পোষা কুকুর-বিড়ালের দেহে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিলে তাদেরও পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সৌলের ম্যাট্রোপলিটন সরকার৷
বিজ্ঞাপন
একটি পোষা বিড়ালছানার দেহে প্রথমবারের মতো করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার কয়েক সপ্তাহ পরে কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানিয়েছে বিবিসি৷ তবে কোনো পোষা কুকুর বা বিড়ালের জ্বর কিংবা শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দিলেই কেবল তাদের করোনা টেস্ট করা হবে৷ ফল পজিটিভ হলে পোষা প্রাণীদের আইসোলেশন সেন্টারে না পাঠালেও চলবে৷ তবে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে রাখার পরামর্শ বিশেষজ্ঞের৷
মানুষ এবং পোষা প্রাণীর মধ্যে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি- এ কথা জানিয়েছেন রোগ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক কর্মকর্তা৷ এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো জানান, কুকুর বা বিড়ালের মালিক যদি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে থাকেন বা করোনা সংক্রমিত প্রাণিকে দেখাশোনা করতে না পারেন, তবেই তার পোষা প্রাণীকে আইসোলেশন সেন্টারে রাখা যাবে৷
রোগ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক কর্মকর্তা পার্ক ইয়ো-মি পোষা প্রাণীদেরকে মানুষের কাছ থেকে অন্তত দুই মিটার দূরে রাখার কথা জানিয়ে সৌলের বাসিন্দাদের সতর্ক করে দিয়েছেন৷
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
পোষা প্রাণীর মরদেহ দিয়ে সার তৈরি
কলম্বিয়ার মেদেয়িন শহরের ‘প্লেইয়া’ নামের এক কোম্পানি পোষা প্রাণী থেকে সার তৈরি করে৷ সেগুলো দিয়ে গাছও জন্মাচ্ছে তারা৷ এটি এক পরিবেশবান্ধব উপায় বলে দাবি তাদের৷
ছবি: Simon Echavarria
শুরুর কথা
ডেনিয়েল কোরেয়া ও মেলিসা নারানিয়ো কলম্বিয়ার মেদেয়িনের সিইএস বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেটেরিনারি মেডিসিনে পড়েছেন৷ তারা পশুর মরদেহ থেকে সার তৈরির সম্ভাবনা নিয়ে থিসিস করেছেন৷ সেটাকেই তারা পরবর্তীতে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে ২০১৭ সালে ‘প্লেইয়া’ নামের এক কোম্পানি গঠন করেন৷ তারা পোষা প্রাণীর মরদেহ থেকে সার তৈরি করছে৷ সেই সারে নতুন গাছও জন্মাচ্ছে৷ বিশ্বের গুটি কয়েক কোম্পানি এই কাজ করছে৷
ছবি: Simon Echavarria
পরিবেশবান্ধব
কোরেয়া জানান, মৃতদেহ পোড়াতে জীবাশ্ম জ্বালানির প্রয়োজন হয়, যা থেকে কার্বন নির্গমন হয়৷ আর মরদেহ কবর দিলে তা থেকে ভূগর্ভস্থ পানি দূষিত হতে পারে৷ গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের মৃতদেহ ব্যাকটেরিয়া ও ফরমালডিহাইড দিয়ে ভূগর্ভস্থ পানি দূষিত করতে পারে৷ কিছু কফিনের বার্নিশও মাটিকে দূষিত করে৷ ছবিতে প্লেইয়া কোম্পানির গ্রিনহাউস দেখা যাচ্ছে যেখানে মরদেহ থেকে সার তৈরি ও তা দিয়ে উদ্ভিদ জন্মানো হয়৷
ছবি: Manuel Rueda
নতুন নয়
গত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কৃষকরা মরদেহ অপসারণের খরচ কমাতে পশুপাখির মরদেহ থেকে সার তৈরি করছেন৷
ছবি: Manuel Rueda
পদ্ধতি
ছবিতে যেমন দেখছেন, প্রতিটি ঘরে একটি করে পোষা প্রাণীর মরদেহ আছে৷ মাটি আর কাঠের টুকরোর স্তূপের নীচে সেগুলো রাখা হয়েছে৷ সার তৈরির প্রক্রিয়া দ্রুত করতে মরদেহের উপর তরল ছিটিয়ে দেয়া হয়৷ এই তরলে ব্যাকটেরিয়া থাকে৷ মাটির কারণে মরদেহ থেকে পচা গন্ধ বের হতে পারেনা৷ এভাবে একটি কুকুর বা বিড়াল থেকে সার তৈরি করতে প্রায় দুই মাস লাগে৷ পুরো প্রক্রিয়াটি ঘটে একটি গ্রিনহাউসের মধ্যে৷
ছবি: Simon Echavarria
মালিককে টাকা দিতে হয়
প্লেইয়াতে ১০ জন কাজ করছেন৷ প্রতিমাসে তারা প্রায় দুশ’ পশু সংগ্রহ করেন৷ পশুর ওজন ও সেবাভেদে পোষা প্রাণীর মালিকদের কাছ থেকে ৫০ (চার হাজার ২৩৫ টাকা) থেকে দেড়শ ডলার (১২ হাজার ৭০৫ টাকা) নেয় প্লেইয়া৷ ছবিতে প্লেইয়ার এক গ্রাহককে তার পোষা কুকুর ললিতার মরদেহ থেকে তৈরি সার দিয়ে জন্মানো গাছের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে৷ গাছের সঙ্গে ললিতার ছবিও রাখা আছে৷
ছবি: Simon Echavarria
সেবার ধরন
দুই ধরনের সেবা আছে৷ এক, মালিকরা তাদের পোষা প্রাণী থেকে পাওয়া সার দিয়ে প্লেইয়ার মেমোরিয়াল গার্ডেনে গাছ উৎপাদন করতে দিতে পারেন৷ কিংবা তারা চাইতে পারেন যে, ঐ সার দিয়ে জন্মানো একটি গাছ টবসহ তাদের কাছে পাঠানো হোক (ছবিতে যেমনটা দেখা যাচ্ছে)৷ এই সেবাটিই বেশি জনপ্রিয়৷
ছবি: Manuel Rueda
মানুষের মরদেহ থেকে সার
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন রাজ্য প্রশাসন মানুষের মরদেহ থেকে সার তৈরির অনুমোদন দেয়৷ ‘রিকম্পোজ’ নামে এক কোম্পানি এই অনুমোদনের জন্য লবি করেছিল৷ তাদের দাবি, মরদেহ কবর দেয়া বা পুড়িয়ে না ফেলে সার তৈরি করলে এক টন কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন কমানো যায়৷ ছবিতে শিল্পীর চোখে রিকম্পোজ কোম্পানির সার তৈরির জায়গা দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
সেবার মূল্য
মরদেহ থেকে সার তৈরি করতে চার লাখ ৬৬ হাজার টাকা নেয় রিকম্পোজ৷ এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০০ জন তাদের দেহ থেকে সার তৈরির জন্য নিবন্ধন করেছেন৷ সার তৈরির পর তা গ্রাহকের পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হবে কিংবা রাজ্যের কোনো নেচার রিজার্ভে পাঠানো হবে৷ কলোরাডো ও ক্যালিফোর্নিয়ার রাজ্য প্রশাসনও এমন অনুমোদন দেয়ার কথা ভাবছে৷ ছবিতে গরুর মরদেহ থেকে তৈরি উপাদান দেখাচ্ছেন রিকম্পোজের সিইও ক্যাটরিনা স্প্যাড৷