন৷ ছোট ল্যাপটপটি তিনি সব সময় সঙ্গে রাখতেন৷ এছাড়া ল্যাপটপে তাঁর বিভিন্ন সময় করা রিপোর্টগুলোও রেখে দিতেন৷ নতুন কোনো তথ্য পেলেও সঙ্গে সঙ্গে সংযোজন করতেন নিজের ল্যাপটপে৷''
ঢাকায় সাগর-রুনির বন্ধুদের মানববন্ধন
সাগর সরওয়ার এবং মেহেরুন রুনির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার ঢাকার কারওয়ানবাজারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়৷ সাংবাদিক দম্পতির কাছের মানুষ, বন্ধুরা ছাড়াও আরো অনেকে এতে অংশ নেন৷ এই বিষয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: DW
ফেসবুক আহ্বানে সমবেত সবাই
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পূর্তিতে মঙ্গলবার খুনিদের বিচার চেয়ে ঢাকার কারওয়ান বাজারে সার্ক ফোয়ারায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়৷ একটি ফেসবুক ইভেন্টের মাধ্যমে সাগর-রুনির বন্ধু, সহকর্মীরা এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
প্রতীকী প্রতিবাদ
খুনিদের গ্রেপ্তার এবং বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নেয়াদের অনেকের মুখ ছিল কালো কাপড় বাঁধা৷ প্রতিবাদের অংশ হিসেবে এটা করেন তাঁরা৷
ছবি: DW/M. Mamun
সার্ক ফোয়ারা ঘিরে অবস্থান
সাংবাদিক দম্পতির খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার বিকেলে সার্ক ফোয়ারা ঘিরে অবস্থান করেন প্রতিবাদকারীরা৷ বলাবাহুল্য, হত্যাকাণ্ডের পর দু’বছর পেরিয়ে গেলেও আজও হত্যাকাণ্ডের কারণ জানাতে কিংবা প্রকৃত খুনিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি নিরাপত্তা বাহিনী৷
ছবি: DW/M. Mamun
‘জানতে চাই, বিচার চাই’
মানববন্ধনে অংশ নেয়া এক ব্যক্তির হাতে থাকা প্ল্যাকার্ড লেখা, ‘‘কার ছায়ায়/কার মায়ায়/সাগর-রুনির খুনি? জানতে চাই/বিচার চাই৷’’
ছবি: DW/M. Mamun
দীর্ঘতম ৪৮ ঘণ্টা!
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সাগর-রুনি খুন হওয়ার পরপরই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন জানান, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তার করা হবে৷ কিন্তু সেই ৪৮ ঘণ্টা আজও শেষ হয়নি বলে মনে করেন প্রতিবাদকারীরা৷ কেননা, সাগর-রুনির খুনিরা আজও গ্রেপ্তার হয়নি৷
ছবি: DW/M. Mamun
‘সাগর-রুনিকে ভুলে যাই’
এদিকে, সাগর-রুনির পরিবারের উদ্যোগে ঢাকার দৃক গ্যালারিতে চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়৷ এই প্রদর্শনীতে লেখা রয়েছে, ‘‘আসুন আমরা সাগর-রুনিকে ভুলে যাই’’৷ লেখাটি পড়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘‘কতটা দুঃখ আর হতাশা থেকে এই লেখা তা আমাদেরও বুঝতে হবে৷’’
ছবি: DW/H. Swapan
‘ক্রাইম সিন, ডু নট ক্রস’
‘ক্রাইম সিন, ডু নট ক্রস’ শিরোনামের চিত্র প্রদর্শনীটি এই নিয়ে দ্বিতীয়বার আয়োজন করা হলো৷ সাংবাদিক দম্পতির পরিবারসহ সাংবাদিক নেতারা বারবার হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে আসলেও নিরাপত্তা বাহিনী এখনো প্রকৃত খুনিদের ধরতে পারেনি৷
ছবি: Harun Ur Rashid Swapan
‘আন্দোলন থামিও না’
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে সাংবাদিকদের উদ্দেশে সাগর সরওয়ারের মা সালেহা মুনীর বলেন, ‘‘আন্দোলন থামিও না, যত সাংবাদিক মারা গেছে সবার বিচারের দাবিতে তোমরা আন্দোলন চালিয়ে যাও৷ আমার মেঘের জন্য আমি বিচার চাই৷’’
ছবি: DW/M. Mamun
‘সরকার আন্তরিক’
গত দুই বছরে খুনিরা গ্রেপ্তার না হলেও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘‘রহস্য উদঘাটনে সরকার আন্তরিক৷’’
ছবি: Harun Ur Rashid Swapan
পেরিয়ে গেল দুই বছর
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় নিজেদের ভাড়া বাসার বেডরুমে খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি৷ সেসময় একই বাসায় অবস্থান করলেও প্রাণে বেঁচে যায় সাংবাদিক দম্পতির একমাত্র সন্তান মেঘ৷
ছবি: DW
10 ছবি1 | 10
সাগর-রুনি হত্যা মামলার বাদি রুনির ভাই নওশের আলম রোমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ল্যাপটপের বিষয়টি নতুন কিছু নয়৷ এর আগে ডিবি ও ব়্যাবকে আমরা ল্যাপটপ দু'টির সব কাগজপত্র দিয়েছি৷ আমরা ঐ ল্যাপটপ দু'টি সম্পর্কে যা জানি তাও বলেছি৷ কিন্তু ব়্যাব কিছুই করেনি৷ আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগও রাখেনি৷''
কী ছিল সাগরের ল্যাপটপে, এ বিষয়ে কী কিছু জানেন? এমন প্রশ্নের জবাবে নওশের বলেন, ‘‘সাগর ভাইয়ের ল্যাপটপ দু'টি ছাড়াও ঐ বাসায় কিন্তু আরও একটি ল্যাপটপ ছিল৷ সেটি অবশ্য নষ্ট৷ ঐ নষ্ট ল্যাপটপটা পাওয়া গেছে৷ শুধু ভালো ল্যাপটপ দু'টি খোয়া গেছে৷ সাগর ভাইয়ের ল্যাপটপে তাঁর সর্বশেষ বইয়ের একটা পান্ডুলিপি ছিল৷ এটি আসলে তাঁর আগের বই ‘কর্ণেলকে আমি মনে রেখেছি'-র পরের সংস্করণ৷ এটি পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে লেখা৷ এর পাশাপাশি ব্যক্তিগত ডায়েরি ও বিভিন্ন ধরনের ব্লগও লিখতেন সাগর ভাই৷''
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ৫৮/এ/২, রশিদ লজ অ্যাপার্টমেন্টের পঞ্চম তলার ফ্ল্যাট মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনির ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়৷ এ ঘটনায় রুনির ছোট ভাই নওশের আলম রোমান বাদি হয়ে শেরেবাংলানগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন৷ এ মামলাটি বর্তমানে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ব়্যাব তদন্ত করছে৷