কুকুর বন্ধুকে গান শোনাল পাখি!
১৩ অক্টোবর ২০১৬ভিডিও দেখে কুকুরটার জাত বাতলে দেওয়ার মতো জ্ঞান আমার নেই৷ মনে হলো যেন রোডেশিয়ান রিজব্যাক গোছের কোনো বড় শিকারি কুকুর৷ বাটি থেকে কচর মচর করে ড্রাই ডগ ফুড খাচ্ছে৷ তার সামনে যে ল্যাজঝোলা খুদে জীবটি অতি মিষ্টি সুরে শিষ দিয়ে গান গেয়ে চলেছে, সে হলো একটি পাখি, আরও সঠিক করে বলতে হলে, এক জাতের টিয়াপাখি, ইংরেজি নাম ককাটিল৷
পাখি আর ধেড়ে কুকুরটি স্পষ্টত একই বাড়ির ও একই মালিকের৷ এ খানা খাচ্ছে তো ও গানা গাইছে - কিন্তু কেন? শুধু ধেড়ে কুকুরটির মনোরঞ্জনের জন্য? কিন্তু সে তো দেখা যাচ্ছে চরম বেরসিক৷ অত ভালো গান গাইছে টিয়া বেচারা, তুই খাওয়া বন্ধ রেখে খানিকটা শোন, তা না, একবার মুখ তুলে তাকিয়েই আবার বাটিতে নাক, আবার কচর মচর৷
ককাটিল মানে টিয়াপখি কিন্তু তাতে দমে যাবার পাত্র নয়৷ ‘দুখজাগানিয়া তোমায় গান শোনাব' বলে সে একটানা গেয়ে যাচ্ছে৷ অবশ্য কুকুরটা হয়তো সাতসকালে ঘেউ ঘেউ করে ‘ঘুমভাঙানিয়ার' কাজটাও করে থাকে৷ সুরটাও ইন্টারেস্টিং, যেন কোনো বাংলা গান - নাকি ইংরেজি? - নাকি হিন্দি ফিল্মের গান? স্পষ্টতই শোনা গান, শেখা গান৷ টিয়া এ গান শিখল কোথায়?
আরো প্রশ্ন উঠতে পারে, টিয়া কুকুরকে গান শুনিয়ে কি পাবার চেষ্টা করছে? এক দানা ডগ ফুড? সে তো টিয়াপাখির খাদ্য নয়৷ দানোর মতো কুকুর খাওয়া শেষ করে চলে গেল, পাখিও ঘাড় ঘুরিয়ে অন্যদিকে চলে গেল, কিন্তু গান না থামিয়ে! তাহলে?
আমার ব্যাখ্যা হলো, আর পাঁচজন গায়কের মতোই, পাখিটারও শ্রোতার দরকার - কিংবা হয়তো সঙ্গী অথবা সঙ্গিনী? কাছাকাছি আর কোনো টিয়া নেই, তাই ধেড়ে কুকুরটাকে গান শুনিয়ে একাকিত্বের যন্ত্রণা খানিকটা কমিয়ে নিল টিয়াপাখি, বনের পাখি৷
আরও বড় কথা, কুকুরটা কিন্তু তার খাবার শেষ না করেই চলে গেছে৷ সে কি গান অপছন্দ করে? নাকি তারও মনে পড়ে গেল, ‘এ ব্যথা কি যে ব্যথা বোঝে কি আনজনে, সজনী আমি বুঝি মরেছি মনে মনে...'
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী