কী স্বরে, মিশরে মেতেছে মানুষ
৯ ফেব্রুয়ারি ২০১১জনসমুদ্রে যখন জোয়ার শুরু হয়, ছড়িয়ে পড়ে বনেবাদাড়েও৷ কোনো বাঁধন, কোনো মারণাস্ত্রও রুখতে পারেনা৷ বাধা দিলে বাধবে লড়াই, এই মন্ত্রে মানুষ আরো বেশি উজ্জীবিত মিশরে, আরবদেশে৷ কী স্বরে বিপ্লব, বিদ্রোহ আজ?
নভেম্বর ১৯৮৯৷ পশ্চিমের ঝানু গুপ্তচর, তুখোড় রাজনীতিক, ধুরন্ধর পলিটিকাল-ব্যাখ্যাতা এমনকি চৌকস রাষ্ট্রনেতাও ভাবতে পারেন নি আচমকা গণবিদ্রোহে, জনরোষে দৃঢ়, সুকঠিন কংক্রিটময় বার্লিন দেয়াল ধসে পড়বে৷
হুবহু একই কাণ্ড টিউনিশিয়া, মিশরে৷ গনজাগরণ আরবের অন্যান্য দেশেও৷ শাসক, সেনাকুলের রক্তচক্ষু, বেয়নেট, বন্দুক, বুলেট উপেক্ষা করে মানুষ শাসকের মসনদ কাঁপিয়ে দিয়েছে৷ গোটা বিশ্বের দৃষ্টি এখন মিশরে৷ মিশরীয় আবালবৃদ্ধবনিতার একটিই স্বর, একটিই আওয়াজ, ‘মোবারক হট যাও'৷ এই কন্ঠধ্বনি বার্লিনের রাজপথেও৷ কেবল মিশরের মানুষই নয়, আরবের নানা দেশের হাজার-হাজার মানুষ, যারা বার্লিনসহ জার্মানির বিভিন্ন শহরের বাসিন্দা, মিছিলে-স্লোগানে বার্লিন প্রকম্পিত করে তোলে শনি, রবিবার দিনভর৷ বজ্রকন্ঠে জনতার দাবি, ‘স্বৈরশাসক মুবারকের উচ্ছেদ চাই৷ চাই গণতন্ত্র,মুক্তি৷ চাই মানবাধিকার৷ বাকস্বাধীনতা৷' কেউ বলেন, ‘‘ভাবতেই পারিনি আরবদেশে কখনো বিপ্লব, বিদ্রোহ হবে৷'' কেউ বলেন, ‘‘এইদিনের অপেক্ষায় এতদিন অপেক্ষমাণ৷'' কারোর কথা, ‘‘আরবদেশে বিদ্রোহের যে দাবাগ্নি, তা অচিরেই ছড়িয়ে পড়বে চারদিকে৷ আরবের কোনো দেশেই স্বৈরাচারী সরকার চাই না৷'' কেউ জানান, ‘‘আমরাও যে বিপ্লব, বিদ্রোহ করতে পারি, রক্ত, জীবন দিতে পারি, স্বৈরশাসক উৎখাত করতে পারি দেখুক বিশ্ববাসী৷ আমরা গর্বিত৷ আমরা অকুতোভয় সংগ্রামী৷''
প্রতিবেদন: দাউদ হায়দার, বার্লিন
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন